জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, আমাদের কোনো আচরণে, কোনো পারফরম্যান্সে কষ্ট পেয়ে থাকলে আমাদের বিনা শর্তে ক্ষমা করে দেবেন। মানুষ আমরা, কেউ ভুলের ঊর্ধ্বে না। দল হিসেবে আমরা দাবি করি না যে আমরা ভুলের ঊর্ধ্বে। এ সময় তিনি জামায়াতের প্রতিটি কর্মী, সহকর্মী কিংবা দলের দ্বারা যে যেখানে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, কষ্ট পেয়েছেন, বিনা শর্তে তাদের ক্ষমা করে দেওয়ার কথা উল্লেখ করেন। গতকাল রাজধানীর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার ইনস্টিটিউটে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। পরিবর্তিত রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে আপিল বিভাগ জামায়াত নেতা এ টি এম আজহারুল ইসলামের মৃত্যুদে র রায় বাতিল করে তাকে বেকসুর খালাস দেওয়ার পর দলটির প্রতিক্রিয়া জানাতে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এ সময় বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে একাত্তরের যুদ্ধাপরাধ মামলার রায়ে জামায়াতে ইসলামীর শীর্ষ নেতাদের মৃত্যুদ কার্যকরের বিষয়টি ‘ইচ্ছাকৃত নেতৃত্ব গণহত্যা’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়।
জামায়াত আমির বলেন, ‘এই রায়ের মধ্য দিয়ে এটা স্পষ্ট হয়ে গেছে, এটা ছিল ইচ্ছাকৃত নেতৃত্ব গণহত্যা। দায়িত্বশীল নেতা ঘরে ঘরে জন্মায় না, প্রতিদিন জন্মায় না। এটা আল্লাহর দান। একটা দেশ এবং দলকে নেতৃত্বশূন্য করার মানেই হচ্ছে জনগণকে অন্ধকারের দিকে ঠেলে দেওয়া।’ জামায়াত আমির বলেন, দেশবাসীর সমর্থন ও সহযোগিতায় যদি এই দেশের সেবা করার দায়িত্ব আমাদের ওপরে আসে, আমরা প্রতিশোধের রাজনীতির অবসান ঘটাব, বৈষম্যের রাজনীতির অবসান ঘটাব ইনশাআল্লাহ। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন জামায়াতের নায়েবে আমির অধ্যাপক মুজিবুর রহমান ও সাবেক এমপি ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মো. তাহের, ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এ টি এম মাছুম, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, সাবেক এমপি ড. হামিদুর রহমান আযাদ, মাওলানা আবদুল হালিম, মাওলানা মোয়ায্যম হোসাইন হেলাল, অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান প্রমুখ।
আওয়ামী লীগ ২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসার পর একাত্তরের যুদ্ধাপরাধের বিচারের উদ্যোগ নেয়। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের রায়ের পর সর্বোচ্চ আদালতে আপিল ও রিভিউ নিষ্পত্তি শেষে জামায়াতে ইসলামীর আমির মতিউর রহমান নিজামীসহ শীর্ষ পাঁচ নেতা এবং বিএনপির একজন জ্যেষ্ঠ নেতার ফাঁসি কার্যকর করা হয়। জামায়াতে ইসলামীর তৎকালীন সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এ টি এম আজহারুল ইসলামকে ট্রাইব্যুনালের রায়ে মৃত্যুদ দেওয়া হয়েছিল। সংবাদ সম্মেলন শেষে জামায়েত আমির সাংবাদিকদের প্রশ্নের কোনো উত্তর দেননি। তবে তিনি বলেন, আজকে আমরা কোনো প্রশ্নের উত্তর দেব না। আজকের সময়টা আমাদের জন্য ভিন্নরকম।