শিরোনাম
রবিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০১৪ ০০:০০ টা

উত্তরায় অপহৃত যুবদল নেতার লাশ লক্ষ্মীপুরে

উত্তরায় অপহৃত যুবদল নেতার লাশ লক্ষ্মীপুরে

ঢাকা থেকে অপহরণের দুই দিন পর লক্ষ্মীপুর জেলা যুবদল নেতা সোলায়মান বাহিনীর প্রধান সামছুল ইসলাম সোলায়মানের গুলিবিদ্ধ লাশ গতকাল সকালে উদ্ধার করেছে পুলিশ। লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার চরশাহী ইউনিয়নের সৈয়দপুর গ্রাম থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। নিহত সোলায়মান স্থানীয় চরশাহী ইউনিয়নের রামপুর গ্রামের মৃত সাইদুর রহমানের পুত্র ও জেলা যুবদলের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক এবং পুলিশের তালিকাভুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী বলে জানা যায়।

পুলিশ ও পারিবারিক সূত্র জানায়, গত বৃহস্পতিবার রাত সোয়া ১১টার দিকে স্ত্রী ও সন্তানকে নিয়ে যুবদল নেতা সোলায়মান রিকশাযোগে ঢাকার উত্তরার বাসায় ফিরছিলেন। এ সময় উত্তরা ৬ নং সেক্টরের জয়নাল মার্কেটের সামনে পৌঁছলে একটি মাইক্রোবাস তাদের রিকশার গতিরোধ করে সোলায়মানকে সাদা পোশাকধারী আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে অস্ত্র ঠেকিয়ে তুলে নিয়ে যায়। এর পর থেকে তার পরিবারের সদস্যরা ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ, র‌্যাব হেডকোয়ার্টার এবং উত্তরার আশপাশের থানাসহ বিভিন্ন স্থানে খোঁজ করেও তার কোনো সন্ধান পায়নি। পরে এ ব্যাপারে তার স্ত্রী সালমা ইসলাম মায়া বাদী হয়ে উত্তরা (পূর্ব) থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। এদিন সকালে লক্ষ্মীপুরের পূর্ব সৈয়দপুর গ্রামের স্থানীয় কচুয়া খাল স্লুইসগেট এলাকায় গুলিবিদ্ধ অবস্থায় তার লাশ পাওয়া যায়। খবর পেয়ে পুলিশ লাশ উদ্ধার ও শনাক্ত করে লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করে। এ সময় সোলায়মানের মৃত্যু সংবাদ শুনে শত শত উৎসুক জনতা ঘটনাস্থলে ভিড় জমান।

স্থানীয় এলাকাবাসী জানান, কে বা কারা সোলায়মানকে হত্যা করেছে তা তারা জানেন না। তবে নিহতের শরীরে গুলির চিহ্ন রয়েছে বলে জানান তারা।

এদিকে চাঁদার দাবিতে সোলায়মানের নির্যাতনের শিকার হয়ে পঙ্গুত্ববরণ করা স্থানীয় একটি ইটভাটার ম্যানেজার আলতাফ হোসেন তার মৃত্যু সংবাদ শুনে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন লাশ দেখতে। এ সময় বাংলাদেশ প্রতিদিনকে এ ব্যবসায়ী জানান, দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে তা না পেয়ে সোলায়মান আমার পায়ে গুলি করে। আমি পা হারিয়ে বর্তমানে পঙ্গুত্ব জীবনযাপন করছি। সে ভয়ঙ্কর সন্ত্রাসী ছিল। নিহতের স্ত্রী সালমা ইসলাম ও বোন সুফিয়া আফরোজ জানান, বৃহস্পতিবার রাতে সাদা পোশাকধারী কিছু লোক ঢাকা থেকে সোলায়মানকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। এর পর থেকে বহু খোঁজাখুঁজি করে তাকে পাওয়া যায়নি। সকালে সোলায়মানের লাশ পাওয়ার খবর শোনেন তারা।

এ ব্যাপারে বিএনপির কেন্দ্রীয় সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক ও জেলা সভাপতি আবুল খায়ের ভুঁইয়া জানান, সরকার একতরফাভাবে বিএনপি নেতা-কর্মীদের বিচারবহির্ভূত হত্যা করছে। কেউ যদি সন্ত্রাসী হয় তাকে গ্রেফতার করে আইনের মাধ্যমে শাস্তি না দিয়ে অপহরণ, গুম ও ক্রসফায়ার করে হত্যা করা মানবাধিকার লঙ্ঘনসহ গণতন্ত্রবিরোধী বলে মন্তব্য করেন তিনি। স্থানীয় দাসেরহাট পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মোজাম্মেল হোসেন জানান, সোলায়মান পুলিশের তালিকাভুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী। তার বিরুদ্ধে লক্ষ্মীপুর সদর থানা, নোয়াখালী জেলার সুধারাম ও বেগমগঞ্জ থানায় ৫টি মামলা রয়েছে।

 

সর্বশেষ খবর