শিরোনাম
বৃহস্পতিবার, ২৩ জুলাই, ২০২০ ০০:০০ টা

গুলিবিদ্ধ আহতদের কাছ থেকে তথ্য নিচ্ছে পুলিশ

খুলনার মশিয়ালী হত্যাকাণ্ড

নিজস্ব প্রতিবেদক, খুলনা

খুলনার মশিয়ালী এলাকায় ট্রিপল মার্ডারের মূল অভিযুক্ত জাকারিয়া হোসেন ও তার ভাই মিল্টনকে ঘটনার সাত দিন পরও আটক করতে পারেনি পুলিশ। এতে আবারও বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন গ্রামবাসী। হত্যাকারীদের গ্রেফতার দাবিতে এলাকায় মিছিল-সমাবেশ করছেন বিক্ষুব্ধরা। এদিকে হত্যাকান্ডের মূল কারণ উদ্্ঘাটন ও অস্ত্র উদ্ধারে ওই ঘটনায় গুলিবিদ্ধ আহত ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলেছে পুলিশের একাধিক টিম। গতকাল বিকালে মশিয়ালী ঈদগাহ জামে মসজিদ ও মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে গুলিবিদ্ধ রবিউল ইসলাম, সুজনসহ কয়েকজনের লিখিত জবানবন্দি নেয় পুলিশ। অন্যদিকে রিমান্ডে নতুন তথ্য দিয়েছেন মামলার অন্যতম আসামি শেখ জাফরিন। রাতে হত্যাকান্ডের পর গ্রামবাসীর ধাওয়া খেয়ে তারা যে বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছিলেন এবং যার কাছে অস্ত্র রেখেছিলেন, তার নাম প্রকাশ করেছেন জাফরিন। ওই সময় পিস্তলে এক রাউন্ড গুলি লোড করা ছিল। ওই গুলি পানির মধ্যে চালিয়ে পিস্তল সরিয়ে ফেলতে বলেন জাফরিন। রিমান্ডে দেওয়া এসব তথ্য যাচাই করছে পুলিশ। জানা যায়, এলাকায় জমি দখল, চাঁদাবাজি, সুদের ব্যবসা, অত্যাচার-নির্যাতনের কারণে জাকারিয়া এবং তার দুই ভাই জাফরিন ও মিল্টনের ওপর আগে থেকেই ক্ষুব্ধ ছিলেন এলাকার মানুষ। ১৬ জুলাই বাড়িতে বন্দুকের গুলি রেখে গ্রামের মুজিবর শেখ (৪২) নামের এক ব্যক্তিকে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে পুলিশে দেওয়া হলে গ্রামবাসী জড়ো হয়ে জাকারিয়ার সঙ্গে বিতর্কে জড়িয়ে পড়েন। একপর্যায়ে জাকারিয়া ও মিল্টনসহ আাসামিরা গুলিবর্ষণ করলে গুলিবিদ্ধ হয়ে নজরুল ফকির, গোলাম রসুল ও সাইফুল নিহত হন। পরে উত্তেজিত জনতা জাকারিয়াদের বসতবাড়ি ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে আগুন ধরিয়ে দেয়। এ ছাড়া জাকারিয়ার আত্মীয় জিহাদ শেখকে পিটিয়ে হত্যা করে বিক্ষুব্ধ জনতা। মশিয়ালী গ্রামের বাসিন্দা মুজিবর শেখ জানান, গতকাল পুলিশের চার সদস্যের একটি টিম গুলিবিদ্ধ রবিউল ইসলাম, সুজন, শহিদুলসহ কয়েকজনের সাক্ষ্য নিয়েছে। তারা মূলত ঘটনাস্থলে কী ধরনের অস্ত্র ব্যবহার হয়েছিল, কী কারণে এ ঘটনা ঘটেছে সে বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করছে। এদিকে রিমান্ডে থাকা জাফরিন পুলিশকে জানিয়েছেন, ওই ঘটনার পর উত্তেজিত গ্রামবাসী বাড়িতে হামলা চালালে সবাইকে নিয়ে তারা গ্রামের আরেকটি বাড়িতে আশ্রয় নেন। সেখানে তাদের এক আত্মীয়ের কাছে সব অস্ত্র রেখে তারা আলাদাভাবে পালিয়ে যান।

পুলিশ তথ্য অনুযায়ী মঙ্গলবার রাতে জাফরিনের সেই আত্মীয়কে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ ও সম্ভাব্য স্থানে অভিযান চালায়। তবে অস্ত্র উদ্ধার বা মূল অভিযুক্তদের গ্রেফতার করতে পারেনি। পুলিশের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এ তথ্য জানিয়েছেন।

খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (মিডিয়া) কানাই লাল সরকার জানান, হত্যাকান্ডের আগের ও পরের সার্বিক বিষয়ে অনুসন্ধানের জন্য অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (অপরাধ) এস এম ফজলুর রহমানকে প্রধান করে চার সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটি এরই মধ্যে কারণ অনুসন্ধানে মাঠে নেমেছে। এ ছাড়া খানজাহান আলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এস এম শফিকুল ইসলামকে বদলি করা হয়েছে।

সর্বশেষ খবর