মাথার টুপি থেকে পকেটের রুমাল। সবই পাওয়া যায় এক বাজারে। সেটি হলো নরসিংদীর বাবুর হাট। ঈদ সামনে রেখে সরগরম হয়ে উঠেছে দেশের সবচেয়ে বড় পাইকারি কাপড়ের এ হাট। ক্রেতা-বিক্রেতায় মুখর হাটের অলিগলি। দম ফেলার যেন ফুরসত নেই কারও। সাশ্রয়ী দামে মানসম্মত কাপড় কিনতে পাইকারি ক্রেতার পাশাপাশি খুচরা ক্রেতাও হাটে ভিড় করছেন।

জানা গেছে, কাপড়ের জন্য নরসিংদীর বাবুর হাটের খ্যাতি দেশজুড়ে। ক্রেতাদের চাহিদা মেটাতে বিভিন্ন রং আর ডিজাইনের তৈরি শাড়ি, লুঙ্গি ও থ্রি-পিস, বেডশিট, পর্দা, গামছাসহ নানা পোশাকের পসরা সাজিয়ে বসেছেন হাটের প্রায় পাঁচ হাজার দোকানি। ক্রেতা চাহিদা মাথায় রেখে ঈদ উপলক্ষে বাহারি রং ও নিত্যনতুন ডিজাইনের থ্রি-পিস, শাড়ি ও লুঙ্গি তৈরি করা হয়েছে। ক্রেতা ও খুচরা ব্যবসায়ীদের কথা মাথায় রেখে দাম ও মানের সমন্বয় ঠিক রেখে ২০ রকমের শাড়ি ও ৫০ আইটেমের থ্রি-পিস তৈরি করা হয়েছে। তবে তুলা ও সুতার দাম বেশি থাকায় এর প্রভাব পড়েছে সব ধরনের কাপড়ের বাজারে। শাড়ি, লুঙ্গি, থ্রি-পিসসহ সব ধরনের কাপড়ের দাম বেড়েছে।

অপর ব্যবসায়ী রিগ্যান বলেন, ধীরে ধীরে সারা দেশ থেকে পাইকাররা হাটে আসতে শুরু করেছে। গত দুই বছর করোনার কারণে ব্যবসা ভালো হয়নি। রমজানের শুরুতে প্রথম সপ্তাহে বেচাকেনা শুরু হয়েছে। প্রচুর বেচাকেনা হচ্ছে। এবার বাজার কাঁচাবাদাম ও পুষ্পার দখলে। এ থ্রি-পিসের চাহিদা সবচেয়ে বেশি।

কাপড় ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর আলম বলেন, প্রতি পিস কম দামি কাপড়ে ন্যূনতম ৫০ থেকে ১০০ টাকা বেড়েছে। বেড়েছে থ্রি-পিস ও লুঙ্গির দামও। তাই পাইকারি ক্রেতারা কম কাপড় ক্রয় করছেন।

কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম মির্জা বস্ত্রালয়ের মালিক জসিম মিয়া বলেন, আমি প্রায় ২০ বছর বাবুর হাট থেকে কাপড় থ্রি-পিস লুঙ্গিসহ সব ধরনের কাপড় ক্রয় করি। এখানকার কাপড়ের মান যেমন ভালো তেমনি দামও অন্য হাট থেকে সাশ্রয়ী। তা ছাড়া এখানকার কাপড়ের চাহিদা রয়েছে।

গাজীপুরের রাওনাইন থেকে কাপড় কিনতে এসেছেন নারী উদ্যোক্তা লিমা। তিনি বলেন, নরসিংদীর শেখেরচর বাবুর হাট সবচেয়ে জনপ্রিয়। তার কারণ হলো-এক বাজারে সব কিছু পাওয়া যায়। অর্থাৎ শাড়ি, লুঙ্গি ও থ্রি-পিস, বেডশিট, পর্দা, গামছাসহ সব ধরনের কাপড় এক জায়গাতেই সুলভ মূল্যে পাওয়া যায়। তাই আমাদের কাছে প্রথম পছন্দ বাবুর হাট বাজার।

নরসিংদী চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি আলী হোসেন শিশির (সিআইপি) বলেন, বস্ত্র জগতের প্রধান কেন্দ্র বাবুর হাট।

এখানে নিরাপদ ও নির্বিঘ্নে ব্যবসায়ীরা লেনদেন করতে পারেন। দূর-দূরান্তের ক্রেতারা যাতে আরও স্বস্তিতে কাপড় কিনতে পারেন, সেজন্য পুরো হাটকেই সিসি ক্যামেরার আওতায় আনা হয়েছে। ক্রেতা-বিক্রেতাদের সুবিধার্থে আরও সুযোগ-সুবিধা বাড়ানো হচ্ছে।