বাবা দুনিয়া থেকে বিদায় নিয়েছেন এক বছর আগে। মাথার ওপরের সেই ‘ছাতা’ হারিয়ে কিশোর বয়সেই সংসারের হাল ধরেছিল সাব্বির। অটোরিকশা চালিয়ে করা রোজগারে জুটতো অন্ন, চলতো পড়ালেখার খরচ। কিন্তু বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শামিল হতে গিয়ে গুলিতে সাব্বিরের সবকিছু থেমে গেছে। কর্মচঞ্চল ছেলেটিকে হারিয়ে দিশেহারা রিনা আক্তার পড়েছিলেন অথৈ সাগরে।
অবশেষে পরিবারটির মুখে হাসি ফোটালেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক মন্ত্রী কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসাইন কায়কোবাদ। সাব্বিরের পরিবারকে নগদ আর্থিক সহায়তা এবং বসবাসের জন্য ঘর করে দিচ্ছেন তিনি। নিহত কিশোর আমিরুল ইসলাম সাব্বির কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার কাজিয়াতল গ্রামের মৃত আলমগীর হোসেনের ছেলে। সে মরিচাকান্দা জিয়া স্মৃতি আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ে নবম শ্রেণিতে পড়ত। দেবিদ্বার উপজেলার ভিংলাবাড়ী গ্রামে মামার বাড়িতে থাকতো।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শুরু থেকে অংশ নেয় সাব্বির। ৪ আগস্ট দেবিদ্বারে মিছিলে আন্দোলনকারীদের ওপর ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা ও পুলিশ গুলি চালায়। এতে গুলিবিদ্ধ হয় সাব্বির। তার মাথায় ও কানে গুলি লাগে। হাসপাতালে ভর্তি করা হলে ৩৯ দিন পর মারা যায় সে। সাব্বিরের পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছেন মুরাদনগরের জননন্দিত বিএনপি নেতা কায়কোবাদ। অসহায়ত্বের গল্প শুনে তুরস্ক থেকে নেতাকর্মীদের মাধ্যমে পরিবারটিকে সহায়তা পাঠিয়েছেন তিনি। শুক্রবার বিকালে উপজেলা বিএনপির নেতাকর্মীরা সাব্বিরের মায়ের হাতে পঞ্চাশ হাজার টাকা তুলে দেন। তাছাড়া একটা ঘরও করে দেওয়া হচ্ছে।
সাব্বিরের মা রিনা আক্তার কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, আমরা সরকারি কোনো সহায়তা পাইনি। কায়কোবাদ দাদা আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। টাকা দিয়েছেন, সুন্দর একটা ঘর করে দিচ্ছেন। আল্লাহ আমাদের মাথার ওপর রহমত হিসেবে তাকে পাঠিয়েছেন।’
উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মহিউদ্দিন অঞ্জন বলেন, আমাদের নেতা কায়কোবাদ বিদেশে থেকেও ছাত্র আন্দোলনে নিহতদের পরিবারের খোঁজ-খবর নিয়ে তাদের পাশে দাঁড়াচ্ছেন। সাব্বিরের পরিবারের থাকার ঘর নেই। গণমানুষের নেতা কায়কোবাদ তাদের একটি ঘর করে দিচ্ছেন।
বিডি প্রতিদিন/আরাফাত