ইস্তাম্বুলে বৈঠকে পাকিস্তান ও আফগানিস্তান তাদের মধ্যকার যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বাড়াতে রাজি হয়েছে বলে জানিয়েছে তুরস্ক। দক্ষিণ এশিয়ার দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে কয়েক বছরের হওয়া সবচেয়ে বাজে সীমান্ত সংঘাতের পর এ যুদ্ধবিরতি চলছে। কাতার ও তুরস্ক এ দুই পক্ষের মধ্যে আলোচনায় মধ্যস্থতা করছে।
সীমান্তে তুমুল সংঘাতের পর গত ১৯ অক্টোবর থেকে পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মধ্যে যুদ্ধবিরতি শুরু হয়। বার্তা সংস্থা রয়টার্স লিখেছে, ২০২১ সালে তালেবান ফের কাবুলের ক্ষমতা নেওয়ার পর চলতি মাসে দুই দেশের মধ্যে হওয়া সবচেয়ে রক্তক্ষয়ী এ সংঘর্ষে পাকিস্তানি বিমান হামলার পর আফগানিস্তানের পালটা গুলি এবং এসবের প্রতিক্রিয়ায় দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও যাতায়াতের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সীমান্ত ক্রসিংগুলো বন্ধ হতেও দেখা গেছে। ‘শান্তি বজায় রাখতে ও যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনকারী পক্ষের ওপর জরিমানা আরোপে একটি পর্যবেক্ষণ ও যাচাই প্রক্রিয়া প্রতিষ্ঠায় সব পক্ষ সম্মত হয়েছে,’ ২৫ থেকে ৩০ অক্টোবরের আলোচনা নিয়ে বলেছেন তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এই পর্যবেক্ষণ ও যাচাই প্রক্রিয়া কী করে বাস্তবায়ন করা যায় সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে ৬ নভেম্বর ফের ইস্তাম্বুলে বৈঠক হবে। ‘দীর্ঘস্থায়ী শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য উভয় পক্ষকে সহযোগিতা করতে কাতার ও তুরস্ক প্রস্তুত রয়েছে,’ বলেছে তুর্কি মন্ত্রণালয়। বৃহস্পতিবার রাতে পৃথক এক বিবৃতিতে তালেবান মুখপাত্র জাবিউল্লাহ মুজাহিদ বৈঠকের সমাপ্তির খবর নিশ্চিত করেন এবং জানান, উভয় পক্ষ ভবিষ্যতে বৈঠকের মাধ্যমে আলোচনা চালিয়ে যেতে রাজি হয়েছে।-রয়টার্স
তিনি বলেন, আফগানিস্তান ‘একে অপরের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ না করা ও পারস্পরিক শ্রদ্ধার ভিত্তিতে’ পাকিস্তানের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক চায়। এ বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে পাকিস্তানের কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। পাকিস্তান আফগানিস্তানে বিমান হামলা চালালে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। ইসলামাবাদ সেসময় বলেছিল, তারা আফগানিস্তান ভিতর পাকিস্তানি তালেবানের আস্তানায় হামলা চালিয়েছে। এই পাকিস্তানি তালেবান তাদের বাহিনীর ওপর হামলা চালিয়ে যাচ্ছে এবং আফগানিস্তান তাদের মদত দিচ্ছে। কাবুল এই অভিযোগ অস্বীকার করে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে আফগানিস্তানের সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘনের অভিযোগ আনে এবং বিমান হামলার প্রতিশোধ নিতে সীমান্তে পাকিস্তানি বাহিনীর চৌকি লক্ষ্য করে গুলি চালায়। দুই পক্ষের মধ্যে আড়াই হাজার কিলোমিটারের বেশি সীমান্ত রয়েছে; যার বিভিন্ন অংশের মালিকানা নিয়ে বিরোধ মাঝে মাঝেই সংঘাতে রূপ নেয়। জঙ্গি-সন্ত্রাসীদের আশ্রয় দেওয়া নিয়েও উভয় দেশের পালটাপালটি অভিযোগ রয়েছে। -রয়টার্স