আর মাত্র কয়েকদিন বাকি। ভাষার মাস সন্নিকটে। একুশের শাণিত চেতনায় ঋদ্ধ অমর একুশে গ্রন্থমেলাকে নিয়ে নতুনরূপে সাজছে স্বাধীনতার স্মৃতিবিজড়িত সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণ। করোনা মহামারির দাপটে গত দুই বছর মেলা সঠিক সময়ে প্রথা অনুযায়ী শুরু না হলেও এবার ভাষার মাসের প্রথম দিন শুরু হচ্ছে বইমেলা। আর ওইদিন বিকাল ৩টায় সশরীরে উপস্থিত থেকে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে মেলার উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিকাল ৫টায় জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করা হবে মেলার দ্বার।
মেলাকে সুষ্ঠুভাবে আয়োজনের লক্ষ্যে এরই মধ্যে ৩১ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠন করেছে বাংলা একাডেমি। কর্তৃপক্ষ জানায়, এবার ৬০৯ প্রতিষ্ঠানকে ৮৫৮ ইউনিট বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে। নতুন ১২টি প্রকাশনীসহ মেলা পরিচালনা কমিটি এরই মধ্যে স্টল বরাদ্দ দিয়েছে। এবার প্যাভিলিয়ন থাকছে ৩৪টি। বরাবরের মতো এবারও বেশি স্টল ও প্যাভিলিয়ন থাকছে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে। ৪৭২টি প্রতিষ্ঠানের ৭১১টি ইউনিট থাকছে উদ্যানে। এর মধ্যে সাধারণ ক্যাটাগরিতে ৪০১টি প্রতিষ্ঠানকে ৬০৩ ইউনিট এবং শিশু চত্বরে ৭১টি প্রতিষ্ঠানকে ১০৮ ইউনিট দেওয়া হয়েছে। আর বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে ১০৩টি প্রতিষ্ঠান পেয়েছে ১৪৭টি ইউনিট। শনিবার মেলার কাজের অগ্রগতি পরিদর্শন করে সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ গণমাধ্যমকে বলেন, নীতিমালা অনুযায়ী মেলা পরিচালনা করা হবে। তা সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণে এবং নিয়ম ভাঙলে সাত সদস্যের টাস্কফোর্স কাজ করবে। তিনি আরও বলেন, বইমেলা মুক্তচিন্তার জায়গা। এখানে সবাই বিভিন্ন মতাদর্শ নিয়ে বই লিখবেন, সেই বই প্রকাশ হবে। কিন্তু কাউকে কটাক্ষ করা, হিংসা বিদ্বেষ ছড়ানোর মতো কাজ হলে মেলা পরিচালনা কমিটি নীতিমালা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবেন।
বরাবরের মতো এবারও বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে পুরস্কার প্রদান করবে মেলার আয়োজক বাংলা একাডেমি। ২০২২ সালে প্রকাশিত বিষয় ও গুণগত মানসম্মত সর্বাধিক সংখ্যক গ্রন্থের মধ্য থেকে দেওয়া হবে ‘চিত্তরঞ্জন সাহা স্মৃতি পুরস্কার’ এবং প্রকাশিত গ্রন্থের মধ্য থেকে শৈল্পিক বিচারে সেরা গ্রন্থের জন্য দেওয়া হবে ‘মুনীর চৌধুরী স্মৃতি পুরস্কার’।
২০২২ সালে প্রকাশিত শিশুতোষ গ্রন্থের মধ্য থেকে গুণগতমান বিচারে সর্বাধিক গ্রন্থের জন্য সংশ্লিষ্ট প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানকে ‘রোকনুজ্জামান খান দাদাভাই স্মৃতি পুরস্কার’ দেওয়া হবে। এ ছাড়া এ বছর অংশগ্রহণকারী প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানের মধ্য থেকে স্টলের নান্দনিক অঙ্গসজ্জায় সর্বশ্রেষ্ঠ বিবেচিত প্রতিষ্ঠানকে ‘শিল্পী কাইয়ুম চৌধুরী স্মৃতি পুরস্কার’ দেওয়া হবে।