শনিবার, ১৪ জানুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

গোখরোর চেয়েও বিষাক্ত গাছ!

গোখরোর চেয়েও বিষাক্ত গাছ!

স্থানীয় নাম জিমপাই গাছ। জন্মে অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ডে রেইন ফরেস্টে। এর বায়োলজিক্যাল নাম ড্রেনডোকুইনাইড মোরয়েডস। এর গায়ে রোয়ার মতো গাছের মধ্যে সূক্ষ্ম তন্তু রয়েছে। আর গাছ কাটায় ভরা। কিন্তু ভুলক্রমে যদিও এই গাছের তন্তু শরীরে লাগে শুরু হয় মৃত্যু যন্ত্রণা আর যদি শরীরে কাঁটা ফোড়ে তা হলে তো কোনো কথাই নেই। মৃত্যু অবধারিত। এটিই পৃথিবীর সবচেয়ে ভয়ঙ্কর গাছ। সাপের মতো বিষাক্ত। কাঁটায় ভরা এই গাছে নিউরোট্রক্সিন বিষ থাকে যা কাঁটার মাধ্যমে শরীরের ভিতরে পৌঁছে যায়। তা অনেকে সহ্য করতে পারেন না। তখন, এই গাছকে ছুঁলেই আত্মহত্যা করতে ইচ্ছা করে। তাই অনেকে একে আত্মহত্যার গাছও বলেন।

এই গাছ নিয়ে কিছুদিন আগে গবেষণা করেছিলেন বিজ্ঞানী মেরিনা হারলে। তিনি মূলত অস্ট্রেলিয়ার রেইন ফরেস্টে গবেষণা করছিলেন। বৈজ্ঞানিক হওয়ার দরুন তিনি জানতেন যে জঙ্গলে বিভিন্ন রকম বিপদ রয়েছে। এমনকি গাছপালাগুলোও বিষাক্ত হয়। যা থেকে সমস্যা তৈরি হতে পারে। তাই তিনি ওয়েল্ডিং গ্লাভস পড়ে গবেষণা করেন। তা সত্ত্বেও তাঁর এই গবেষণার ফল ভয়ঙ্কর হয়ে দাঁড়ায়।

হারলে ব্যথায় কাতরাতে কাতরাতে হাসপাতালে পৌঁছান এবং তাঁর সারা শরীর লাল হয়ে গিয়েছিল। তিনি জলুনি এবং মাংসপেশিতে টান অনুভব করছিলেন। এটি জিনপাই এর প্রভাব, যা ঠিক করার জন্য তাকে লম্বা সময় পর্যন্ত হাসপাতাল নিয়ে থাকতে হয়েছিল। বিদ্যুতের শকের মতো ঝটকা এবং কেটে যাওয়ার মতো জ্বালা-পোড়া দুটি অনুভব একসঙ্গে হচ্ছিল বলে তিনি জানিয়েছিলেন। আর অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ডে কাজ করতে থাকা কাঠুরেদের জন্য এই জিমপাই মৃত্যুর দ্বিতীয় নাম। গাছের সম্পর্কে রিপোর্টের পর জঙ্গলে যাঁরা যান তাঁরা নিজেদের সঙ্গে রেসপিরেটর, মেটাল গ্লাস এবং অ্যান্টিহিস্টামিন ট্যাবলেট নিয়ে যাওয়া শুরু করেছেন। যদিও ওই গাছ প্রথম জানা যায় ১৮৬৬ সালে। জানা গিয়েছে একাধিক প্রাণি বিশেষ করে ঘোড়া ওই গাছের সামনে দিয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ভয়ঙ্কর যন্ত্রণায় আক্রান্ত হয় এবং মৃত্যু হয়।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় বহু সেনা অফিসার এই গাছের শিকার হয় এবং ব্যথায় কাতরাতে কাতরাতে শেষ পর্যন্ত নিজেরা আত্মহত্যা করেন। যারা বেঁচেছিলেন তাঁরা বহু বছর ব্যথায় আক্রান্ত ছিলেন।

সর্বশেষ খবর