বুধবার, ১০ এপ্রিল, ২০১৯ ০০:০০ টা
একনেকে সাত প্রকল্প অনুমোদন

সরকারি কর্মকর্তাদের গ্রামে থাকতে হবে

নিজস্ব প্রতিবেদক

গ্রামাঞ্চলে যে সব সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পদায়ন তাদের গ্রামেই থাকতে হবে বলে নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তবে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের গ্রামে রাখার উপযোগী পরিবেশ তৈরির জন্যও সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দিয়েছেন তিনি।  গতকাল রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক)  বৈঠকে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপারসন শেখ হাসিনা বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন।বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে পরিকল্পনমন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, একনেকে প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়ে বলেছেন, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা যেন মাঠপর্যায় থাকেন, তার ব্যবস্থা করতে হবে। তিনি বলেন, সরকারি কর্মকর্তারা গ্রামে থাকতে চান না। আবার তারা গ্রামে থাকলেও তাদের পরিবার থাকে ঢাকায়। এ অবস্থায় তাদের মন পড়ে থাকে পরিবারের কাছে। ফলে জনগণকে সঠিক সেবা দিতে পারেন না। এ অবস্থায় কর্মকর্তা-কর্মচারীরা যেন পরিবার নিয়ে গ্রামের কর্মস্থলেই থাকতে পারেন। সে পরিবেশ তৈরি করতে হবে। পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, গ্রামে এখন থেকে যে সব ভবন তৈরি হবে, সে গুলো যেন খোলামেলা হয়, যেন দর্শনার্থীরা সহজেই হাঁটাচলা করতে পারেন, এমন পরিবেশ তৈরি করতে হবে। এ ছাড়া যেসব পুকুর রয়েছে, সেগুলো কোনোভাবেই ভরাট করা যাবে না। প্রয়োজন হলে নতুন করে পুকুর কাটতে হবে, যেন কোথাও আগুন লাগলে সেই পুকুরের পানি ব্যবহার করা যায়।

৭ প্রকল্পের অনুমোদন : একনেক সভায় নতুন সাতটি প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এতে মোট ব্যয় হবে ১৮ হাজার ১৯১ কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকার দেবে ৬ হাজার ৬২২ কোটি টাকা এবং বাকি ১১ হাজার ৫৬৮ কোটি টাকা ঋণ নেওয়া হবে। গতকাল একনেক সভায় এসব প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়। সভা শেষে প্রকল্পের বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। তিনি জানান, রেলপথ মন্ত্রণালয়ের ‘বাংলাদেশ রেলওয়ের আখাউড়া-সিলেট সেকশনের মিটারগেজ রেললাইনকে ডুয়েলগেজ রেললাইনে রূপান্তর’ প্রকল্পে ব্যয় হবে ১৬ হাজার ১০৪ কোটি ৪৪ লাখ টাকা। এর মধ্যে বাংলাদেশ সরকার দেবে ৫ হাজার ৪৫০ কোটি ৮ লাখ টাকা এবং চীন সরকার ঋণ দেবে ১০ হাজার ৬৫৪ কোটি ৩৬ লাখ টাকা। চলতি বছরের জুলাই থেকে ২০২৫ সালের জুনের মধ্যে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে। পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ কমপ্লেক্স নির্মাণ’ প্রকল্পে ব্যয় হবে ২৪৪ কোটি ৩১ লাখ টাকা। পুরোটাই সরকারি অর্থায়নে এ প্রকল্প চলতি বছরের মার্চ থেকে ২০২১ সালের জুনের মধ্যে বাস্তবায়ন করা হবে। এদিকে ‘মিরসরাইয়ে ভারতীয় অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপন’ প্রকল্পে ব্যয় হবে ৯১৯ কোটি ৮৫ লাখ টাকা। এর মধ্যে বাংলাদেশ সরকার দেবে ৫ কোটি ২৬ লাখ টাকা এবং ভারত ঋণ দেবে ৯১৪ কোটি ৫৯ লাখ টাকা। চলতি বছরের এপ্রিল থেকে ২০২১ সালের জুনের মধ্যে এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে।

এ ছাড়া সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের ‘মাগুরা-শ্রীপুর জেলা মহাসড়ক বাঁক সরলীকরণসহ সম্প্রসারণ’ প্রকল্প, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের ‘বিসিএসআইআর ঢাকা ও চট্টগ্রাম কেন্দ্রে নিরাপদ ও স্বাস্থ্যকর শুঁটকি মাছ প্রক্রিয়াকরণ এবং ইনডোর ফার্মিং গবেষণা সংক্রান্ত সুবিধাদি স্থাপন’ প্রকল্প, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের ‘কুড়িগ্রাম জেলার রৌমারী উপজেলার ঘুঘুমারী থেকে ফুলুয়ার চর ঘাট ও রাজিবপুর উপজেলা সদর (মেম্বার পাড়া) থেকে মোহনগঞ্জ বাজার পর্যন্ত ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙন থেকে বাম তীর সংরক্ষণ’ প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়।

সর্বশেষ খবর