ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে বিধানসভার নির্বাচনে তৃতীয় দফার ভোটগ্রহণ চলছে। ভোটের কয়েক মুহূর্ত আগে তৃণমূল নেতার বাড়ি থেকে মিলল একাধিক ইভিএম এবং ভিভিপ্যাট। হাওড়া জেলার উলুবেড়িয়া উত্তর বিধানসভা কেন্দ্রের তুলসিবেড়িয়া গ্রামের এই ঘটনায় ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায়। গ্রামবাসীরা বেশ কিছু ক্ষণ ওই তৃণমূল নেতার বাড়ি ঘিরে রাখেন। উত্তেজিত জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে কেন্দ্রীয় বাহিনী এবং পুলিশ লাঠি চালায়। ওই নেতার বাড়িতে যে সেক্টর কর্মকর্তা ইভিএম নিয়ে এসেছিলেন বলে অভিযোগ তাকে নির্বাচন কমিশন বরখাস্ত করেছে বলে জানা গেছে। খবর আনন্দবাজার পত্রিকার।
অভিযোগ, সোমবার মাঝরাতে গাঁতাইত পাড়ায় স্থানীয় তৃণমূল নেতা গৌতম ঘোষের বাড়িতে ইভিএম ও ভিভিপ্যাটের সেট পৌঁছে দেন সেক্টর অফিসার। এই খবর জানাজানি হতেই ওই তৃণমূল নেতার বাড়ি ঘিরে রাখেন গ্রামবাসীরা। ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায়। সেখানে উলুবেরিয়া ২ নম্বর ব্লকের বিডিও এলে বিক্ষোভের মুখে পড়েন। এর পর এলাকায় বিশাল পুলিশবাহিনী আসে। বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে লাঠিচার্জও করে।
অভিযুক্ত সেক্টর অফিসারের দাবি, যে বাড়িতে তিনি ইভিএম রাখতে গিয়েছিলেন সেটি যে তৃণমূল নেতার বাড়ি তা তিনি জানতেন না। তার আরও দাবি, “ইভিএম আর ভিভিপ্যাটগুলো নিয়ে ফিরতে অনেক রাত হয়ে গিয়েছিল। আমাদের অবস্থার কথা রিটার্নিং অফিসারকে জানানোয় তিনি রাস্তায় রাত কাটাতে বলেন। আমি আমার দুই সহকর্মীর কথা শুনে স্থানীয় এক বাসিন্দার বাড়ি রাত কাটাতে যাই। সেটি যে তৃণমূল নেতার বাড়ি তা আমি জানতাম না।”
উলুবেড়িয়া উত্তরের বিজেপি প্রার্থী চিরন বেরার অভিযোগ, ভোট জালিয়াতি করতে পরিকল্পিতভাবেই এগুলো আনা হয়েছিল। জানা গিয়েছে, ৪টি ইভিএম এবং ৪টি ভিভিপ্যাট পাওয়া গিয়েছে ওই তৃণমূল নেতার বাড়ি থেকে।
বিষয়টি নিয়ে তৃণমূলের তরফে এখনও কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। অভিযুক্ত কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করেছে কমিশন। তার জায়গায় নতুন সেক্টর কর্মকর্তা এসেছেন। ওই ইভিএম এবং ভিভিপ্যাটগুলি ভোটের কাজে আর ব্যবহার করা হবে না বলে জানানো হয়েছে কমিশনের তরফে।
তৃতীয় দফায় ভোটগ্রহণ হচ্ছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের ৩ জেলার ৩১ কেন্দ্রে। হাওড়া ও হুগলি জেলায় ভোটের অবশ্য এটাই প্রথম দফা। দুই জেলার যথাক্রমে ৭ ও ৮টি আসনে ভোটগ্রহণ হচ্ছে। আর দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ভোট হচ্ছে ১৬টি আসনে। সকাল ৯টা পর্যন্ত রাজ্যে ভোট পড়েছে ১৪ শতাংশ। ভোটদান চলছে নির্বিঘ্নেই।
নির্বাচন কমিশন কমিশনের হিসাব অনুযায়ী প্রথম দফায় ভোট পড়েছে ৮৪.৬৩ শতাংশ। আর দ্বিতীয় দফায় ৮৬.১১ শতাংশ। কমিশনের লক্ষ্য, তৃতীয় দফায় ভোটের হার আরও বাড়ানো। তবে নিরাপত্তার দিকেও কড়া নজর রয়েছে কমিশনের। ভোট শান্তিপূর্ণ করতে, ‘ওয়েব কাস্টিং’-এর উপরেও জোর দেওয়া হচ্ছে।
বিডি প্রতিদিন/ফারজানা