সংঘাত নিরসনে কাতারের রাজধানী দোহায় আলোচনায় বসেছিলেন পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের প্রতিনিধিরা। তুরস্ক ও কাতারের মধ্যস্থতায় হওয়া ওই আলোচনায় ইসলামাবাদ ও কাবুল অস্ত্রবিরতিতে রাজি হয়েছে। গতকাল কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে কাতারভিত্তিক গণমাধ্যম আলজাজিরা জানায়, ইসলামাবাদ ও কাবুল অস্ত্রবিরতিতে সম্মত হয়েছে। দুই দেশের মধ্যে স্থায়ী শান্তি ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করার জন্য একটি কাঠামো তৈরিরও সিদ্ধান্ত হয়েছে।
কাতারের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, দুই দেশ আগামী কয়েক দিনের মধ্যে পরবর্তী বৈঠকের বিষয়েও রাজি হয়েছে। ওই বৈঠকে অস্ত্রবিরতির স্থায়িত্ব নিশ্চিত ও বাস্তবায়ন হচ্ছে কি না তা যাচাই করা হবে। ১০ অক্টোবর কাবুলসহ দুটি এলাকায় পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বিমান হামলার অভিযোগ তোলে আফগানিস্তান। তালেবান সেনারা পরদিন ১১ অক্টোবর রাতে সীমান্তে ‘প্রতিশোধমূলক’ হামলা চালায়। এতে উভয়পক্ষের বেশ কয়েকজন নিহত হন। পরে ১৫ অক্টোবর পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, উভয় দেশ ৪৮ ঘণ্টার অস্ত্রবিরতিতে রাজি হয়েছে। তবে ইসলামাবাদের বিরুদ্ধে তা লঙ্ঘনের অভিযোগ আনে কাবুল।
এদিকে শনিবার পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ফের বিমান হামালার অভিযোগ তোলে আফগানিস্তান। এতে অন্তত ১০ জন নিহত হন বলে জানান দেশটির কর্মকর্তারা। দেশ দুটির তরফে পাল্টাপাল্টি অভিযোগের মধ্যে এবার কাতার ও তুরস্কের মধ্যস্থতায় অস্ত্রবিরতির কথা জানানো হলো।
প্রসঙ্গত, আফগানিস্তানের সঙ্গে পাকিস্তানের সাম্প্রতিক সংঘাতের মূলে রয়েছে পাকিস্তানের তালেবানপন্থি সশস্ত্র রাজনৈতিক গোষ্ঠী তেহরিক-ই তালেবান (টিটিপি)। পাকিস্তান সরকারের নিষিদ্ধ ঘোষিত এ গোষ্ঠীটি পাকিস্তানের আঞ্চলিক অখন্ডতার জন্য দিনদিন বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠছে। আফগাস্তানের সীমান্তবর্তী পাকিস্তানি প্রদেশ খাইবার পাখতুনখোয়া টিটিপির প্রধান ঘাঁটি। ২০২১ সালে আফগানিস্তানে তালেবান সরকার প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর গোষ্ঠীটি আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। পাকিস্তানের অভিযোগ, আফগানিস্তানের তালেবান সরকারের মদত ও আশ্রয়প্রশ্রয় পাচ্ছে টিটিপি। তবে কাবুল বরাবরই এ অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে।