বুধবার, ৭ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা
সারা দেশে খুনোখুনি

গাইবান্ধায় প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে বাবাকে খুন

গাইবান্ধা প্রতিনিধি

গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলার বৈষ্ণবদাশ গ্রামে জমি নিয়ে বিরোধে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে নিজের বাবা সেকেন্দার আলী বাদশাকে খুন করেছে ছেলে জাহিদুল ইসলাম। চার বছর আগে ঘটে যাওয়া এ ঘটনার রহস্য উন্মোচন করেছে গাইবান্ধা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। গতকাল এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য তুলে ধরেন গাইবান্ধা পিবিআই পুলিশ সুপার এ আর এম আলিফ।

পুলিশ সুপার বলেন, বৈষ্ণবদাশ গ্রামের জাহিদুল ইসলাম সাদুল্লাপুর থানায় বাদী হয়ে ২০১৮ সালের ২০ জুন  একটি মামলা দায়ের করেন। সে মামলায় তার দাবি ছিল জমি নিয়ে বিরোধের জেরে তার বাবা সেকেন্দার আলী বাদশাকে হত্যা করে প্রতিপক্ষ একই গ্রামের আইয়ুব আলী, রানু মিয়া, ইউনুস আলী ও রফিকুল। মামলায় জাহিদুল ইসলাম দাবি করেছিলেন ২০১৮ সালের ৪ মে সকালে আইয়ুব আলীর বাড়ির পাশে জমির ধান দেখতে গিয়ে নিরুদ্দেশ হন তার বাবা সেকেন্দার আলী বাদশা। বিকালে জাহিদুলের প্রতিবেশী মামা জামাত আলী একটি বাঁশ ঝাড়ে সেকেন্দার আলীকে উপুড় হয়ে পড়ে থাকতে দেখেন। পরে  সেকেন্দার আলীর বাড়িতে খবর দিলে তাকে উদ্ধার করে রংপুরে উন্নত চিকিৎসার জন্য পাঠানোর প্রস্তুতি নেওয়ার সময় তার মৃত্যু হয়।

এদিকে ২০২২ সালের ৯ জুন পিবিআই আদালতের নির্দেশে মামলাটির তদন্তভার গ্রহণ করে। তদন্তে নেমে পিবিআই জামাত আলীকে গ্রেফতার করে। জামাত আলী আদালতে সেকেন্দার আলীকে হত্যার বিষয়টি স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী দেন। পিবিআই তদন্তে জানতে পারে জমি নিয়ে বিরোধে প্রতিপক্ষ আইয়ুব আলীদের ফাঁসিয়ে দিতে সেকেন্দার আলীকে হত্যার পরিকল্পনা করে নিহতের ছেলে জাহিদুল ইসলাম, জামাত আলী, আব্দুল মোন্নাফ ও আব্দুল আজিজ। ২০১৮ সালের ৩ মে রাত ১০টার দিকে সেকেন্দার আলী নিজেদের পুকুর পাড়ে একা বসেছিলেন। সে সময় আসামী মোন্নাফ মোটা গেঞ্জি দিয়ে সেকেন্দারের গলা পেঁচিয়ে ধরে মুখ চেপে ধরে অন্য আসামি আব্দুল আজিজ সেকেন্দারকে জড়িয়ে ধরে। পরে জাহিদুল ও জামাত আলীসহ চারজন মিলে পাঁজাকোলা করে সেকেন্দারকে ৫০০ গজ দূরে একটি বাঁশঝাড়ে নিয়ে যায়। সেখানে ৫/৬ মিনিট নাক-মুখ চেপে ধরে রাখলে সেকেন্দারের নড়াচড়া বন্ধ হয়ে যায়। এতে তার মৃত্যু হয়েছে ভেবে তারা বাঁশঝাড়ের একটি নালার কাছে সেকেন্দারকে ফেলে রেখে চলে যায়। পরদিন আসামি জামাত আলী বিকাল সাড়ে চারটার দিকে সেকেন্দারের অবস্থা দেখতে ঘটনাস্থলে যান। সে সময় লিমন মিয়া (১৮) নামের এক ছেলে দেখতে পান জামাত আলী নিজে সেকেন্দারকে টানা হেঁচড়া করছেন। তখন জামাত আলী ঘটনাটি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করেন। সাক্ষী হিসাবে লিমন মিয়া বিষয়টি আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দীতে উল্লেখ করেছেন। এ ঘটনায় আসামি জামাত আলী, নিহতের ছেলে জাহিদুল ইসলাম, আব্দুল মোন্নাফ ও আব্দুল আজিজকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে বলে জানান পুলিশ সুপার।

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর