শনিবার, ১ মে, ২০২১ ০০:০০ টা

স্বাস্থ্যবিধি মেনে বাস চালুর দাবি মালিক সমিতির

নিজস্ব প্রতিবেদক

চলমান লকডাউনে স্বাস্থ্যবিধি মেনে বাস চালুর দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি। গতকাল গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে সমিতির সভাপতি মসিউর রহমান রাঙ্গা ও মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্যাহ এ দাবি জানান। এদিকে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন বলছে, লকডাউনে সব কিছু চালু থাকলেও বন্ধ রয়েছে গণপরিবহন। এতে এ খাতে কর্মরত ৫০ ভাগ শ্রমিক কর্মহীন হয়ে পড়েছেন। এ অবস্থায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে অর্ধেক আসন ফাঁকা রেখে গণপরিবহন চালুর দাবি জানিয়েছে তারা। দাবি বাস্তবায়নে আগামীকাল রবিবার সারা দেশে বিক্ষোভ মিছিল এবং মঙ্গলবার সারা দেশে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। গতকাল সকালে জাতীয়  প্রেস ক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির পক্ষ থেকে এ দাবি জানানো হয়েছে। সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির বিবৃতিতে বলা হয়, লকডাউনে বাস ছাড়া সবই চলছে। বাস চালু না থাকায় স্বাস্থ্যবিধি না মেনে বিকল্পভাবে সিএনজিচালিত অটোরিকশা, টেম্পো, থ্রি-হুইলার, মাইক্রোবাস, স্টাফ বাস এমনকি অ্যাম্বুলেন্সেও গাদাগাদি করে যাত্রী বহন করা হচ্ছে। এতে স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছেই না। বরং স্বাস্থ্যঝুঁকি আরও বাড়ছে। লকডাউনে স্বাস্থ্যবিধি মেনে বাসে সিটের অর্ধেক যাত্রী তথা দুই সিটে একজন যাত্রী নিয়ে বাস চালু থাকলে করোনা সংক্রমণ বাড়ার সম্ভাবনা থাকবে না।

বিবৃতিতে বলা হয়, বাস চালুর ব্যাপারে সারা দেশের পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের মধ্যে সাংঘাতিকভাবে ক্ষোভ বিরাজ করছে। বাস চালুর দাবিতে ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় সড়ক-মহাসড়কে অবরোধ ও বিক্ষোভ চলছে। সামনে ঈদ। লাখ লাখ শ্রমিক কর্মহীন অবস্থায় আছে। বহু গরিব মালিক ব্যাংক ঋণের কিস্তিসহ অসহায় অবস্থায় জীবন-যাপন করছে। এসব দিক বিবেচনা করে কর্মহীন শ্রমিকদের মাঝে খাদ্য সহযোগিতা প্রদানসহ বাস চালু করতে সারা দেশের মালিকদের পক্ষ  থেকে সরকারের প্রতি জোর দাবি জানাচ্ছি। লিখিত বক্তব্যে সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ওসমান আলী বলেন, বাংলাদেশের প্রায় ৭৫ ভাগ যাত্রী ও ৬৫ ভাগ পণ্য সড়কপথে পরিবহন হয়ে থাকে। প্রতিদিন কয়েক কোটি যাত্রী ও পণ্য পরিবহনের কাজে ৫০ লাখ শ্রমিক দিনরাত কাজ করে থাকে। পরিবহন শ্রমিকরা গণমানুষের সংস্পর্শে থাকায় তারা যেমন সবচেয়ে ঝুঁকিতে থাকে তেমনি যাত্রীরাও ঝুঁকিতে থাকেন। সেই বিবেচনায় গণপরিবহন বন্ধ রাখা যুক্তিসঙ্গত। তবে এর সঙ্গে সঙ্গে পরিবহন শ্রমিকদের জীবিকার নিশ্চয়তা বিধানের কথাও ভাবা দরকার। জীবন বাঁচানোর প্রয়োজনে জীবিকারও প্রয়োজন রয়েছে। ওসমান আলী বলেন, বর্তমান লকডাউনে গণপরিবহন বন্ধ ঘোষণা করায় ৫০ লাখ শ্রমিক কর্মহীন হয়ে পড়েছে। ফলে শ্রমিকরা পরিবার-পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে। আমরা উপায়হীন হয়ে পরিবহন সেক্টরের জন্য সরকারের থোক বরাদ্দের দাবি জানাচ্ছি। এ অবস্থায় তিন দফা দাবি তুলে ধরেন তিনি। দাবিগুলো হচ্ছে- ১. স্বাস্থ্যবিধি মেনে মোট আসনের অর্ধেক যাত্রী নিয়ে গণপরিবহন ও পণ্য পরিবহন চলাচলের ব্যবস্থা করতে হবে। ২. সড়ক পরিবহন শ্রমিকদের আর্থিক অনুদান ও খাদ্য সহায়তা প্রদান করতে হবে।  ৩. সারা দেশে বাস ও ট্রাক টার্মিনালগুলোতে পরিবহন শ্রমিকদের জন্য ১০ টাকায় ওএমএসের চাল বিক্রির ব্যবস্থা করতে হবে। এসব দাবি বাস্তবায়নে রবিবার সারা দেশে বিক্ষোভ মিছিল এবং মঙ্গলবার সারা দেশে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করার ঘোষণাও দেন তিনি। সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন সহসভাপতি সাদিকুর রহমান হিরু, শ্রমিক নেতা শহিদুল্লাহ ছদু, মফিজুল হক, হুমায়ুন কবির খান, আব্বাস উদ্দিন বেপু প্রমুখ।

সর্বশেষ খবর