বুধবার, ১৫ মার্চ, ২০২৩ ০০:০০ টা

কেরোসিন ঢেলে পুড়িয়ে হত্যা

নওগাঁ প্রতিনিধি

নওগাঁয় পরকীয়া সম্পর্কের জেরে বুলবুল আহমেদ নামে এক যুবককে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় হাবিব নামে একজনকে আটক করেছে পুলিশ। সোমবার রাত ৮টার দিকে শহরের চকমুক্তার মণ্ডলপাড়া মহল্লায় এ ঘটনা ঘটে। গতকাল দুপুরে বুলবুল মারা যায়। বুলবুল নীলফামারীর উত্তর দুরাকুটি গ্রামের বাহান উদ্দিনের ছেলে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নওগাঁ শহরের চকমুক্তার মণ্ডলপাড়া মহল্লায় গত এক বছর থেকে কাজী আবদুস সামাদের বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করে আসছিল হাবিব ও তার স্ত্রী মোসলেমা। তাদের দাম্পত্য জীবনে প্রায় ২০ বছরের সংসারে দুই সন্তান রয়েছে। হাবিবের গ্রামের বাড়ি নীলফামারী জেলার উত্তর দুরাকুটি গ্রামে। তার স্ত্রী মোসলেমার বাবার বাড়ি নওগাঁ শহরের মাস্টারপাড়া মহল্লায়। নিহত বুলবুল ও হাবিব সম্পর্কে চাচাতো ভাই। সোমবার রাত ৮টার দিকে কাজী আবদুস সামাদের বাসার পেছনে হাবিব ও মোসলেমার সঙ্গে বুলবুলের তর্কবিতর্ক হচ্ছিল। এক সময় গায়ে আগুন নিয়ে চিৎকার দিয়ে জীবন বাঁচাতে দৌড়ে পাশের ডোবা ভেবে কচুরিপানায় ঝাঁপ দেন বুলবুল। তবে সেখানে পানি ছিল না। পরে স্থানীয়রা বস্তা ও পাশে পড়ে থাকা ইটের গুঁড়ি দিয়ে আগুন নেভায়। তাকে উদ্ধার করে রাত ৯টার দিকে নওগাঁ সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে তার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় রাতেই বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। পরে মঙ্গলবার দুপুরে সেখান থেকে রেফার্ড করে ঢাকায় নেওয়ার পথে মারা যান বুলবুল। বুলবুলকে এর আগে শহরের বাসিন্দারা কখনো দেখেনি। সন্ধ্যায় ওই মহল্লার রাস্তা ও গলিতে একটি প্রেমের ঘটনা কাগজে লিখা অবস্থায় মোসলেমা ও বুলবুলের ছবিসহ পড়ে থাকতে দেখা যায়। এতে বোঝা যায় তাদের দুজনের মধ্যে পরকীয়ার সম্পর্ক ছিল।

কাজী আবদুস সামাদের স্ত্রী শাহারা বেগম বলেন, গত এক বছর ধরে মোসলেমা ও হাবিব আমাদের বাসায় ভাড়া আছে। রাত ৮টার দিকে গায়ে আগুন নিয়ে দৌড়ে দোকানের সামনে দিয়ে একজন কচুরিপানার মধ্যে লাফ দেয়। পরে কয়েকজন আগুন নিভিয়ে আহত ছেলেকে হাসপাতালে নেয়। স্থানীয়রা বলেন, ভালোবাসার গল্প একটি কাগজে লেখা ছিল। এ ছাড়া নিকাহনামা ফটোকপি কাগজের সঙ্গে মোসলেমা ও বুলবুলের ছবি লাগানো ছিল। এতে বোঝা যাচ্ছে স্বামী সংসার থাকার পরও দুজনের মাঝে পরকীয়ার সম্পর্ক ছিল। এ বিষয়ে গতকাল সন্ধ্যায় নওগাঁ সদর থানার ওসি (তদন্ত) আবদুল গফুরের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, কেরোসিন ঢেলে গায়ে আগুন লাগানোর ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে। তর্কবিতর্কের একপর্যায়ে বুলবুলের গায়ে কেরোসিন দিয়ে তারা আগুন লাগিয়ে দেয়। সে জীবন বাঁচাতে দৌড় দেয়। স্থানীয়রা তাকে আহতাবস্থায় নওগাঁ হাসপাতালে নেয়। সেখান থেকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করে। পরে তাকে ঢাকায় রেফার্ড করা হলে যাওয়ার পথে মারা যায়। নিহত বুলবুল ও হাবিব সম্পর্কে চাচাতো ভাই। ঘটনার পর হাবিবকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় কোনো অভিযোগ হয়নি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 

সর্বশেষ খবর