ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সরকার পতনের দিন ঢাকার অদূরে আশুলিয়া থানার সামনে লাশ পোড়ানোর ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তার পুলিশ পরিদর্শক আরাফাত হোসেনকে আশুলিয়া থানায় সোপর্দ করা হয়েছে। গতকাল দুপুরে তাকে আশুলিয়া থানায় সোপর্দ করা হয়। এর আগে, ভোরে ওই পুলিশ কর্মকর্তাকে রাজধানীর আফতাবনগর থেকে গ্রেপ্তার করে র্যাবের একটি দল। র্যাব জানিয়েছে, ঘটনার পর থেকে ছায়াতদন্ত শুরু করা হয়। গোয়েন্দা নজরদারির পর আরাফাত হোসেনকে আফতাবনগর থেকে আটক করা হয়। পরে তাকে আনা হয় র্যাব-৪ এর কার্যালয়ে।
সাভার র্যাব ক্যাম্পের অধিনায়ক মেজর জালিস মাহমুদ খান জানান, আটকের পর দুপুরে আরাফাতকে আশুলিয়া থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। বিকাল সাড়ে ৩টার ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আশুলিয়া থানার উপপরিদর্শক আবু তাহের। রাষ্ট্রপক্ষ থেকে রিমান্ডের পক্ষে শুনানি করা হয়। আরাফাতের পক্ষের আইনজীবীরা রিমান্ড বাতিল ও জামিন চেয়ে শুনানি করেন। জানা গেছে, শেখ হাসিনা সরকারের পতনের দিন অর্থাৎ ৫ আগস্ট সেখানকার ইসলাম পলিমারস অ্যান্ড প্লাস্টিসাইজারস লিমিটেডের অফিসার ফ্যামিলি কোয়ার্টারের দেয়াল ঘেঁষে গুলিবিদ্ধ সাত শিক্ষার্থীর লাশ ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়ে ছিল। পরে পুলিশ সদস্যরা লাশগুলো একত্রিত করে ভ্যানের ওপর স্তূপ করে রাখে। পরে লাশগুলো থানায় পার্ক করা একটি পিকআপে তুলে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়। সেই ঘটনার এক মিনিট ১৪ সেকেন্ডের ভিডিও ভাইরাল হয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। ভিডিওতে পুলিশের ভেস্ট আর হেলমেট পরিহিত যাদের দেখা গেছে, তাদের একজন ঢাকা উত্তরের গোয়েন্দা পুলিশের তদন্ত কর্মকর্তা আরাফাত হোসেন। বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পরে আত্মগোপনে চলে যান তিনিসহ ভিডিওচিত্রে থাকা পুলিশের সদস্যরা।
আরাফাতের গ্রামের বাড়ি বরিশালে। প্রায় দুই বছর আগে তিনি ঢাকা জেলার গোয়েন্দা বিভাগে যোগ দেন। তার বাবা মো. আরিফ হোসেন বদরটুনী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক এবং হরিনাথপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি।