চেক রিপাবলিকের উত্তরাঞ্চলের ক্রকনোসে পাহাড়ি এলাকায় হাইকিংয়ে বেরিয়ে পড়া দুই পর্যটক এমন এক আবিষ্কারে চমকে ওঠেন, যা এখনও গবেষকদের বিস্মিত করে রেখেছে। একটি পাথুরে দেয়ালের ফাঁকে অ্যালুমিনিয়ামের তৈরি একটি বাক্স বেরিয়ে ছিল। খোলা মাত্রই বেরিয়ে আসে ৫৯৮টি সোনার মুদ্রা, ব্রেসলেট, সিগার কেস, গুঁড়ার কৌটোসহ আরও অনেক মূল্যবান বস্তু। এই সম্পদের আনুমানিক মূল্য ধরা হয়েছে অন্তত ৩ লাখ ৬০ হাজার ডলার।
তবে, সবচেয়ে বড় প্রশ্ন হলো—এই গুপ্তধনের উৎস কী?
উদ্ধার হওয়া ধনসম্পদ এখন হরাদেক ক্রালোভে শহরের ইস্টার্ন বোহেমিয়া জাদুঘরে সংরক্ষিত আছে এবং বিশেষজ্ঞরা এর উপাদান ও ইতিহাস বিশ্লেষণে কাজ করছেন। জাদুঘরের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের প্রধান মিরোসলাভ নোভাক জানিয়েছেন, স্থানীয়রা এই গুপ্তধনের সম্ভাব্য উৎস নিয়ে নানা মত দিয়েছেন, তবে মুদ্রাগুলোর কোনোটিই স্থানীয় নয়।
ইতিহাসের গন্ধ, রহস্যের ধোঁয়া
গবেষকরা প্রাথমিকভাবে ধারণা করছেন, হয়তো দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরুর আগে চেক বা ইহুদি জনগোষ্ঠীর দেশত্যাগ বা ১৯৪৫ সালে জার্মানদের প্রস্থানকালীন সময়ের সঙ্গে এই মজুদের কোনো যোগসূত্র থাকতে পারে। তবে এক অদ্ভুত বিষয় হলো, সেগুলোর মধ্যে সর্বশেষ মুদ্রাটির তারিখ ১৯২১ সাল, যা এই তত্ত্বে কিছুটা বিভ্রান্তি তৈরি করেছে।
বিভিন্ন ধাতুর তৈরি ওই বস্তুগুলোর রাসায়নিক গঠন এখনো চূড়ান্তভাবে নির্ণীত হয়নি। এমনকি কিছু সিগার বাক্স এখনো বন্ধ অবস্থায় আছে। ফলে, এখনও অনেক প্রশ্নের উত্তর বাকি।
ইতিহাসের পাতায় নতুন সংযোজন?
এটি কি শুধুই যুদ্ধকালীন উদ্বাস্তুর ফেলে যাওয়া সম্পদ, নাকি এর পেছনে লুকিয়ে আছে অন্য কোনো গভীর রহস্য—তা সময়ই বলে দেবে। তবে এ কথা নিশ্চিত করে বলা যায়, এই ধরনের আবিষ্কার কেবল ইতিহাসের ধুলো ঝেড়ে নতুন আলো ফেলেই না, বরং ভবিষ্যতের গবেষণার পথও প্রসারিত করে দেয়।
আর এই রহস্যময় সোনার খোঁজ যেন নতুন এক প্রত্নতাত্ত্বিক অভিযানের সূচনা করে দিয়েছে, যেখানে প্রতিটি মুদ্রা যেন একেকটি গল্প বলছে হারিয়ে যাওয়া কোনো অধ্যায়ের।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল