শান্তি সমাবেশ শেষে রাজধানীর গুলিস্তানে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ধারালো অস্ত্রের আঘাতে এক যুবক নিহত হয়েছেন। অন্যদিকে বিএনপির মহাসমাবেশে স্ট্রোক করে মৃত্যুবরণ করেছেন নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মাহমুদ হোসেন। গতকাল সন্ধ্যা ৬টায় শান্তি সমাবেশ শেষে রাজধানীর গুলিস্তানে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ধারালো অস্ত্রের আঘাতে এক যুবক নিহত হয়েছেন। তাৎক্ষণিকভাবে তার নাম-পরিচয় জানা যায়নি। তার বয়স আনুমানিক ২৫। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন যুবলীগ কর্মীসহ অন্তত চারজন। তাদের আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। গুলিস্তানে গোলাপ শাহ মাজারের পশ্চিম পাশের সড়কে এ ঘটনা ঘটে। আহতরা হলেন- ঢাকার কেরানীগঞ্জ মডেল থানার যুবলীগের কর্মী নোমান হোসেন রনি (৩২), দিনমজুর মোবাশ্বের (২৩), রাজমিস্ত্রি আরিফুল ইসলাম (১৮) ও স্কুলশিক্ষার্থী জুবায়ের হোসেন (১৬)। ঢামেক সূত্র জানায়, আহতরা দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি শাহিন মিয়ার সমর্থক। নেতা-কর্মী নিয়ে বায়তুল মোকাররম মসজিদ এলাকায় আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশে এসেছিলেন তারা। সমাবেশ শেষ করে সেখান থেকে কেরানীগঞ্জের উদ্দেশে রওনা হন। গুলিস্তানে গোলাপ শাহ মাজারের পশ্চিম পাশে এলে পেছন থেকে আওয়ামী লীগ নেতা কামরুল ইসলামের কর্মী-সমর্থকরা তাদের ধাওয়া করেন। এক পর্যায়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে আহত করে। পরবর্তী সময়ে আহত অবস্থায় তাদের হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসা হয়। এর আগে সমাবেশ চলাকালে উভয়পক্ষে ধাক্কাধাক্কির ঘটনা ঘটে। ঢামেক পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ বাচ্চু মিয়া জানান, মারা যাওয়া যুবকের বাম পায়ে ধারালো অস্ত্রের আঘাত রয়েছে। বাকি চারজনের অবস্থাও গুরুতর। তাদের জরুরি বিভাগে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তবে যতটুকু জানা গেছে, আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে এসব ঘটেছে।
এদিকে পল্টন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সালাউদ্দিন মিয়া জানান, গোলাপ শাহ মাজারের পাশে একটি মারামারির ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনায় একজন মারা গেছেন। আহত হয়েছেন কয়েকজন। তবে যতটুকু জানা গেছে, আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের মধ্যে এ ঘটনা ঘটে। এদিকে, বিএনপির মহাসমাবেশে যোগ দিয়ে মিছিলের মধ্যেই স্ট্রোক করে মৃত্যুবরণ করেছেন নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মাহমুদ হোসেন। গতকাল দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে রাজধানীর নয়াপল্টনের কাছে ফকিরাপুলে মিছিলের সামনের সারিতে থাকা মাহমুদ অসুস্থ হয়ে পড়েন। এ সময় তাকে দ্রুত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ বিএনপি নেতা মাহমুদ হোসেনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, মাহমুদ হোসেন নারায়ণগঞ্জ বিএনপির একজন প্রবীণ নেতা ছিলেন। তাঁর মৃত্যুতে মহানগর বিএনপির নেতা-কর্মীদের মাঝে শোকের ছায়া নেমে আসে। গভীর শোক প্রকাশ করেছেন মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান ও সদস্যসচিব আবু আল ইউসুফ খান টিপু।