সোমবার, ৫ জুন, ২০২৩ ০০:০০ টা

প্রস্তুত ফরিদপুরের ডন

কামরুজ্জামান সোহেল, ফরিদপুর

প্রস্তুত ফরিদপুরের ডন

প্রস্তুত ‘ফরিদপুরের ডন’। এটি কোনো সিনেমা কিংবা গল্পের কথা নয়। এটি কোরবানির ঈদের জন্য প্রস্তুত করা পশুর নাম। আসছে কোরবানির ঈদে পশুর হাট মাতাতে বিশালকায় এ গরুটি নিয়ে এরই মধ্যে শুরু হয়েছে মাতামাতি। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে গরু ব্যবসায়ীরা অনলাইনের মাধ্যমে দরদাম করছেন। তবে গরুর মালিক এখনই ফরিদপুরের ডনকে ছাড়ছেন না। আশায় আছেন দাম ভালো পেলেই তিনি ডনকে তুলে দেবেন ক্রেতার হাতে।

কোরবানির ঈদ এলেই দেখা মেলে বাহারি নাম ও বিশাল আকৃতির গরুর। এবারও এর ব্যত্যয় ঘটেনি। সারা দেশের বিভিন্ন স্থানে গরু মোটাতাজাকরণের পর হাটে নেওয়া হয়। বড় গরুকে নিয়ে চলে প্রতিযোগিতা- কার গরু সবচে বড়, কার গরু দেখতে সুন্দর। এ বছর সে প্রতিযোগিতায় নাম লেখাতে চায় নাম্বার ওয়ান ‘ফরিদপুরের ডন’ নামের এ গরুটি। বেশ যত্ন করে গড়ে তোলা বিশাল আকৃতির গরুটিকে দেখতে প্রতিদিনই ভিড় জমাচ্ছেন স্থানীয়রা। দুই বছর আগে ফ্রিজিয়ান জাতের এ গরুটি ৩ লাখ ৬০ হাজার টাকা দিয়ে কিনে আনেন ফরিদপুরের সালথা উপজেলার মাঝারদিয়া ইউনিয়নের হরেরকান্দি গ্রামের রুবায়েত হোসেন। তিনি গরুটিকে একটি ঘরের মধ্যে রেখেই লালন-পালন করেছেন। দুই বছরের মধ্যে এক দিনের জন্যও গরুটিকে ঘরের বাইরে আনেননি। অর্থাৎ দুই বছর ধরে একটি ঘরের মধ্যেই ডনকে কোরবানির হাটে তোলার জন্য প্রস্তুত করা হয়। এক সপ্তাহ আগে ঘর ভেঙে ডনকে বাইরে আনা হয়। তখন ডনকে দেখতে হাজারো মানুষ ভিড় জমান রুবায়েতের বাড়িতে। তাদের অনেকেরই দাবি, ফরিদপুর জেলার মধ্যে সবচে বড় গরু এটি। গরুটির মালিক রুবায়েতের দাবি, সম্পূর্ণ দেশীয় খাবার দিয়ে প্রস্তুত করা হয়েছে ডনকে। তিনি জানান, নিজে ঘাস চাষ করে গরুকে খাইয়েছেন। তাছাড়া ছোলা, ভূষি এমনকি প্রতিদিন কমলা, মাল্টা, আঙ্গুর ও কলা খেতে দিয়েছেন ডনকে। ফেসবুকের মাধ্যমে ‘ফরিদপুরের ডন’-এর খবর ছড়িয়ে পড়লে অনেক ক্রেতা অনলাইনের মাধ্যমে দরদাম করছেন বলে জানান রুবায়েত। তিনি ২৫ লাখ টাকা হলে ‘ডন’কে বিক্রি করবেন বলে জানান। তবে তার ইচ্ছে কোরবানির হাটে নিয়েই গরুটিকে বিক্রি করবেন।

 খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ফরিদপুর জেলার মধ্যে সবচে বড় গরু হচ্ছে ‘ডন’। উচ্চতা ৬ ফুট ৪ ইঞ্চি এবং লম্বায় ১২ ফিটের বেশি। প্রায় ১৬০০ কেজি ওজনের এ গরুটি দেখতে দূর-দূরান্ত থেকে ভিড় করছেন মানুষ। তাদের মাঝে গরুটির দাম নিয়ে চলছে নানা আলোচনা। স্থানীয়রা বলছেন, গো-খাদ্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে অনেকেই গরু-ছাগল পালন বন্ধ করে দিয়েছেন। কেউবা গরু মোটাতাজাকরণের জন্য ইনজেকশন দেন কিংবা ওষুধ খাওয়ান। কিন্তু রুবায়েত বিশাল আকারের গরুটিকে কোনো প্রকার ওষুধ প্রয়োগ না করেই তৈরি করেছেন। তিনি ভালো দাম পেলে আরও অনেকেই কোরবানির গরু পালনে আগ্রহী হয়ে উঠবেন। জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা এ কে এম আসজাদ জানান, ফ্রিজিয়ান জাতের গরু পালনে অনেকেই আগ্রহী হন না। তবে, রুবায়েত সফল হয়েছেন। গরুটির বিষয়ে আমরা খোঁজখবর নিয়েছি এবং গরুটিকে যাতে কোনো প্রকার ওষুধ প্রয়োগ না করা হয় সে জন্য আমরা মনিটরিং করেছি। গরুটি পালনে আমরা তাকে নানা পরামর্শ দিয়েছি।

সর্বশেষ খবর