বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো কৃত্রিম উপায়ে কিং কোবরার ডিম থেকে বাচ্চা ফুটিয়ে এক বিরল কীর্তি স্থাপন করেছেন চট্টগ্রামের স্নেক রেসকিউয়ার সিদ্দিকুর রহমান রাব্বি। তিনি চট্টগ্রাম স্নেক রেসকিউ টিমের প্রধান এবং বাংলাদেশ স্নেক রেসকিউ টিমের একজন সক্রিয় সদস্য।
গত ২২ জুলাই রাব্বি জানান, এক মাসের কিছু বেশি সময় ধরে ডিমগুলোকে কৃত্রিমভাবে তৈরি করা একটি বাসায় নিয়ন্ত্রিত তাপমাত্রা এবং আর্দ্রতায় রাখা হয়েছিল। এরপর ডিমগুলো ফুটে বাচ্চাগুলো জন্ম নেয়।
সাপ বিশেষজ্ঞ এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের জীববিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ আবদুল ওয়াহেদ চৌধুরী বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, এটি একটি অসাধারণ সাফল্য। কিং কোবরা বাংলাদেশের সবচেয়ে বিষধর সাপ হলেও কৃত্রিম উপায়ে এটির ডিম ফুটিয়ে বাচ্চা ফোটানোর কোন রেকর্ড আগে ছিল না। রাব্বিই প্রথম ব্যক্তি যিনি এ কাজটি সফলভাবে সম্পন্ন করেছেন।
ওয়াহেদ চৌধুরী আরও বলেন, কিং কোবরা প্রকৃতির জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ কারণ এরা অন্যান্য বিষধর সাপ খেয়ে ভারসাম্য বজায় রাখে। সঠিকভাবে সংরক্ষণ করা গেলে এই প্রজাতি দেশের জীববৈচিত্র্যকে আরও সমৃদ্ধ করবে।
এই কাজের সূচনা হয়েছিল গত ২০ জুন যখন রাব্বি এবং তার টিম বান্দরবানের একটি দূর্গম এলাকা থেকে কিং কোবরার ডিম উদ্ধার করে। ডিমগুলো ফাঙ্গাসে আক্রান্ত ছিল। রাব্বি ফাঙ্গাস সাফ করে কৃত্রিমভাবে তৈরি বাসায় রাখেন। সাপের বাচ্চাগুলো এক সপ্তাহ খাবার ছাড়া থাকে, তারপর মুরগীর মাংস দিয়ে খাওয়ানো হয়।
বড় হওয়ার সাথে সাথে বাচ্চাগুলোকে প্রাকৃতিক পরিবেশের সাথে খাপ খাওয়ানোর জন্য চট্টগ্রামের বিভিন্ন রিজার্ভ ফরেস্টে অবমুক্ত করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গায় পাঁচটি বাচ্চা অবমুক্ত করা হয়েছে এবং আরও ২০টি বাচ্চা পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন রিজার্ভ ফরেস্টে অবমুক্ত করার পরিকল্পনা করা হয়েছে।
কিং কোবরার এই সংরক্ষণ উদ্যোগকে বিশেষজ্ঞরা স্বাগত জানিয়েছেন, যা দেশের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল