শনিবার, ২৪ অক্টোবর, ২০২০ ০০:০০ টা

গ্রেফতার এড়াতে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন ফরিদপুরের সাত জনপ্রতিনিধি

কামরুজ্জামান সোহেল, ফরিদপুর

ফরিদপুরে আওয়ামী লীগে দুর্নীতি ও অনিয়মে জড়িতদের বিরুদ্ধে জুনে শুরু হওয়া শুদ্ধি অভিযানে রাঘববোয়াল জনপ্রতিনিধির কয়েকজন গ্রেফতার হলে অনেকে গা-ঢাকা দেন। এর মধ্যে সাত ব্যক্তি আবার নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি পালিয়ে বেড়াচ্ছেন, তাই বেশ সমস্যায় পড়ছে সংশ্লিষ্ট এলাকার মানুষ। জানা গেছে, পুলিশের অভিযানের পর ফরিদপুর থেকে একে একে পালিয়ে গেছেন : সদর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান সরোয়ার হোসেন সন্টু, আলিয়াবাদ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ওমর ফারুক ডাবলু, ঈশান গোপালপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম মজনু, কানাইপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বেলায়েত হোসেন, ফরিদপুর পৌরসভার ওয়ার্ড কাউন্সিলর জলিল শেখ ও নাফিজুল ইসলাম তাপস এবং জেলা পরিষদ সদস্য সাহেব সরোয়ার। তবে গুঞ্জন রয়েছে, প্রভাবশালী এক আওয়ামী লীগ নেতার মদদে ওয়ার্ড কাউন্সিলর জলিল এলাকায় ফিরে এসেছেন। আর পুলিশের অভিযানে আটক রয়েছেন ওয়ার্ড কাউন্সিলর মাহফুজুর রহমান মামুন। পলাতক জনপ্রতিনিদির কয়েকজনের বিরুদ্ধে থানা ও আদালতে রয়েছে একাধিক মামলা।

স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে দলের সুবিধাবাদী নেতাদের সঙ্গে আঁতাত করে বিএনপি ছেড়ে আওয়ামী লীগে যোগ দেন ওমর ফারুক ডাবলু। প্রথম দফায় বিএনপির মনোনয়ন নিয়ে জয়ী হলেও আওয়ামী লীগে যোগ দিয়ে দ্বিতীয় দফা জয়ী হন। এরপর তিনি নানা দুর্নীতি আর অনিয়মে জড়িয়ে পড়েন। টাকা হাতানোর লক্ষ্যে বিচার-শালিস থেকে শুরু করে টেন্ডারবাজি, জমি দখল আর বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা চালানোর জন্য তার দুর্নাম। ইউনিয়ন পরিষদের নানা প্রকল্প থেকে হাতিয়ে নেন লাখ লাখ টাকা। পুলিশের ভয়ে ডাবলু এখন এলাকাছাড়া।

ফরিদপুরে ইউপি চেয়ারম্যানদের মধ্যে দুর্নীতিপরায়ণতার জন্য যার খুব নামডাক তিনি হলেন শহিদুল ইসলাম মজনু। তার বিরুদ্ধে জমি দখল, টেন্ডারবাজি, সরকারি জায়গা দখল, চাঁদাবাজি, শালিসের নামে টাকা আদায় ইত্যাদির বিস্তর অভিযোগ। এ ছাড়া ইউনিয়ন পরিষদের বিভিন্ন প্রকল্প লুটপাট করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ারও অভিযোগ রয়েছে মজনুর বিরুদ্ধে।

গ্রেফতার এড়াতে দীর্ঘদিন ধরে পালিয়ে বেড়ানো কানাইপুর ইউপি চেয়ারম্যান ফকির বেলায়েত হোসেনের বিরুদ্ধে নিজ দলের নেতা-কর্মীদের একাংশের ওপর হামলা, মামলা ও নির্যাতনের নেতৃত্ব দেওয়া এবং দুর্নীতির মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা উপার্জনের অভিযোগ রয়েছে।

হাইব্রিড নেতাদের সঙ্গে আঁতাত করে রাজনীতিতে শক্তিমান হয়েছেন মাচ্চর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা সরোয়ার হোসেন সন্টু। গত ইউপি নির্বাচনে তাকে জেতাতে প্রভাবশালী দলীয় নেতারা একাট্টা হলেও প্রশাসনের কঠোর নজরদারিতে থাকায় ভোট চুরি করতে না পেরে সন্টু হেরে যান। ইউপি নির্বাচনে হেরে গেলেও পরে ‘পুরস্কৃত’ হন- বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান হয়েছেন। সন্টুকে বলা হয় টেন্ডারবাজি ও জায়গা দখলের মাস্টারমাইন্ড এবং ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের বিভিন্ন সরকারি জায়গা দখলের ওস্তাদ। এদিকে দুর্নীতিবিরোধী অভিযানে পুলিশের হাতে আটক হয়ে জেল হাজতে রয়েছেন পৌরসভার কাউন্সিলর মাহফুজুর রহমান মামুন।

সর্বশেষ খবর