রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন বাতিলের রায়ের বিরুদ্ধে জামায়াতে ইসলামীর আপিল শুনানি হবে ১৩ মে। সর্বোচ্চ আদালত দিনটি ধার্য করেছেন। গতকাল প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন আপিল বেঞ্চ শুনানির এ তারিখ ঠিক করে দেন। জামায়াতের আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির শুনানির তারিখ নির্ধারণের জন্য আপিল বিভাগে আবেদন করেছিলেন। তিনি বলেন, জামায়াতের নিবন্ধন বাতিলের কারণে গণতন্ত্রে উত্তরণে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। জামায়াতকে নিবন্ধন দেওয়ার সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে তরিকত ফেডারেশনের সেক্রেটারি জেনারেল সৈয়দ রেজাউল হক চাঁদপুরী, জাকের পার্টির মহাসচিব মুন্সি আবদুল লতিফ, সম্মিলিত ইসলামী জোটের প্রেসিডেন্ট মাওলানা জিয়াউল হাসানসহ ২৫ জন ২০০৯ সালের জানুয়ারিতে একটি রিট আবেদন করেন। ২০১৩ সালের ১ আগস্ট বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি কাজী রেজা-উল হকের বেঞ্চ ওই রিটের রায়ে জামায়াতের নিবন্ধন অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করেন। ওই রায়ের ওপর স্থগিতাদেশ চেয়ে জামায়াতের করা আবেদন ওই বছরের ৫ আগস্ট খারিজ করে দেন আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত।
হাই কোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হওয়ার পর ২০১৮ সালের ২৯ অক্টোবর জামায়াতের নিবন্ধন বাতিলের প্রজ্ঞাপন জারি করে নির্বাচন কমিশন। তাতে এ দলটির দলীয় প্রতীকে নির্বাচন করার সুযোগ বন্ধ হয়ে যায়। পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হলে জামায়াত আপিল করে। শুনানিতে জামায়াতের মূল আইনজীবী উপস্থিত না থাকায় ২০২৩ সালের ১৯ নভেম্বর প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন ছয় বিচারকের আপিল বেঞ্চ ওই আপিল খারিজ করে দেন। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর জামায়াতের পক্ষ থেকে সে আপিল পুনরুজ্জীবনের আবেদন করা হয়। তাতে সম্মতি দিয়ে গত বছর ২৪ আগস্ট আপিলটি পুনরুজ্জীবিত করার আদেশ দেন সর্বোচ্চ আদালত। তাতে নিবন্ধন ফিরে পেতে জামায়াতের আইনি লড়াইয়ের পথ খোলে। আওয়ামী লীগ সরকারের শেষ সময়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সহিংসতার অভিযোগে জামায়াতকে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর জাময়াতের আবেদনে সে নিষেধাজ্ঞাও তুলে নেওয়া হয়। এবার নির্বাচন কমিশনে রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন ফিরে পেলে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার অধিকারও ফিরে পাবে ২০০১-০৬ সময়ে বিএনপির সঙ্গে সরকারে থাকা দলটি।
