মঙ্গলবার, ২৪ আগস্ট, ২০২১ ০০:০০ টা

৪০০ বাবুই পাখির জন্য ভালোবাসা

মহিউদ্দিন মোল্লা, কুমিল্লা

৪০০ বাবুই পাখির জন্য ভালোবাসা

চার শতাধিক বাবুই পাখির জন্য একজন কৃষকের ভালোবাসা মুগ্ধ করেছে সবাইকে। কুমিল্লার আদর্শ সদর উপজেলার রামপুর গ্রাম। এই গ্রামের কৃষক মো. রিপন মিয়া পাখিদের প্রতি এই ভালোবাসা দেখান। রামপুর গ্রামের মূল সড়কের পাশে একটি উঁচু তালগাছ। গাছের মাথায় পাতায় পাতায় বাবুই পাখির দুই শতাধিক বাসা। সম্প্রতি গাছের মালিক তজু মিয়া সেটি বেপারির কাছে বিক্রি করে দেন। গাছের পাশেই রিপন মিয়ার ধানের জমি। বিষয়টি তার নজরে পড়ে। তিনি খেয়াল করেন গাছটি বেপারি কেটে নিয়ে যাবে। এতে নষ্ট হবে পাঁচ শতাধিক পাখির আবাস। তালগাছটি ৪ হাজার টাকায় বিক্রি হয়। তিনি আরও ২০০ টাকা বেশি দিয়ে সেটি কিনে নেন। যত দিন গাছে পাখি থাকবে তিনি তত দিন সেটি বিক্রি বা কাটবেন না বলে সিদ্ধান্ত নেন। বুড়িচং উপজেলার ভরাসার বাজার পার হয়ে যেতে হয় সদর উপজেলার বলেশ্বর। তার পরের গ্রাম রামপুর। দেখা গেছে,  রামপুর গ্রামের ভিতর দিয়ে সুন্দর সড়কটি গিয়ে মিলেছে তৈলকুপি বাজারে। রামপুর গ্রামের সড়কের পাশে তালগাছটি। গাছ আর পাখি দেখতে এখানে ভরাসারে অবস্থিত সোনার বাংলা কলেজের শিক্ষার্থীসহ স্থানীয় তরুণরা ভিড় করে।

কৃষক মো. রিপন মিয়া জানান, তিনি এসএসসি পাস করেছেন। এখন জমিতে ফসল ফলানো আর বাড়িতে গরু পালন তার মূল পেশা। জমির পাশের তালগাছটিতে অনেক বাবুই পাখি কিচিরমিচির শব্দ তুলে ডাকে। গাছের কাছে এসে পাখির শৈল্পিক বাসা বুনন আর ডাক শুনলে তার মন ভালো হয়ে যায়। তাদের গ্রামে এ রকম বাবুই পাখির বাসা বাঁধা তালগাছ আর নেই। তাই তিনি গাছটি কিনে নেন। স্থানীয় সোনারবাংলা কলেজের অধ্যক্ষ সেলিম রেজা সৌরভ বলেন, পাখি প্রকৃতির প্রতি যতেœর বিষয়ে আমরা অনেক উদাসীন। সেখানে একজন কৃষক পাখির প্রতি যে ভালোবাসা দেখিয়েছেন সেটি বিরল। তার কাছে আমাদের অনেক শেখার আছে। তার মতো অন্যদেরও জীববৈচিত্র্য রক্ষায় এগিয়ে আসা উচিত।

সামাজিক বন বিভাগ কুমিল্লার বিভাগীয় বন কর্মকর্তা কাজী মুহাম্মদ নুরুল করিম বলেন, দিন দিন পরিবেশ থেকে বৃক্ষ, পাখি ও বিভিন্ন প্রাণী হারিয়ে যাচ্ছে। প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষায় এগুলো সংরক্ষণের বিকল্প নেই। কৃষক রিপন মিয়ার এই উদ্যোগ নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়।

 

সর্বশেষ খবর