শুক্রবার, ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

সৌদি খেজুর চাষে কর্মসংস্থানের সম্ভাবনা

রাহাত খান, বরিশাল

সৌদি খেজুর চাষে কর্মসংস্থানের সম্ভাবনা

সৌদি আরবে ১৭ বছর প্রবাসজীবনের ইতি টেনে দেশে ফিরে দেশটির সেরা তিন জাতের খেজুর উৎপাদন করে এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছেন বরিশালের উজিরপুরের ধামসর গ্রামের আল-মামুন। ৩০ শতাংশ জমিতে ৫ বছর আগে লাগানো ৫০টি গাছের মধ্যে এবার তিনটি গাছে ফলন এসেছে। শেষ পর্যন্ত টিকেছে একটি গাছের খেজুর। আর এতে অনুপ্রাণিত হয়ে নতুন করে আরও ৪০ শতাংশ জমিতে খেজুরবাগান করার উদ্যোগ নিয়েছেন তিনি। সৌদি খেজুর উৎপাদনের খবরে তার বাগান দেখতে আসছেন অনেকে। সৌদি খেজুর বাগান করলে কারিগরিসহ সব ধরনের সহযোগিতা করার কথা বলেছেন বরিশালের কৃষি কর্মকর্তারা।

সৌদিতে ১৭ বছরের প্রবাসজীবনে মরুভূমির মধ্যে খেজুরবাগান দেখে নিজ দেশে এ জাতের বাগান করার স্বপ্ন জাগে আল-মামুনের। ১০ বছর আগে সৌদি থেকে খেজুর গাছের ৭টি ড্যাম (চারা) দেশে পাঠালেও সেগুলো রোপণ করে বাঁচাতে পারেননি তার বাবা।

২০১৩ সালে সৌদি আরব থেকে ১৭ বছরের প্রবাসজীবনের ইতি টেনে দেশে ফিরে একটি হাইয়েস মাইক্রোবাস কিনে ব্যবসা শুরু করেন আল-মামুন। কিন্তু ব্যবসায় আলোর মুখ না দেখে গাড়িটি বিক্রি করে দেন। ২০১৫ সালে সৌদি আরব থেকে পৃথিবীর সেরা আজোয়া, আম্বার ও চুক্কারি জাতের কিছু খেজুর দেশে এনে এগুলোর বিচি দিয়ে চারা গজিয়ে ৩০ শতাংশ জমিতে শখের খেজুরবাগান করেন তিনি। তখন অনেকে উপহাস করলেও থেমে থাকেননি অদম্য মামুন। কঠোর পরিচর্যায় ৫০টি গাছের মধ্যে পঞ্চম বছরে এসে এবার তার তিনটি গাছে খেজুর ধরে। পরাগায়ণসহ নানা কারণে শেষ পর্যন্ত একটি গাছের ফল টিকেছে। ওই গাছের ৪০ কেজির বেশি খেজুর নিজে খেয়েছন, আত্মীয়স্বজনকে খাইয়েছেন। সৌদি খেজুর ফলনের খবরে অনেকেই তার বাগান দেখতে আসছেন। উৎপাদন পদ্ধতি এবং পরিচর্যার খুঁটিনাটি বিষয়ে আল-মামুনের কাছ থেকে দীক্ষা নিচ্ছেন আগ্রহীরা। সাফল্য ধরা দেওয়ায় এবার আরও ৪০ শতাংশ জমিতে সৌদি খেজুর বাগান সম্প্রসারণ করেছেন উদ্যোক্তা আল-মামুন। সৌদি আরবের মরুতে বালুর মধ্যে খেজুরগাছ হলে বাংলাদেশের মাটিতে আরও বেশি সফল হওয়ার সম্ভাবনা দেখছেন তিনি। তরুণ-যুবসমাজ সৌদি খেজুর চাষে আত্মনিয়োগ করলে সাফল্য আসবে বলে দৃঢ় বিশ্বাস তার। বরিশাল জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসের উপ-পরিচালক মো. তাওফিকুল আলম বলেন, আল-মামুন সৌদি খেজুর চাষে সাফল্য পেয়েছেন। খেজুর চাষ খুবই লাভজনক। পুষ্টিকর খাবারও। কৃষি বিভাগ সৌদি খেজুরের একটি পরীক্ষামূলক প্রকল্পের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। কৃষকরা সৌদি খেজুর চাষের উদ্যোগ নিলে কারিগরিসহ সব ধরনের সহায়তা দেওয়ার কথা বলেন জেলা কৃষি কর্মকর্তা তাওফিকুল আলম। সৌদি খেজুর ছাড়াও পাকিস্তানি ও চায়না মাল্টা এবং কমলা চাষ করছেন সফল কৃষি উদ্যোক্তা আল মামুন।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর