সোমবার, ৩১ মে, ২০২১ ০০:০০ টা

হারিয়ে যাচ্ছে কালো তিতির

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি

হারিয়ে যাচ্ছে কালো তিতির

হারিয়ে যাচ্ছে বিরল পাখি কালো তিতির -আবদুল্লাহ আল মামুন

বিরল আবাসিক পাখি কালো তিতির। অনেকটা মুরগির মতো। দেশের যেখানে সেখানে দেখা যায় না। বছর তিরিশেক আগেও ঢাকা-চট্টগ্রাম বিভাগের পাতাঝরা বনে দেখা যেত। বর্তমানে একমাত্র পঞ্চগড় জেলার তেঁতুলিয়া উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকায় অল্প কিছু স্থানে দেখা যায়।

দু-চারটি পাখি যদিও নজরে পড়ে, তারা আবার শিকারিদের টার্গেটে পরিণত হয়। ফলে এ প্রজাতি খুব দ্রুতই দেশ থেকে হারিয়ে যাচ্ছে। প্রজাতিটি সংরক্ষণের ব্যবস্থা না নিলে এক দশকের মধ্যেই কালো তিতির বিলুপ্ত হবে।

বাংলাদেশ ছাড়াও উত্তর ভারত, আসাম, বিহার, পশ্চিমবঙ্গ, ওড়িশা, নেপাল, পাঞ্জাব, শ্রীলঙ্কা, ভুটান, পূর্ব তুরস্ক এবং পূর্ব আফগানিস্তানে এদের বিচরণ রয়েছে। এরা বিশ্বে বিপদমুক্ত হলেও বাংলাদেশে মহাবিপন্নের তালিকায়। যার ফলে বাংলাদেশের বন্যপ্রাণী আইনে প্রজাতিটি সংরক্ষিত হয়েছে। কালো তিতির পাখি পঞ্চগড় জেলার তেঁতুলিয়া উপজেলার সীমান্তবর্তী চা-বাগান এলাকায় বিচরণ করে। এরা একাকী কিংবা জোড় বেঁধে থাকে। ভোরে এবং গোধূলিলগ্নে শিকারে বের হওয়ার সময় এরা তীক্ষè স্বরে ডাকে। পুরুষ পাখি প্রজনন মৌসুমে গলা টান করে উচ্চৈঃস্বরে চেঁচায়। এ পাখি বেশ উড়তেও পারে। তবে হেঁটে বা দৌড়েই বেশি অভ্যস্ত।

এরা লম্বায় ৩৪ সেন্টিমিটার হয়। ওজন ৪৩০ গ্রাম। পুরুষ পাখির পিঠ ঘন-কালোর ওপর সাদা ও মেটে তিলা দাগ। মাথায় কালোর ওপর সাদা তিলা। মুখ কুচকুচে কালো। গাল সাদা, গলাবন্ধ লালচে। দেহ কুচকুচে কালো।

অন্যদিকে স্ত্রী পাখির পিঠ ফিকে ও বাদামি। ঘাড়ের নিচের অংশ লালচে। কান-ঢাকনি হালকা পীত রঙের। দেহে রয়েছে সাদাকালো ডোরার উপস্থিতি। লেজের তলা তামাটে। উভয়েরই ঠোঁট কালো। চোখ বাদামি। অপ্রাপ্তবয়স্কের বর্ণ স্ত্রী পাখির মতো। এদের কালো বুকে সাদা তিলা দেখা যায়। প্রধান খাবার শস্যদানা, কচিপাতা, পোকামাকড় ও ফল। প্রজনন মৌসুম মার্চ থেকে অক্টোবর। লম্বা ঘাসের ঝোপে, আখখেতে অথবা মাটির গর্তে ঘাস বিছিয়ে বাসা বানায়। ডিম পাড়ে ৬-৯টি। স্ত্রী পাখি নিজেই ডিমে তা দেয়। ডিম ফুটতে সময় লাগে ১৮-২০ দিন।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর