বুধবার, ৬ এপ্রিল, ২০২২ ০০:০০ টা
টিপু-প্রীতি হত্যা

শুটার মাসুমের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি

আদালত প্রতিবেদক

রাজধানীর শাহজাহানপুরে আওয়ামী লীগ নেতা জাহিদুল ইসলাম ওরফে টিপু ও কলেজছাত্রী সামিয়া আফনান প্রীতিকে গুলি করে হত্যার কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন মাসুম মোহাম্মদ ওরফে আকাশ। গতকাল ঢাকার অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম মো. তোফাজ্জল হোসেন আসামির জবানবন্দি রেকর্ড করে তাকে কারাগারে পাঠানো আদেশ দেন।

এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের অপরাধ, তথ্য ও প্রসিকিউশন বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মো. জাফর হোসেন সাংবাদিকদের জানান,

আসামি রিমান্ডে থাকাকালে ঘটনার কথা স্বীকার করেন এবং আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেওয়ার ইচ্ছার কথা জানান মামলার তদন্ত কর্মকর্তাকে। পরে তদন্ত কর্মকর্তা আদালতে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় আসামির জবানবন্দি রেকর্ড করার আবেদন করেন। বিচারক আসামির জবানবন্দি রেকর্ড করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

আদালতসূত্র জানান, টিপুকে গুলি করে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন মাসুম। বন্ধু মোল্লা শামীমের মোটরসাইকেলে করে সেদিন ঘটনাস্থলে যান। পরে জাহিদকে গুলি করে শামীমের মোটরসাইকেলেই এলাকা ত্যাগ করেন।

মামলাসূত্রে জানা গেছে, ২৪ মার্চ রাত ১০টার দিকে শাহজাহানপুরের আমতলা মসজিদ এলাকায় মতিঝিল থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক টিপুকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এ সময় এলোপাতাড়ি গুলিতে রিকশারোহী কলেজছাত্রী সামিয়া আফনান প্রীতি নিহত হন। এ ঘটনায় মাসুমকে ২৭ মার্চ গ্রেফতার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। পরদিন আদালত তার সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে। রিমান্ড শেষে গতকাল দুপুরে মাসুমকে আদালতে হাজির কর হয়। তদন্ত কর্মকর্তা ডিবির পরিদর্শক মোহাম্মদ ইয়াসিন শিকদার আসামির স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ড করার আবেদন করেন।

আলোচিত এ হত্যাকান্ডে আওয়ামী লীগ নেতা ওমর ফারুকসহ গ্রেফতার পাঁচজন এখনো ডিবির হেফাজতে।

 অন্য ব্যক্তিরা হলেন আবু সালেহ শিকদার ওরফে শুটার সালেহ (৩৮), নাসির উদ্দিন ওরফে কিলার নাসির (৩৮), মোরশেদুল আলম ওরফে কাইল্যা পলাশ (৫১) ও আরফান উল্লাহ।

ওমর ফারুকসহ চারজনকে গ্রেফতারের পর র‌্যাব সংবাদ সম্মেলন করে জানায়, অপরাধজগতের নিয়ন্ত্রণ, মতিঝিল এলাকায় চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, স্কুল-কলেজে ভর্তিবাণিজ্য, কাঁচাবাজারসহ বিভিন্ন বাজারের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে টিপুকে হত্যা করা হয়। এ ছাড়া ২০০৬ সালে এজিবি কলোনিতে যুবলীগ নেতা রিজভী হাসান ওরফে বোঁচা বাবু হত্যা মামলার আসামিরাও এ খুনের সঙ্গে জড়িত। টিপুর ওপর ক্ষুব্ধ হয়ে অপরাধজগতের নিয়ন্ত্রকদের সঙ্গে সমন্বয় করে পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করেন সুমন শিকদার ওরফে মুসা, যিনি শীর্ষ সন্ত্রাসী বিকাশ-প্রকাশের সহযোগী। তিনি বোঁচা বাবু হত্যা মামলারও আসামি।

এ হত্যাকান্ডের পর ওইদিন রাতেই শাহজাহানপুর থানায় নিহত টিপুর স্ত্রী ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) সংরক্ষিত কাউন্সিলর ফারহানা ইসলাম ডলি বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা করেন। এতে অজ্ঞাতদের আসামি করা হয়।

মামলার এজাহারে টিপুর স্ত্রী অভিযোগ করেন, ‘২৪ মার্চ রাত সোয়া ১০টার দিকে শাহজাহানপুর থানার ২০২ উত্তর শাহজাহানপুর মানামা ভবনের বাটার দোকানের সামনে পৌঁছামাত্র অজ্ঞাতনামা দুর্বৃত্তরা হামলা করেন। তারা আমার স্বামী জাহিদুল ইসলাম টিপুকে পরিকল্পিতভাবে হত্যার উদ্দেশ্যে আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি গুলি করেন।’

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর