মঙ্গলবার, ১৪ জুন, ২০২২ ০০:০০ টা

র‌্যাব পরিচয়ে শিক্ষার্থীকে অপহরণ পাঁচজন গ্রেফতার

নিজস্ব প্রতিবেদক

র‌্যাব পরিচয়ে দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী রানা আহমেদকে (১৯) অপহরণের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনার প্রায় ১২ ঘণ্টা পর অস্ত্র-মাদকসহ সংঘবদ্ধ ওই অপহরণকারী চক্রের পাঁচ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব।

এর আগে শনিবার বিল্লাল হোসেন নামে এক ব্যক্তি র‌্যাব-৪ এ লিখিতভাবে অভিযোগ করে বলেন, র‌্যাব পরিচয়ে কিছু লোক তার ছেলে রানাকে একটি সাদা মাইক্রোবাসে উঠিয়ে নিয়ে গেছে। পরে তার কাছে ১৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেছে।

এ অভিযোগের ভিত্তিতে র‌্যাবের একটি দল রবিবার রাজধানীর পল্লবীতে সাগুপ্তা হাউজিং লিমিটেডে নিঝুম সমিতির প্লটের কাশবনে এবং মানিকগঞ্জের সাটুরিয়াতে অভিযান চালিয়ে অপহৃত রানাকে উদ্ধার করে। এ সময় অপহরণকারী চক্রের আশিকুর রহমান, শাহ মো. দোজাহান, মিঠুন, হাবিবুর রহমান ও শরিফুল ইসলামকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে একটি পিস্তল, একটি গুলি, ৯৮ পিস ইয়াবা, র‌্যাবের জ্যাকেট, সেনা আইডি কার্ড, ভুয়া র‌্যাব আইডি কার্ড, র‌্যাব লোগো সংবলিত স্টিকার, র‌্যাব মনোগ্রামযুক্ত মাস্ক জব্দ করা হয়।

গতকাল র‌্যাব-৪ এর পাঠানো প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, শনিবার সন্ধ্যায় রানা আহমেদ সাটুরিয়ার সাফুল্লী স্কুলমাঠে ফুটবল খেলা শেষে বাড়ি ফেরার উদ্দেশে রওনা হয়। ইনাম ক্লাবের সামনে পৌঁছামাত্র র‌্যাবের জ্যাকেট ও র‌্যাবের লোগো সংবলিত মাস্ক পরিহিত কয়েকজন লোক র‌্যাব পরিচয় দিয়ে পথরোধ করে, মাথায় পিস্তল ঠেকায় এবং পকেটে ইয়াবা ট্যাবলেট ঢুকিয়ে তাকে মাদক কারবারি হিসেবে উঠিয়ে নিয়ে যায়। পরে রাত ১১টায় অপহরণকারী দলের এক সদস্য মোবাইলে ফোন দিয়ে রানার বাবার কাছে ১৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। টাকা না দিলে ছেলেকে প্রাণে মেরে ফেলে তার শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ বিক্রয় করে দেওয়া হবে বলেও হুমকি দেয়। পরে রানার বাবা বারবার অনুরোধ করে শেষ পর্যন্ত ৫ লাখ টাকায় অপহরণকারীদের রাজি করাতে পারেন। মুক্তিপণের ৫ লাখ টাকা নিয়ে অপহরণকারীরা রানার বাবাকে রাজধানীর মিরপুর-১ নম্বরের গোলচত্বর এলাকায় আসতে বলেন। সেখানে অপহরণকারী চক্রের এক সদস্য উপস্থিত হলে র‌্যাব-৪ এর দল তাকে গ্রেফতার করে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদে পল্লবীর মিরপুর সাগুপ্তা হাউজিং লিমিটেড সমিতির প্লট থেকে অপহৃত রানাকে উদ্ধার করা হয় এবং আরও দুজনকে গ্রেফতার করা হয়। পরে অপহরণকারী চক্রের হোতা হাবিবুর রহমান এবং আরেক সহযোগী শরিফুল ইসলামকে মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া থেকে গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতার ব্যক্তিরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে, তারা পরস্পর পূর্ব পরিচিত। অপহরণের শিকার রানার বাবা বিল্লাল এলাকার চাল ব্যবসায়ী। তার পরিবার তুলনামূলকভাবে অর্থশালী হওয়ায় প্রতিবেশী শরিফুল ইসলাম ও হাবিবুর রহমানের পরিকল্পনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে বাকি অপহরণকারীরা পরিকল্পিতভাবে তার ছেলেকে অপহরণ করে।

 

 

সর্বশেষ খবর