শুক্রবার, ২ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

তিনটি উদ্যোগ যুগপৎভাবে চলতে হবে

ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক

তিনটি উদ্যোগ যুগপৎভাবে চলতে হবে

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেছেন, দুর্নীতি দমনে তিনটি উদ্যোগ যুগপৎভাবে চলতে হবে। এক. সৎ শিক্ষকের মাধ্যমে সুশিক্ষা নিশ্চিত করা, দুই. সেবা খাতের নেতৃত্বে সৎ মানুষ বসানো, তিন. দুর্নীতিগ্রস্তদের অতি দ্রুত বিচার করে শাস্তির মুখোমুখি করা। আর ভালো শিক্ষা দিতে ভালো শিক্ষক দরকার। সঠিক মানুষকে শিক্ষকতায় নিয়ে আসতে শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়াও তাই সততার সঙ্গে হতে হবে। সেবা খাতে দুর্নীতি বন্ধের বিষয়ে গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। ড. সিদ্দিক বলেন, সেবা একটা ধর্ম। আমরা আমাদের শিক্ষাক্রমে ধর্মশিক্ষা দিই, কিন্তু ধর্মশিক্ষার পাশাপাশি মানুষের সেবা করাও যে একটা মানবিক ধর্ম, সেই বিষয়টা গুরুত্ব দিয়ে ছেলেমেয়েদের পড়াই না। সেটা করতে পারলে একটা প্রভাব পড়ত। বঙ্গবন্ধু যে শিক্ষানীতি প্রণয়ন করতে চেয়েছিলেন, সেখানে মানবিক শিক্ষার গুরুত্ব সবচেয়ে বেশি ছিল। এখন আমরা ছেলেমেয়েদের ভালো ফলাফল, জিপিএ-৫ পাওয়ার জন্য চেষ্টা করছি। কিন্তু তার মানবিক শিক্ষা কতটুকু হচ্ছে সেটা দেখছি না। দ্বিতীয়ত, যারা সেবা খাতে নেতৃত্ব দিচ্ছে, তাদের সৎ হতে হবে। শীর্ষ পর্যায় সৎ না হলে নিম্ন পর্যায়ে দুর্নীতি বন্ধ হবে না। তৃতীয়ত, যারাই সেবা দিতে গিয়ে দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত হবে, তাদের অতি দ্রুত বিচার করে শাস্তির মুখোমুখি করতে হবে। তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনলে অন্যরা দুর্নীতি থেকে দূরে থাকবে। এই ত্রিমুখী কার্যক্রম যুগপৎভাবে চলতে হবে। একটি বাদ দিয়ে অন্যটি হবে না। তিনি বলেন, দুর্নীতি কমানোর জন্য শিক্ষা একটি যন্ত্র। শিক্ষাটাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব না দেওয়া পর্যন্ত দুর্নীতি বন্ধে কাক্সিক্ষত ফলাফল পাব না। সেবা খাতে যারা দুর্নীতি করছে, তারা তো শিক্ষিত। তারা অন্য গ্রহ থেকে আসেনি। তাহলে সেই সুশিক্ষাটা আমরা দিতে পারছি না কেন? সেই জন্য এ ধরনের শিক্ষক লাগবে। বই-পুস্তকে ভালো ভালো কথা লেখা থাকে। সেগুলো পড়ে বড় হয়ে দুর্নীতি করে। প্রকৃত শিক্ষাটা কঠিন। সেই শিক্ষাটা যে দেবে সেই শিক্ষক নিজে সৎ কি না, সততার সঙ্গে শিক্ষাটা দিচ্ছে কি না, নাকি ঘড়ি দেখে মুখস্থ পড়িয়েই চলে যাচ্ছেন সেটা বড় ব্যাপার। ঘড়ি ধরে পড়াবে আর ভালো ভালো কথা বলে চলে যাবে, শিক্ষার্থীরা মুখস্থ করে পরীক্ষা দেবে, তাতে মানবিক শিক্ষা হবে না। সে সৎ হবে কি না সেটা নির্ভর করবে তার শিক্ষক তাকে কীভাবে আচরণ শিখিয়েছেন তার ওপর। শিক্ষক সৎ না হলে ছাত্রও সৎ হবে না।

 

সর্বশেষ খবর