রবিবার, ২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা

কোথায় হারাল দুই বোন দোলা-বৃষ্টি

নিজস্ব প্রতিবেদক

‘একা থাকার এই ভালো লাগায় হারিয়ে গিয়েছি, নিঃসঙ্গতা আমাকে আর পাবে না...’ গত ৩ জানুয়ারি ফেসবুকে এমন একটি লেখা পোস্ট করেছিলেন রেহেনুমা তারান্নুম দোলা। অথচ তার প্রায় দেড় মাস পর বোন ফাতেমা-তুজ-জোহরা বৃষ্টিকে নিয়ে সত্যিই হারিয়ে গেছেন দোলা। দুই বোনের চালচলনে ছিল অ™ভুত কিছু মিল। শাড়ি ছিল তাদের দুজনের ভীষণ প্রিয়। উৎসব, উপলক্ষ কিংবা যে কোনো আয়োজনে শাড়ি থাকত তাদের পছন্দের তালিকায়। দোলা আর বৃষ্টির ফেসবুক টাইমলাইনজুড়ে থাকা বেশিরভাগ শাড়ি পরা ছবি তারই প্রমাণ দেয়। দুজনই চশমা পরতেন, তাও প্রায় একই রকম ফ্রেমের। শিল্প-সাহিত্যেও আগ্রহ ছিল বেশ। আবৃত্তিতে ঝোঁক কিছুটা বেশি। দুবোন মিলে ভর্তিও হয়েছিলেন প্রজন্ম কণ্ঠ নামে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসির একটি আবৃত্তি সংগঠনে। শিল্প-সাহিত্যের প্রতি দারুণ ঝোঁক থাকায় পরিবারও দুজনকে উৎসাহ দিত। গত বুধবার রাতে চকবাজারের চুড়িহাট্টার আগুনের ঘটনার পর থেকে দোলা আর বৃষ্টিকে হন্যে হয়ে খুঁজছে তাদের পরিবার। দলিলুর রহমান দুলাল ও সুফিয়া কামালের কন্যা দোলা থাকতেন ১৩৮/৯ লালবাগ রোডে। এর ঠিক পাশেই ৪১/১ হাজী রহিম বক্স লেনে থাকতেন জসিম উদ্দিন ও শামসুন্নাহারের মেয়ে বৃষ্টি। বৃষ্টি পড়তেন গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজে এবং দোলা পড়তেন বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসে। চকবাজারে অগ্নিকান্ডের দিন বিকালে সেগুনবাগিচার শিল্পকলা একাডেমিতে নিজেদের আবৃত্তি সংগঠন প্রজন্ম কণ্ঠের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে একসঙ্গে বাসা থেকে বের হন দোলা ও বৃষ্টি। সেদিনও দুজনে শাড়ি পরাই ছিলেন। খোঁপায় ছিল ফুল। দুপুরের পর বাসা থেকে চলে যান শিল্পকলা একাডেমির অনুষ্ঠানে। দ্রুত অনুষ্ঠান শেষ করে বাসায় ফিরে আসবেন বলেও জানান দুজন। অনুষ্ঠান শেষ করে রাতে রিকশায় করে বাসায় ফিরছিলেন দুই বোন। কবি রুদ্র রোড এলাকায় পৌঁছালে মোবাইল ফোনে কথা হয় ভাই সাজিদুল ইসলাম সাজিদের সঙ্গে। ১০টার কিছুক্ষণ পরেই তাদের সঙ্গে কথা হয় বলে জানান সাজিদ। তিনি বলেন, আমাকে ফোনে বলেছিল আর মিনিট দশেকের মধ্যে তারা বাসায় চলে আসবে। অথচ দুই দিন হয়ে গেল এখনো আমার বোনদের খুঁজে পেলাম না।

সর্বশেষ খবর