শুক্রবার, ২১ অক্টোবর, ২০২২ ০০:০০ টা
রামেকে ভাঙচুরে মামলা

আলটিমেটাম দিয়ে কাজে ফিরলেন ইন্টার্নরা

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী কে জি এম শাহরিয়ারের মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ভাঙচুরের প্রতিবাদে ডাকা কর্মবিরতি আলটিমেটাম দিয়ে স্থগিত করেছেন ইন্টার্ন চিকিৎসকরা। বিকাল থেকেই ওয়ার্ডগুলোতে কাজে ফেরেন ইন্টার্নরা। তবে আজ সকাল থেকে তারা পুরোদমে কাজে ফিরবেন বলে জানানো হয়। গতকাল বিকাল সাড়ে ৪টায় হাসপাতাল প্রশাসনের সঙ্গে এক সভা শেষে এ তথ্য নিশ্চিত করেন রামেক হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদের সভাপতি ইমরান হোসেন। এদিকে বুধবার রাতে হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ড ও প্রশাসনিক ভবনে ভাঙচুর, কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে অজ্ঞাতদের আসামি করে নগরীর রাজপাড়া থানায় মামলা করেছেন হাসপাতালের প্রশাসনিক কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন। সভা শেষে ইন্টার্ন চিকিৎসক ইমরান হোসেন বলেন, রোগীদের চিকিৎসার বিষয় মাথায় রেখে তারা কর্মবিরতি স্থগিত করেছেন। গতকাল থেকে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা কাজে ফিরেছেন। তবে পুরো হাসপাতালে আজ শুক্রবার সকাল থেকে তারা কাজে ফিরবেন। ইমরান হোসেন বলেন, হাসপাতালে হামলার ঘটনায় অভিযুক্ত ব্যক্তিদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আইনের আওতায় আনার কথা তারা বলেছেন। এ ছাড়া হাসপাতালে চিকিৎসকসহ সবার সার্বিক নিরাপত্তার কথা বলা হয়েছে। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ফলপ্রসূ কিছু না হলে তারা আগামীকাল শনিবার থেকে মানববন্ধনের মতো কর্মসূচি পালন করবেন। সেখান থেকে পরবর্তী কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী বলেন, সভায় ইন্টার্ন চিকিৎসকরা বেশ কিছু দাবি জানিয়েছেন। ইন্টার্ন চিকিৎসকরা তাদের কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তা চান। এ ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের আইনের আওতায় দেখতে চান। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাদের আশ্বস্ত করেছে। পরে আশ্বাস পেয়ে তারা কাজে ফেরার ঘোষণা দেন। বিকাল থেকে চিকিৎসকদের একাংশ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে কাজে ফিরেছেন। হাসপাতালের পরিস্থিতি এখন ভালো। বুধবার রাত ৮টার দিকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী কে জি এম শাহরিয়ার হলের তৃতীয় তলার বারান্দা থেকে পড়ে যান। দ্রুত তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে জরুরি বিভাগে তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় চিকিৎসায় অবহেলার অভিযোগ তুলে হাসপাতালে ভাঙচুর চালান রাবির শিক্ষার্থীরা। বিভিন্ন ওয়ার্ড ও প্রশাসনিক ভবনে তান্ডবের ঘটনার প্রতিবাদে রাত ১২টার দিকে অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্মঘটের ডাক দেন ইন্টার্ন চিকিৎসকরা। সবাই একযোগে হাসপাতাল ত্যাগ করেন। তবে শিক্ষার্থীদের অভিযোগ ছিল, সহপাঠী চিকিৎসার অবহেলায় মারা যাওয়ায় তারা উত্তেজিত হয়ে পড়েন। ওই সময় ইন্টার্ন চিকিৎসক ও আনসার সদস্যরা তাদের মারধর করেন। এক পর্যায়ে তারা হাসপাতালের গাছের টব ভাঙেন। এ ঘটনায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, পুলিশ কর্মকর্তাদের নিয়ে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি এবং হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পাঁচ সদস্যের আরও একটি তদন্ত কমিটি করেছে। তাদের তিন কার্যদিবসের মধ্যে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের মামলা প্রসঙ্গে রাবি উপ-উপাচার্য অধ্যাপক সুলতান-উল ইসলাম জানান, যেহেতু ঘটনাটি তদন্তে কমিটি হয়েছে। তদন্ত রিপোর্ট পাওয়ার পর এ নিয়ে মন্তব্য করবেন। তবে বারবার কেন হাসপাতালে এমন ঘটনা ঘটছে, সেটি যাতে তদন্ত রিপোর্টে বের হয়ে আসে এমন প্রত্যাশা রাখেন তিনি।

সর্বশেষ খবর