শনিবার, ১০ জুলাই, ২০২১ ০০:০০ টা

ত্রিমুখী সম্পর্কের জেরে হত্যা, বাটখারা বেঁধে নদীতে ফেলা হলো লাশ

কদমতলীর নাসরিন হত্যার রহস্য উদঘাটন

নিজস্ব প্রতিবেদক

অপহরণ মামলার তদন্তে বেরিয়ে এলো খুনের রোমহর্ষক তথ্য। প্রায় দেড় মাস পর ঘড়ি-ব্রেসলেট দেখে লাশ চিনতে পারেন স্বজনরা। অপহরণে সন্দেহ ছিল যার দিকে, তদন্তে বেরিয়ে এলো তিনিই খুনি। গ্রেফতারের পর পুলিশের কাছে ৫০ বছর বয়সী আবদুল হাই স্বীকার করেন, ত্রিমুখী সম্পর্কের জেরে, এই হত্যা।

স্বামীর সঙ্গে নাসরিন সম্পর্কের ইতি টেনেছিলেন কয়েক বছর আগে। মেয়ে নাবিলাকে নিয়ে থাকতেন রাজধানীর কদমতলী থানার গোয়ালবাড়ি এলাকায়। পূর্ব পরিচিত ওষুধ ব্যবসায়ী আবদুল হাইয়ের সঙ্গে ছিলো ঘনিষ্ঠতা। গত ১৮ মে সন্ধ্যার আগে বাসা থেকে বেরিয়ে যান নাসরিন সুলতানা। তারপর থেকেই ছিলেন নিখোঁজ। শেষ বেরিয়ে যাওয়ার দিন, সন্ধ্যার পর ফোন করেন নিচতলায় থাকা প্রতিবেশীকে। অনুরোধ করেন মেয়েকে খাবার পৌঁছে দিতে। মেয়ে নাবিলাকেও ফোন করে বলেন- আসতে দেরি হবে। তখনই মায়ের গলায় অস্বাভাবিকতা টের পান ক্লাস নাইনের শিক্ষার্থী নাবিলা। কিন্তু পরদিন আবদুল হাই মামলা করতে অনুৎসাহিত করেন সম্মানহানির ভয় দেখিয়ে। এড়িয়ে গেছেন, পরিবারের সদস্যরাও। নিখোঁজের সপ্তাহখানেক পর অপহরণ মামলা হয়। তদন্ত করতে গিয়ে পুলিশের সন্দেহের তালিকায় প্রথমেই আসে আবদুল হাইয়ের নাম। নানা তথ্য উপাত্ত বিশেষণের পর, চালকসহ তাকে গত ২ জুলাই গ্রেফতার করা হয়। পরে চালক রানা স্বীকার করেন, সেদিন গাড়ির ভেতরেই গলা টিপে নাসরিনকে হত্যা করেন আবদুল হাই। দড়ি দিয়ে বাটখারা বেঁধে কাঞ্চন ব্রিজ থেকে লাশ ফেলে দেন শীতলক্ষ্যা নদীতে। আবদুল হাইও স্বীকার করেন নিজ হাতে খুনের কথা। পরে খোঁজ মেলে ঘটনার তিন দিন পর রূপগঞ্জ থানা পুলিশ অজ্ঞাতনামা হিসাবে যে লাশ উদ্ধার করেছিল সেটাই নাসরিনের। ঘড়ি ব্রেসলেট আংটি দেখে শনাক্ত করেন পরিবারের সদস্যরাও। আবদুল হাই আর তার চালক রানা দুজনই ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন আদালতে। বিচারের অপেক্ষায় এখন এই হত্যা মামলা।

সর্বশেষ খবর