‘নগরবাসী টাইমবোমার ওপর বসবাস করছে। ঢাকার ১৩ শতাংশ জায়গায় ভবন বানানোর পরিবেশ নেই। রাজউকের নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করেই বহুতল ভবন তৈরি করা হচ্ছে। এতে ঢাকায় ২১ লাখ ৪৬ হাজার ভবন ঝুঁকিপূর্ণ রয়েছে।’ গতকাল জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘দেশে ভূমিকম্পের ঝুঁকি ও করণীয়’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন।
সেফটি অ্যাওয়ারনেস ফাউন্ডেশন আয়োজিত সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিজাস্টার সায়েন্স অ্যান্ড ক্লাইমেট রেজিলিয়েন্স বিভাগের অধ্যাপক ও সাবেক চেয়ারম্যান ড. মো. জিল্লর রহমান। বক্তব্য দেন স্থপতি ও নগরবিদ মো. ইকবাল হাবিব, আরবান রেজিলিয়েন্স প্রজেক্টের প্রকল্প পরিচালক প্রধান প্রকৌশলী ড. আবদুল লতিফ হেলালী, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সাবেক পরিচালক মেজর (অব.) এ কে এম শাকিল নেওয়াজ, রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (রিহ্যাব) সিনিয়র সহসভাপতি লিয়াকত আলী ভূঁইয়া প্রমুখ। স্থপতি ও নগরবিদ মো. ইকবাল হাবিব বলেন, ‘ঢাকার ১৩ শতাংশ জায়গায় কোনো ধরনের ভবন বানানো যাবে না। কিন্তু ভবন বানানো হচ্ছে। এতে ঢাকায় ২১ লাখ ৪৬ হাজার ভবন ঝুঁকিপূর্ণ রয়েছে। এসব ভবন অপসারণ না করে নতুন ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে। ফলে ঢাকায় বসবাস করা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘জনবান্ধব নগর গড়তে চাইলে একটি সুন্দর পরিকল্পনা সারা বাংলাদেশের জন্য করতে হবে। প্রয়োজনে ন্যাশনাল বিল্ডিং কোড বাস্তবায়ন করতে হবে। তা না হলে যার যা খুশিমতো ভবন তৈরি চলতে থাকবে। আমাদের নগরগুলো বসবাসের অযোগ্য হয়ে উঠবে।’
অধ্যাপক ড. মো. জিল্লুর রহমান বলেন, ‘বড় ধরনের ভূমিকম্প হলে দেশে ব্যাপক মানবিক বিপর্যয় ঘটতে পারে। প্রস্তুতির অভাবে বিশেষ করে ঘনবসতিপূর্ণ শহরগুলোতে প্রাণহানির ঝুঁকি অনেক বেশি হতে পারে।’ তিনি বলেন, ‘অর্থনৈতিক দিক থেকেও ভূমিকম্পের প্রভাব ভয়াবহ। একটি বড় ধরনের ভূমিকম্পের পর পুনরুদ্ধার ব্যয় হাজার হাজার কোটি টাকায় পৌঁছাতে পারে। ব্যবসাবাণিজ্য ও সেবা খাতে স্থবিরতা সৃষ্টি হবে, যার প্রভাব জাতীয় অর্থনীতিতেও পড়বে।’ ড. আবদুল লতিফ হেলালী বলেন, ‘সব নতুন ভবন নকশা ও বাংলাদেশ জাতীয় বিল্ডিং কোড (বিএনবিসি)-২০২০ কঠোরভাবে পরিচালনা করতে হবে। এ ছাড়া দেশের বিভিন্ন গঠনতন্ত্রে বিদ্যমান ভবনগুলোর ভূমিকম্পের ক্ষতির মূল্যায়ন করতে হবে এবং প্রয়োজন হলে পুনর্গঠন বা মজবুত করতে হবে।’