দক্ষিণ চীন সাগরের বিতর্কিত জলসীমায় ইচ্ছাকৃতভাবে উপকূলরক্ষী জাহাজগুলোতে ধাক্কা দেওয়ার পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করেছে চীন ও ফিলিপাইন। স্থানীয় সময় গতকাল এমন অভিযোগ উঠেছে। গুরুত্বপূর্ণ এই জলপথে ক্রমবর্ধমান সংঘর্ষের সর্বশেষ ঘটনা এটি। বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে। দক্ষিণ চীন সাগরের সাবিনা শোলের কাছে হওয়া সামুদ্রিক এ সংঘর্ষ এক মাসের মধ্যে দেশ দুটির মধ্যকার পঞ্চম ঘটনা। ফিলিপাইন, ব্রুনাই, মালয়েশিয়া, তাইওয়ান ও ভিয়েতনামের দাবি করা অংশসহ প্রায় পুরো দক্ষিণ চীন সাগর নিজেদের বলে দাবি করে থাকে বেইজিং। এই জলপথে বার্ষিক ৩ ট্রিলিয়ন ডলারের বাণিজ্য হয়। এই সাগর তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাস এবং মাছের মজুতে সমৃদ্ধ বলে মনে করা হয়। ২০১৬ সালে চীনের এমন দাবিগুলোর কোনো আইনি ভিত্তি নেই বলে রায় দিয়েছিলেন স্থায়ী সালিশি আদালত। তবে আদালতের এমন রায় প্রত্যাখ্যান করেছিল বেইজিং।
একটি সংবাদ সম্মেলনে ফিলিপাইন কোস্টগার্ডের মুখপাত্র জে টেরিয়েলা শনিবারের সংঘর্ষের ভিডিওগুলো দেখিয়েছেন। এ সময় তিনি বলেন, চীনা কোস্টগার্ড জাহাজ ৫২০৫ ‘প্রত্যক্ষ ও ইচ্ছাকৃতভাবে ফিলিপাইনের জাহাজটিকে উসকানি ছাড়াই ধাক্কা দিয়েছে।’ টেরিয়েলা বলেছেন, এতে ফিলিপাইনের অন্যতম বৃহত্তম উপকূলরক্ষী র্যামিং ৯৭ মিটার (৩২০ ফুট) তেরেসা ম্যাগবানুয়া ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে কোনো কর্মী আহত হননি। এদিকে একটি বিবৃতিতে চীনের উপকূলরক্ষী বাহিনীর মুখপাত্র লিউ দেজুন বলেছেন, ফিলিপাইনের একটি জাহাজ শোলে অঞ্চলে ‘অবৈধভাবে’ নোঙর ফেলেছে এবং একটি চীনা জাহাজকে ‘ইচ্ছাকৃতভাবে ধাক্কা দিয়েছে।’ ফিলিপাইনকে জাহাজটিকে অবিলম্বে প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। নতুবা এর পরিণতি ভোগ করতে হবে বলেও সতর্ক করেন। এ সময় লিউ আরও বলেন, ‘উসকানি, উপদ্রব ও লঙ্ঘনের সব ক্রিয়াকলাপকে দৃঢ়তার সঙ্গে প্রতিহত করতে এবং দেশের আঞ্চলিক সার্বভৌমত্ব এবং সামুদ্রিক অধিকার ও স্বার্থকে দৃঢ়ভাবে রক্ষা করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে চীনা উপকূলরক্ষী বাহিনী।’ জবাবে টেরিয়েলা বলেছেন, ‘চীনা উপকূলরক্ষীদের হয়রানি ও বর্ধিত পদক্ষেপ সত্ত্বেও জাহাজটিকে প্রত্যাহার করবে না ম্যানিলা। পালোয়ান প্রদেশের উপকূল থেকে ৭৫ নটিক্যাল মাইল দূরে সাবিনা শোলে এপ্রিলে একটি জাহাজ মোতায়েন করেছিল ফিলিপাইন। বেইজিংয়ের বিরুদ্ধে একটি কৃত্রিম দ্বীপ নির্মাণের অভিযোগ করেছিল দেশটি। ফিলিপাইনের দাবি, সেখানে বালুর স্তূপে মৃত ও চূর্ণ প্রবালের স্তূপ শনাক্ত করেছে তারা। তবে দেশটির এমন অভিযোগ অস্বীকার করেছে বেইজিং।