রাজশাহী ও নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে অপহরণ করে দুই শিশুকে ধর্ষণ শেষে একজনকে গলা টিপে হত্যা করল দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় চারজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী ও সিদ্ধিরগঞ্জ প্রতিনিধির পাঠানো তথ্য-
রাজশাহী : রাজশাহীতে পুকুর থেকে অপহৃত শিশু আনিকার লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল ভোরে নগরীর ছোটবনগ্রাম খোরশেদের মোড়ের একটি পুকুর থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। ভিকটিম আনিকা (৮) নগরীর নওদাপাড়ার আজিম উদ্দিনের মেয়ে। ঈদের সালামি দেওয়ার কথা বলে ওই শিশুকে নির্জন স্থানে নিয়ে ধর্ষণের পর হত্যা করে বলে পুলিশ জানিয়েছে। এর আগে ভোর সাড়ে ৪টার দিকে অভিযুক্ত নগরীর বড়বনগ্রাম ভাড়ালিপাড়া মহল্লার মো. পলাশ (২৫)-কে নাটোর থেকে আটক করে পুলিশ। পরে তার দেখানো স্থান থেকেই লাশ উদ্ধার হয়। রাজশাহী নগর পুলিশের উপপুলিশ কমিশনার নুর আলম সিদ্দিকী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, শনিবার সন্ধ্যায় ঈদ সালামি দেওয়ার কথা বলে আনিকাকে ফুসলিয়ে নির্জন স্থানে নিয়ে যায় পলাশ। এরপর ধর্ষণের পর তাকে গলা টিপে হত্যা করে। পরে সুযোগ বুঝে লাশ পুকুরে ফেলে নাটোর পালিয়ে যায়। এদিকে আনিকার খোঁজ না পেয়ে স্বজনরা খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। এলাকার একটি ক্লোজ সার্কিট (সিসি) ক্যামেরার ফুটেজে স্বজনরা দেখতে পান, পলাশ ওই শিশুকে ডেকে নিয়ে যাচ্ছে।
উপপুলিশ কমিশনার নুর আলম সিদ্দিকী বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পলাশ ওই শিশুকে ধর্ষণের পর হত্যার বিষয়টি স্বীকার করেছে। সে ওই শিশুর কানের দুল খুলে নিয়ে এক দোকানে বিক্রি করেছিল। সেটিও পুলিশ উদ্ধার করেছে। শিশুর লাশ ময়নাতদন্ত শেষে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।নারায়ণগঞ্জ : জেলার সিদ্ধিরগঞ্জে ১০ ও ১২ বছরের দুই শিশুকে অপহরণের পর এক শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় পুলিশ মো. রাসেল (৩৩), মো. আল আমিন (৩২) ও মো. মামুন (৩৯) নামে তিনজনকে গ্রেফতার করেছে। শনিবার রাতের এ ঘটনায় গতকাল দুপুরে গ্রেফতারদের নারায়ণগঞ্জ আদালতে পাঠানো হয়েছে। বিকালে এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম মোস্তফা।
পুলিশ ও মামলা সূত্রে জানা যায়, মামলার বাদীর মেয়ে (১০) ও তার ভায়রার মেয়ে (১২) গত ১ জুলাই বিকালে ঢাকার শান্তিনগরের বাসা থেকে সিদ্ধিরগঞ্জের কদমতলী কলেজপাড়ায় তার ভায়রার বাসায় যাওয়ার উদ্দেশে রওনা হয়। সন্ধ্যার পর শিমরাইল এলাকায় বাস থেকে নামার পর তারা কোথায় যাবে অভিযুক্তরা জিজ্ঞেস করে। তারা সরল বিশ্বাসে অভিযুক্তদের কাছে ঠিকানা জানালে সেখানে পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে সিদ্ধিরগঞ্জের শাহজাহানের ভাড়া বাসায় নিয়ে যায়। পরে তাদের আটকে রেখে পরিবারের কাছে ৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। মুক্তিপণের টাকা না দিলে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। বিষয়টি পুলিশকে জানালে তারা অভিযান চালিয়ে ভিকটিমদের উদ্ধার করে। উদ্ধারের পর বাদীর ভায়রা মেয়ে জানায় গ্রেফতার মো. রাসেল তাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করেছে। সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি গোলাম মোস্তফা জানান, অভিযুক্ত তিনজনকে গ্রেফতার করে নারায়ণগঞ্জ আদালতে পাঠানো হয়েছে।
