বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধীদের অসৎ উদ্দেশ্য থেকেই বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙা হয়েছে। তারা একটি ভাস্কর্য ভেঙে দেখতে চেয়েছে জনগণ কীভাবে বিষয়টিকে নেয়। তারা বাঘা যতীনের ভাস্কর্যও ভাঙে, কাল অন্য ভাস্কর্যও ভাঙবে।
তিনি বলেন, আমরা যদি শুরুতেই অপশক্তিকে আঘাত করতে না পারি ,তবে তা চলমান থাকবে। এজন্য জনগণকে রাস্তায় নামতে হবে। আমরা যদি নামতে না দেই, রাস্তায় ধরে ফেলি তাহলে তারা এসব অপকর্ম করার সাহস পাবে না।
শনিবার দুপুরে রংপুর টাউন হলে রংপুর ফাউন্ডেশন আয়োজিত পুনর্মুদ্রণকৃত রংপুর জেলার ইতিহাস গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন, গুণীজন সংবর্ধনা ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন বাণিজ্যমন্ত্রী।
টিপু মুনশি বলেন, ১৯৭১ সালে ২১ বছর বয়সে যুদ্ধ করেছি। আর আমার বাবা ৬১ বছরে। আগামী বছর স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী। এসব রাজাকার, আলবদর, পাকিস্তানের পা চাটা কুকুরেরা এখনো কোন সাহসে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙে। এই অপশক্তিই ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছে। তারা ১৯৭১ সালের পরাজিত শক্তি। অথচ বঙ্গবন্ধু একটি অসাম্প্রদায়িক, আধুনিক দেশ গড়তে চেয়েছিলেন এবং সেই চেতনা তিনি রেখে গেছেন।
রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক-কর্মকর্তা কর্তৃক পতাকা অবমাননার বিষয়ে তিনি বলেন, বিজয়ের মাসে পতাকা অবমাননার বিষয়ে প্রশাসন তদন্ত করছে। এ ধরনের ঘটনা চেতনার ওপর আঘাত। তাদের বিরুদ্ধে সাংবিধানিকভাবে যে ব্যবস্থা নেওয়া দরকার, সেটি নিতে হবে। যদি তারা উদ্দেশ্যমূলকভাবে জাতীয় পতাকা অবমাননা করে থাকে তবে তারা শেষ পর্যন্ত পরাজিত হবেই।
টিপু মুনশি আরও বলেন, উত্তরাঞ্চলে বন্ধের পথে সুগার মিলগুলো নিয়ে শিল্পমন্ত্রীর সাথে কথা বলব। আমাদের কৃষকদের যেন সমস্যা না হয়, সেজন্য তাদের কাছ থেকে আখ কেনা হবে। এছাড়া পিয়াজ, তেল ও আলুসহ সকল নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে আমরা নিয়মিত বাজার পর্যবেক্ষণ করছি।
জেলা প্রশাসক আসিব আহসানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন পুলিশ সুপার বিপ্লব কুমার সরকার, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট সাফিয়া খানম ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সদস্য অ্যাডভোকেট হোসনে আরা লুৎফা ডালিয়া।
আরও বক্তব্য রাখেন জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মমতাজ উদ্দিন আহমেদ, মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি সাফিউর রহমান সফি, সাধারণ সম্পাদক তুষার কান্তি মণ্ডল, রংপুর সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মোশাররফ হোসেন ও কারমাইকেল কলেজের বাংলা বিভাগের সাবেক শিক্ষক অধ্যাপক মোহাম্মদ শাহ আলমসহ অন্যরা।
এসময় মহান মুক্তিযুদ্ধে অবদান রাখা বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা, জীবন যুদ্ধে হার না মানা শিক্ষার্থীদের মধ্যে এসিড হামলায় চোখ হারানো মাসুদা আক্তার মনি ও প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী জোবায়েরকে উৎসাহিত করতে সংবর্ধনা ও আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়।
বিডি প্রতিদিন/এমআই