মঙ্গলবার, ৭ মে, ২০১৯ ০০:০০ টা

হয়ে গেল হেভিওয়েটদের ভোট

দীপক দেবনাথ, কলকাতা ঝাড়খন্ড

হয়ে গেল হেভিওয়েটদের ভোট

ভারতে গতকাল বিক্ষিপ্ত সহিংসতার মধ্য দিয়ে লোকসভা নির্বাচনের পঞ্চম পর্বের ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। এই পর্বে সাতটি রাজ্যের ৫১টি আসনে অর্থাৎ উত্তরপ্রদেশ (১৪), রাজস্থান (১২), মধ্যপ্রদেশ (৭), পশ্চিমবঙ্গ (৬), বিহার (৫), ঝাড়খণ্ড  (৪) এবং জম্মু-কাশ্মীরের (২) টি আসনে ভোট হয়েছে। গতকালের ভোটের মধ্য দিয়ে ৫৪৩ আসনের লোকসভার ৪২৫ টিতে নির্বাচন হয়ে গেল। বাকি রইল ১১৮টি আসন। আগামী ১২ মে ৬ষ্ঠ পর্বে ৫৯টি আসন এবং ১৯ মে সপ্তম অর্থাৎ শেষ পর্বে ৫৯টি আসনে ভোট নেওয়া হবে।

গতকাল পশ্চিমবঙ্গের যে সাতটি কেন্দ্রে ভোট নেওয়া হয়েছে এগুলো হলো- বনগাঁ, ব্যারাকপুর, হাওড়া, উলুবেড়িয়া, হুগলী, শ্রীরামপুর ও আরামবাগ। প্রতিটি কেন্দ্রেই ক্ষমতাসীন দল তৃণমূল কংগ্রেস, বিজেপি, সিপিআইএম ও কংগ্রেসই হলো প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী। ভোট অবাধ ও শান্তিপূর্ণ করতে সাতটি কেন্দ্রেই শতকরা            ১০০ ভাগ বুথেই কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন ছিল। কিন্তু সহিংসতা ঠেকানো যায়নি। ভোট শুরু হওয়ার পরই ব্যারাকপুর, হাওড়া, হুগলী থেকে বিক্ষিপ্ত অশান্তির খবর আসতে থাকে। ব্যারাকপুরে বিদ্যাসাগর বিদ্যাপীঠ স্কুলে বিজেপির বুথ এজেন্টকে তুলে দেওয়ার অভিযোগ পেয়ে অর্জুন সিং সেখানে গেলে তাকে ঘিরে ধরে বিক্ষোভ দেখায় তৃণমূল। এ সময় দুর্বৃত্তদের হামলায় তার মুখ ফেটে যায়। ঘটনায় ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এ ছাড়াও এই কেন্দ্রের একাধিক জায়গায় সহিংসতায় বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। অন্যদিকে হুগলীতে বিজেপি প্রার্থী লকেট চ্যাটার্জির অভিযোগ, পুলিশ ধনেখালির একাধিক বুথে ছাপ্পা ভোট দিতে উৎসাহ দেয় বা প্রভাবিত করে। সকালে সেখানে ইভিএম ভাঙচুর করা হয় বলে অভিযোগ বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের বিরুদ্ধে। এ সময় ভোটাররা বাধা দিতে গেলে লকেট তাদের ওপর চড়াও হন বলে অভিযোগ। এর পরই ক্ষুব্ধ ভোটার লকেটের গাড়ি ভাঙচুর করে। হাওড়ায় তৃণমূল কংগ্রেসের প্রসুন ব্যানার্জিকে হেনস্থার শিকার হতে হয় বলে অভিযোগ। ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী বনগাঁ কেন্দ্রেও পুলিশকে লক্ষ করে বোমা ছোড়া হয়। তাতে এক পুলিশ কর্মী ও এক তৃণমূল কর্মী আহত হয়। জম্মু-কাশ্মীরেও অশান্তির খবর পাওয়া গেছে। ওই রাজ্যের অনন্তনাগ লোকসভা আসন এলাকার অন্তর্গত পুলওয়ামায় একটি ভোটগ্রহণ কেন্দ্রের সামনে গ্রেনেড বিস্ফোরণ হয়। তাতে হতাহতের কোনো খবর নেই। ঘটনার পরই সেখানে উত্তেজনা ও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এই পর্বে দেশজুড়ে এশাধিক হেভিওয়েট প্রার্থীর ভাগ্য বাক্সবন্দী হলো। যার মধ্যে অন্যতম লখনৌ আসনে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং, আমেথি আসনে কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী, রায়বেরিলি আসনে ইউপিএ চেয়ারপারসন সোনিয়া গান্ধী। এ ছাড়াও আমেথি থেকে কেন্দ্রীয় বস্ত্রমন্ত্রী স্মৃতি ইরানি, জয়পুর রুরাল কেন্দ্রে কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী রাজ্যবর্ধণ সিং রাঠোর, হাজারিবাগ কেন্দ্রে কেন্দ্রীয় অর্থ প্রতিমন্ত্রী জয়ন্ত সিনহা, বিকানের থেকে কেন্দ্রীয় পানিসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রী অর্জুন রাম মেঘওয়াল, ব্যরাকপুর কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থী সাবেক রেলমন্ত্রী দীনেশ ত্রিবেদী, সরণ কেন্দ্রে সাবেক মন্ত্রী বিজেপির রাজীব প্রতাপ রুড্ডি, লখনৌ কেন্দ্রে সপা প্রার্থী ও অভিনেত্রী পুনম সিনহা, হাওড়া কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থী ভারতের জাতীয় দলের সাবেক ফুটবলার প্রসুন ব্যানার্জির মতো প্রার্থীদের ভাগ্য নির্ধারণ হয়েছে। এই পর্বেই ঝাড়খন্ডের দুই সাবেক মুখ্যমন্ত্রীরও ভাগ্য পরীক্ষা হয়ে গেল। কোদেরমা কেন্দ্রে ঝাড়খ  বিকাশ মোর্চা (প্রজাতান্ত্রিক) প্রার্থী বাবুলাল মারান্ডি এবং খুন্টি কেন্দ্রে বিজেপির প্রার্থী ছিলেন অর্জুন মুন্ডা।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর