শনিবার, ২৬ নভেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

সড়কে ঝরল নয়জনের প্রাণ

প্রতিদিন ডেস্ক

বিভিন্ন স্থানে সড়ক দুর্ঘটনায় গতকাল নয়জনের প্রাণ ঝরেছে। এ দুর্ঘটনাগুলো ঘটেছে নাটোরের লালপুর, বগুড়ার শেরপুর, গোপালগঞ্জ, দিনাজপুরের বীরগঞ্জ এবং ঢাকায় সাভারের আশুলিয়ায়।

নাটোর প্রতিনিধি জানিয়েছেন, লালপুর উপজেলায় ট্রাক ও পিকআপের চাকায় পিষ্ট হয়ে এক রিকশাভ্যান চালকসহ পাঁচজন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে তিনজন। ভ্যানচালক ছাড়া হতাহত সবাই শ্রমিক। গতকাল সকালে লালপুর-ঈশ্বরদী সড়কে লালপুর পেট্রল পাম্পের সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শীর বরাত দিয়ে থানার ওসি আবু ওবায়েদ জানান, সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ঈশ্বরদী থেকে আসা একটি ট্রাক লালপুর পেট্রল পাম্পের সামনে যাত্রীবাহী একটি ব্যাটারিচালিত রিকশাভ্যানকে চাপা দিয়ে দ্রুত চলে যায়। এর পরপরই ভ্যানের পেছনে থাকা একটি পিকআপ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে হতাহতদের ওপর উঠে পড়ে। তাদের হাসপাতালে নেওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক ভ্যানচালক আমিরুল ইসলাম (৪৫), যাত্রী সরদার আবু তাহের (৭০), জিল্লুর রহমান ওরফে জিলু (৬৫) ও মখলেছুর রহমানকে (৪০) মৃত ঘোষণা করেন। রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে ভ্যানের অপর এক যাত্রী জহুরুল ইসলামের (৫২) মৃত্যু হয়। ভ্যানচালক আমিরুল ইসলাম দক্ষিণ লালপুরের তরি মণ্ডলের ছেলে। বাকি সব হতাহতের বাড়ি সিরাজগঞ্জ জেলায়। তারা লালপুরে পদ্মা নদীর তীর সংরক্ষণ প্রকল্পের শ্রমিক। লাশ লালপুরে হাসপাতালে রাখা হয়েছে। আহতদের মধ্যে রয়েছেন রঞ্জু মণ্ডল (২০), রাব্বি শেখ (২১) ও দিপু হোসেন (২৪)। তাদের লালপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, ট্রাক নিয়ে চালক পালিয়েছে। পিকআপের চালক রাব্বি মণ্ডলও পালিয়েছে। তাদের আটকের চেষ্টা চলছে। পিকআপ ও ভ্যান পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। বগুড়া থেকে নিজস্ব প্রতিবেদক জানান, বগুড়ার শেরপুর উপজেলায় মালবাহী ট্রাক ও ধানবোঝাই ভটভটির সংঘর্ষে ধানের মালিক আবু তৈয়ব (৬০) নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও দুজন। নিহত তৈয়ব ভবানীপুর ইউনিয়নের আমিনপুর গ্রামের মৃত আকবর আলীর ছেলে। আহতদের উদ্ধার করে স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। গতকাল ভোর রাতে উপজেলার ঢাকা-বগুড়া মহাসড়কের ঘোগা বটতলা এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।  গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, শহরের জেলা প্রশাসকের বাসভবনের সামনের সড়কে ট্রলি চাপায় মো. হাবিবুর রহমান হাবিব (২৬) নামে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী নিহত হয়েছেন। গতকাল সকাল সাড়ে ১০টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে। হাবিব শহরের মৌলভীপাড়ার আবদুল জব্বারের ছেলে। তিনি গোপালগঞ্জ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগে এলএলবি (পাস) কোর্সের প্রথম বর্ষের ছাত্র। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও তার স্বজনদের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, হাবিব বিশ্ববিদ্যালয় থেকে  মোটরসাইকেলে করে শহরের দিকে যাচ্ছিলেন। ঘটনাস্থলে একটি ব্যাটারিচালিত রিকশাভ্যান তাকে পেছন থেকে ধাক্কা  দেয়। এতে তিনি মোটরসাইকেল নিয়ে রাস্তার ওপর পড়ে যান। এ সময় একটি দ্রুতগামী মাটি বহনকারী ট্রলি তাকে চাপা দিয়ে পালিয়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলে তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনার প্রতিবাদে ও শহরের মধ্যে অবৈধ ট্রলি বন্ধের দাবিতে দুপুর ১২টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত জেলা প্রশাসকের বাসভবনের সামনের সড়কে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের প্রায় দুই শতাধিক শিক্ষার্থী ও শিক্ষক মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেন। এদিকে এই নিহতের ঘটনায় আজ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে কালো ব্যানার টানানো ও শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের কালোব্যাজ ধারণ এবং আসরবাদ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদে মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে। দিনাজপুর প্রতিনিধি জানান, দিনাজপুর-ঠাকুরগাঁও মহাসড়কে বীরগঞ্জ উপজেলার কারাগার এলাকায় মাইক্রোবাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পাশের বৈদ্যুতিক খুঁটির সঙ্গে ধাক্কা খেলে চালক আরিফ (৩২) নিহত হয়েছেন। তিনি পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ উপজেলার লক্ষ্মীহাট এলাকার আবু জাফরের ছেলে। গতকাল সকালে এ দুর্ঘটনা ঘটে। বীরগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ফকরুল ইসলাম জানান, সকালে মাইক্রোবাসে নিয়ে পঞ্চগড় থেকে দিনাজপুর যাচ্ছিলেন আরিফ। পথে কারাগার এলাকায় মাইক্রোবাসটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বৈদ্যুতিক খুঁটির সঙ্গে ধাক্কা খায়। সাভার প্রতিনিধি জানান, আশুলিয়ায় যাত্রীবাহী বাসের চাপায় অজ্ঞাত পরিচয় এক বৃদ্ধার মৃত্যু হয়েছে। গতকাল সকাল দশটার দিকে নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কের ভলিবদ্র বাসস্ট্যান্ড এলাকার হাসেম প্লাজার সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে। প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, সকাল দশটার দিকে আশুলিয়ার ভলিবদ্র এলাকা থেকে বাইপাইলের উদ্দেশ্যে রওনা দেন ওই বৃদ্ধা। এ সময় হাসেম প্লাজার সামনে একটি যাত্রীবাহী বাস তাকে চাপা দিয়ে দ্রুত পালিয়ে যায়। ঘটনাস্থলেই বৃদ্ধার মৃত্যু হয়। খবর          পেয়ে সাভার হাইওয়ে থানা পুলিশ নিহতের লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। সাভার হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা           (ওসি) জাহিদুল ইসলাম বলেন, ঘাতক বাস বা বাসের চালককে আটক করা সম্ভব হয়নি।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর