১৬ ডিসেম্বর, ২০১৯ ০১:৫৭

বিজয় দিবসের আগে ভারতীয় সেনাবাহিনীর কুচকাওয়াজে মুক্তিযোদ্ধারা

দীপক দেবনাথ, কলকাতা

বিজয় দিবসের আগে ভারতীয় সেনাবাহিনীর কুচকাওয়াজে মুক্তিযোদ্ধারা

বাংলাদেশের ৪৮তম মহান বিজয় দিবসের আগে রবিবার (১৫ ডিসেম্বর) ভারতীয় সেনাবাহিনীর পূর্বাঞ্চল দপ্তর কলকাতার ফোর্ট উইলিয়ামের এক্কা অ্যালবার্ট অডিটোরিয়াম প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হয়েছে ছবি প্রদর্শনী।

বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রীবন্ধন শীর্ষক এই প্রদর্শনীতে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের আগে ও পরবর্তী ঘটনা সম্বলিত একাধিক ছবি স্থান পেয়েছে। 

ছবি গ্যালারিটি সাজানো হয়েছে কয়েকটি বিভাগে। সেখানে প্রথমেই স্থান পেয়েছে 'দ্য হিস্টোরিক মোমেন্ট অফ সারেন্ডার সেরিমনি ডিসেম্বর ১৯৭১'। সেখানে দেখানো হয়েছে পাকিস্তান সেনা কর্মকর্তা এ.কে.নিয়াজী ও ভারতীয় সেনা কর্মকর্তা জগজিত সিং অরোরার মুহূর্তগুলো। এছাড়াও আরও কয়েকটি ভাগে ভাগ করা হয় চিত্র প্রদর্শনীটি। সেখানে স্থান পেয়েছে পাকিস্তানি সেনা ও তাদের অস্ত্র সমর্পণের মুহূর্ত। 

এরপর কয়েকটি বিভাগে দেখানো হয়েছে 'কমান্ডার ইন্টারেক্টিভ উইথ ট্রুপস'। যেখানে স্থান পেয়েছে মুক্তিযোদ্ধার সাথে ভারতীয় সেনাবাহিনীর ট্রেনিংয়ে নানা কথাবার্তার বৈঠকে ও যুদ্ধের নানা প্ল্যানিংয়ের আদান-প্রদানের ছবি।

এছাড়া ভারতীয় সেনাবাহিনীর আয়োজনে অনুষ্ঠিত হয় বাংলা নামে একটি বিভাগ। সেখানে বঙ্গবন্ধুর ৭১'এর ঐতিহাসিক ভাষণসহ ইন্দিরা গান্ধী ও বঙ্গবন্ধুর নানা মুহূর্তের ছবি। এর সাথে উঠে এসেছে মুক্তিবাহিনীর তৎপরতার ছবি। মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে ভারতীয় সেনাবাহিনীর 'ক্যাপচার অফ ঢাকা', 'ক্যাপচার অফ বগুড়া', 'ব্যাটেল অফ টাঙ্গাইল', 'ব্যাটেল অফ হিলি', 'ব্যাটেল অফ যশোর' ও 'ব্যাটেল অফ দর্শনা'র নামে মুক্তিযুদ্ধে নানা মুহূর্তের ছবি ফ্রেমবন্দী করা হয়েছে।

এছাড়াও আছে ৭১'সালের তৎকালীন বিভিন্ন পত্রিকার কাটিং কালেকশন। তারমধ্যে উল্লেখযোগ্য দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস, দ্য হিন্দু, দ্য স্টেটসম্যান, টাইমস অফ ইন্ডিয়ার মত প্রথম সারির পত্রিকাগুলো। ওই সব পেপার কাটিং'এ স্থান পেয়েছে মুক্তিবাহিনীর ঐতিহাসিক ঘটনা এবং পরবর্তীতে স্বাধীন বাংলাদেশ।

এছাড়া প্রদর্শনীতে স্থান পেয়েছে বঙ্গবন্ধুর নামে বইগুলোর হিন্দি ও ইংলিশ ভার্সন এবং বাংলাদেশ-পাকিস্তান ভারতের মুহূর্তে ঐতিহাসিক ঘটনার বই।

এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা তথা বাংলাদেশের সাবেক নৌমন্ত্রী শাজাহান খানের নেতৃত্বে ৩০ জন সস্ত্রীক মুক্তিযোদ্ধা ও বর্তমানে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর দায়িত্বপ্রাপ্ত ৬ জন সেনাকর্মকর্তা ও তাদের স্ত্রী এবং ভারতীয় সেনা সদস্য। সব মিলিয়ে ভারতীয় সেনাবাহিনীর অভ্যর্থনায় ৭২ জন বাংলাদেশি কলকাতার সেনা ছাউনি ফোর্ট উইলিয়ামে যান।

ছবি প্রদর্শনীর পর সাবেক মন্ত্রীসহ মুক্তিযোদ্ধরা এবং দুই দেশের সেনাবাহিনী এক আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন। অতীত ও বর্তমান নিয়ে বাংলাদেশের নানা ঘটনা তুলে ধরা হয় ভারতীয় সেনাবাহিনীর সামনে। এরপর স্মারক আদান প্রদান হয় দুই দেশের সেনাবাহিনীর মধ্যে। সবশেষে দুই দেশের জাতীয় সঙ্গীতের মধ্য দিয়ে শেষ হয় অনুষ্ঠান।

এছাড়াও ১৪ ডিসেম্বর ভারতীয় সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে প্রিন্সেপ ঘাটে 'মৈত্রী মিউজিক' সেনাবাহিনীর ব্যান্ড শো আয়োজন করা হয়। সেখানেও ভারতীয় সেনাবাহিনীর কর্মকর্তাদের পাশাপাশি উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ থেকে আগত প্রতিনিধিদল। 

একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর অবদানের কথা স্মরণ করে শাজাহান খান বলেন, "ভারত সরকার সে সময় সহায়তা না করলে এতো তাড়াতাড়ি স্বাধীনতা লাভ করা যেত না। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ দুর্বার গতিতে এগিয়ে চলছে বলে তিনি জানান। 


বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর