শনিবার, ৫ নভেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

১০ লাখ টাকার বাঁশের সাঁকো

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি

১০ লাখ টাকার বাঁশের সাঁকো

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার অরুয়াইল ইউনিয়নে চিত্রা নদীর ওপর প্রায় ৭০০ ফুট দীর্ঘ নান্দনিক বাঁশের সাঁকো নির্মাণ করতে খরচ হচ্ছে প্রায় ১০ লাখ টাকা। এ কাজে প্রতিদিন ২০ জন শ্রমিককে এক মাস করে কাজ করতে হচ্ছে। প্রায় ১ হাজার বাঁশের খুঁটির ওপর এটি নির্মাণ হচ্ছে।

পাঁচ দশক ধরে এই নদীর ওপর একটি পাকা সেতুর দাবি জানিয়ে আসছিলেন এলাকাবাসী। কিন্তু এর জন্য জনপ্রতিনিধিরা সরকারের বিভিন্ন দফতরে যোগাযোগ করলেও কোনো কাজ হয়নি। তাই এলাকাবাসী নিজেরাই উদ্যোগ নেন বাঁশের সাঁকোটি  নির্মাণের। এরপর থেকে এলাকাবাসীর নিয়োগকৃত রাণীদিয়া গ্রামের ১৬ জন উদ্যোক্তা নিজ খরচে এই সাঁকোটি নির্মাণ করছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সাঁকোটি ব্যবহার করা হয় প্রতি বছর নভেম্বর  থেকে এপ্রিল পর্যন্ত। বাকি মাসগুলো নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় খুলে ফেলা হয়। বর্তমানে নদীর পানি কমছে। তাই সাঁকোটির নির্মাণ কাজ আবার শুরু হয়েছে। ২০ জন শ্রমিকের রাত-দিন পরিশ্রমে আগামী এক মাসের মধ্যে সম্পন্ন হবে নির্মাণ কাজ। সাঁকোটি পারাপারের ভাড়া মাত্র দুই টাকা। তবে আসার সময় নয়, বাড়িতে ফেরার পথে যাত্রীদের ওই দুই টাকা পরিশোধ করতে হয়। নামমাত্র ভাড়ায় সাঁকোটি দিয়ে পারাপার করেন এলাকাবাসী। তবে রাত ১০টার পর ভোর ৬টা পর্যন্ত পার হতে কাউকে কোনো ভাড়া গুনতে হয় না। এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, সাঁকোটি ব্যবহার করেন অরুয়াইল ইউনিয়নের অরুয়াইল, রাণীদিয়া, কাকরিয়া, চর-কাকরিয়া, রাজাপুর, বুনিয়ারটেক, ধামাউড়া, দুবাজাইল, সিঙ্গাপুর এবং পাকশিমুল ইউনিয়নের পাকশিমুল, ফতেহপুর, পরমান্দপুর, হরিপুর, ষাটবাড়িয়া এবং বড়ইছাড়াসহ অন্তত ২০ গ্রামের মানুষ। এ ছাড়া অরুয়াইল ও পাকশিমুল ইউনিয়নের পার্শ্ববর্তী কিশোরগঞ্জ জেলার ভৈরব ও বাজিতপুর উপজেলার কয়েকটি গ্রামের মানুষও ব্যবহার করেন এ সাঁকো। এসব গ্রামে লাখের বেশি মানুষের বসবাস। এসব গ্রামের মানুষের অর্থনীতির প্রধান কেন্দ্র অরুয়াইল বাজার। সেখানে রয়েছে সহস্রাধিক দোকানপাট।

অরুয়াইল বাজার ও আশপাশেই রয়েছে কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।

সাঁকো তৈরির ১৬ জন উদ্যোক্তার একজন রাণীদিয়া গ্রামের নুর ইসলাম। তিনি বলেন, এলাকাবাসী আমাদেরকে দায়িত্ব দিয়েছেন সাঁকোটি তৈরি করতে। অরুয়াইল ইউপির চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া বলেন, স্বাধীনতার পর থেকে এলাকাবাসী এখানে সেতুর দাবি করে আসছেন। কিন্তু এখনো সেতু হয়নি। আমি চেয়ারম্যান হওয়ার পর থেকেই চিত্রা নদীর ওপর পাকা সেতু করার লক্ষ্যে সরকারের বিভিন্ন দফতরে গিয়েছি। কিন্তু কোনো কাজ হয়নি। সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা বলেন, ওই এলাকার মানুষের দুর্ভোগ লাগবে পাকা সেতু নির্মাণের জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছি। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের উপজেলা উপ-সহকারী প্রকৌশলী আবদুুর রহিম মিয়া বলেন, চিত্রা নদীর ওপর সেতু নির্মাণের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ঢাকার সংশ্লিষ্ট দফতরে পাঠানো হয়েছে।

সর্বশেষ খবর