২০২৪ বাঙালি জাতির আজন্ম মুক্তিকামী চরিত্রের উজ্জ্বল মাইলফলক হয়ে থাকবে বলে মন্তব্য করেছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির ও চরমোনাই পীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম।
মঙ্গলবার ইংরেজি নতুন বছর আগমন উপলক্ষ্যে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি এ মন্তব্য করেন।
ইংরেজি নতুন বছরের শুভেচ্ছা জানিয়ে রেজাউল করীম বলেন, ‘আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘আর আমি এ দিনগুলোকে মানুষের মধ্যে পালাক্রমে আবর্তন ঘটিয়ে থাকি’ (আলে ইমরান ১৪০)। সময়ের আবর্তনে ধনী গরিব হয়, গরিব ধনী হয়। ২০২৪ সালে মহান আল্লাহর এই আয়াতের বাস্তব দৃষ্টান্ত আমরা দেখেছি। যে দুর্দান্ত প্রতাপশালী স্বৈরাচার বিগত ১৫ বছরের সব আন্দোলনকে প্রতিহত করে জুলুমশাহী অক্ষত রেখেছিল, সে ২০২৪ সালে মাত্র দেড় মাসের আন্দোলনে দেশ ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘২০২৪ সাল বাংলাদেশের ইতিহাসে অক্ষয় ও অমর হয়ে থাকবে। এই জাতির আজন্ম মুক্তিকামী চরিত্রের আরেকটি উজ্জ্বল মাইলফলক হয়ে থাকবে। বাংলাদেশের পরিপ্রেক্ষিতে ২০২৪ সাল উজ্জ্বল আলোকবর্তিকা হলেও বিশ্বের পরিপ্রেক্ষিতে তা কলঙ্কময় সময় হিসেবে বিবেচিত হবে। পুরোটা বছর জুড়ে ইজরাইলি হায়েনারা যেভাবে গণহত্যা চালিয়েছে, তার নজীর ইতিহাসে নাই। শতকোটি মানুষের চোখের সামনে ঘটিত এই নারকীয় গণহত্যার জন্য ২০২৪ সাল ইতিহাসে বারংবার আলোচিত হবে। যদিও সিরিয়ার মানুষের মুক্তি একটি ইতিবাচক দিক হয়ে থাকবে। সবমিলিয়ে ২০২৪ একটি স্মরণীয় বছর হয়েই থাকবে।’
ইসলামী আন্দোলনের আমির বলেন, ‘সময় গণনায় নতুন একটি অধ্যায় শুরু হচ্ছে। এই বিশেষ মুহূর্তে দেশবাসীর জন্য শুভ ও কল্যাণের প্রার্থনা করছি এবং তাদের জন্য শুভ ইচ্ছা প্রকাশ করছি। দেশ গঠনের যে সুযোগ তৈরি হয়েছে, তার যথার্থ ব্যবহার যেন আমরা করতে পারি তা কামনা করছি। আসলে সুযোগ বারংবার আসে না। সময় সর্বদা পক্ষে থাকে না। এখন সময় জনতার পক্ষে। রাষ্ট্র নির্মাণ, রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে শক্ত আইন ও রীতির ওপরে প্রতিষ্ঠা, রাজনৈতিক বন্দোবস্ত বিচার বিশ্লেষণ করে নতুন ও শুদ্ধ বন্দোবস্ত কায়েম করা এবং সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠার যে সম্ভাবনা ও সুযোগ তৈরি হয়েছে, তা যেন কোনোভাবে নষ্ট না হয়, কেউ যেন তা নষ্ট করতে না পারে, সেজন্য জনতাকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানাচ্ছি।’
চরমোনাই পীর বলেন, ‘সময় গণনার এই নতুন অধ্যায়ের শুরুতে সবার প্রতি আহ্বান করব যে, আসুন, নিজে নিজেকে বিচার করি। নিজের ভুল-ভ্রান্তি নিয়ে তওবা করি এবং আগামী দিনগুলো যেন মহান আল্লাহর নির্দেশিত পথে কাটাতে পারি সেই প্রতিজ্ঞা করি।’
তিনি বলেন, ‘নতুন বছরের শুরুতে আনন্দ উদযাপনের নামে পশ্চিমা অপসংস্কৃতির কিছু চর্চা দেখা যায়। এটা থেকে বিরত থাকার আহ্বান করছি। কারণ আমাদের নিজেদের হাজার বছরের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি রয়েছে। যা ইসলাম বিধৌত ও সুন্দর-শালীন। সেখানে পশ্চিমা উগ্র, উৎশৃঙ্খল সংস্কৃতি চর্চা করা আমাদের জন্য শোভনীয় না। সব পঙ্কিলতা দূর হয়ে শুভ্র সুন্দর ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ নির্মাণের কাল হয়ে উঠুক ২০২৫, এই প্রত্যাশা করি।’
বিডি প্রতিদিন/কেএ