অন্ধকারের কীট বিএনপি-জামায়াত দেশকে পাকিস্তানের মতো একটি অকার্যকর ধর্মান্ধ রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তুলতে চায় বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাবেক প্রটোকল অফিসার আলাউদ্দিন আহম্মেদ চৌধুরী নাসিম।
বৃহস্পতিবার ফেনীর মিজান ময়দানে জেলা ছাত্রলীগের সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি জহিরুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও শাহাদাত হোসেন রিন্টুর সঞ্চালনায় সম্মেলনের উদ্বোধন করেন কেন্দ্রীয় সভাপতি এইচএম বদিউজ্জামান সোহাগ। প্রধান বক্তা ছিলেন, কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকী নাজমুল আলম। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ফেনী ২ আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন হাজারী, সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য জাহানারা বেগম সুরমা, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুর রহমান বিকম প্রমুখ।
আলাউদ্দিন আহম্মেদ চৌধুরী নাসিম বলেন, দেশে আজ দুটি ধারা প্রবাহমান। আলোর পথ ও সত্যের পথ ধরে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে একটি ধারা। বেগম জিয়া ও জামায়াত শিবিরের নেতৃত্বে জঙ্গীবাদ ও অন্ধকারের ধারা। ছাত্রলীগের সূর্য সন্তানরা ঠিক করবে তারা কোন ধারায় আগাবে।
তিনি বলেন, এদেশে দুটি পরিবার নেতৃত্ব দিচ্ছেন। একটি পরিবারের সদস্য হচ্ছেন- সজীব ওয়াজেদ জয়, পুতুল, টিউলিপ ও ববি রেজওয়ান সিদ্দিক। যারা বিশ্ব পরিসরে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। যাদের শিক্ষাগতা যোগ্যতা আপনারা সবাই জানেন। অন্যদিকে, আরেকটি পরিবারের উত্তরসূরিদের শিক্ষাগতা যোগ্যতা ও তারা কী করছেন আপনারা সবাই জানেন। জাতির জনকের কন্যা ও নাতি-নাতনিরা এদেশে হাওয়া ভবন বা অন্য কোন ভবন তৈরি করেনি। অথচ আরেকটি পরিবার ২১ আগস্ট তৈরী করে শেখ হাসিনাকে শেষ করে দিতে চেয়েছিল।
আলাউদ্দিন নাসিম আরও বলেন, ছাত্রলীগের কর্মীদের পড়ালেখা করতে হবে। আলোর বার্তা ছড়াতে হবে। আমি আঁড়াল থেকে কাজ করতে পছন্দ করি। সে জন্য আমি নিজের সম্পর্কে বলি, আমি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কর্মী। ফেসবুকে আজ জঙ্গিবাদ, ধর্মান্ধ ও কুসংস্কারাচ্ছন্ন একটি গোষ্ঠী ধর্মের নামে কৌশলে অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে হবে। অনেক ব্লাগারকে তারা মেরে ফেলছে। তাদের বিরুদ্ধে জনমত সৃষ্টি করতে হবে। ছাত্রলীগের নেতা কর্মীদের মানুষের ঘরে ঘরে গিয়ে বুঝাতে হবে ইসলাম শান্তির ধর্ম। আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (স.) বলেছেন, পৃথিবীর সকল ধর্ম আল্লাহর ধর্ম। ধর্মান্ধদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে।
চলতি মাসে ইন্দিরা-মুজিব চুক্তির মাধ্যমে দীর্ঘ দিনের স্থল সীমানা ও ছিট মহলের যে সমস্যা ছিল তা থেকে আজ আমরা পরিত্রান পেয়েছি। বঙ্গবন্ধুর নাতনি টিউলিপ ব্রিটিশ পার্লামেন্টের এমপি নির্বাচিত হয়েছেন যোগ করেন তিনি।
নিজাম উদ্দিন হাজারী বলেন, বেগম জিয়া বার বার প্রধানমন্ত্রী ছিলেন অথচ তিনি নিজ জেলায় ফেনীতে একটি মেডিকেল কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় করেন নি। ফেনীর প্রতি তার কোন আন্তরিকতা না থাকায় তিনি করেন নি। ফেনীতে এই পর্যন্ত যত উন্নয়ন হয়েছে তা আলাউদ্দিন আহম্মেদ চৌধুরীর নেতৃত্বে হয়েছে। আলাউদ্দিন নাসিমের নেতৃত্বে চট্রগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে জয়ী হয়েছি।
সম্মেলনে এইচএম বদিউজ্জামান সোহাগ বলেন, সামরিক শাসকরা এদেশের তুরণদের হাতে অস্ত্র তুলে দিয়েছেন, আর হাওয়া ভবন দেশকে জঙ্গীবাদে রূপান্তর করেছেন।
সিদ্দিকী নাজমুল আলম বলেন, খালেদা জিয়াকে নির্বাসনে পাঠাতে আওয়ামী লীগের দরকার নেই, ছাত্রলীগই যথেষ্ট। জাতীয় বেয়াদব তারেক বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে বাজে মন্তব্য করায় আমরা ঘোষণা দিয়েছিলাম বেগম জিয়াকে দেশের কোথায় জনসভা করতে দেব না। আমরা তারপর থেকে দিইওনি। বেগম খালেদা জিয়া যাতে ফেনীতে প্রবেশ করতে না পারে সে ব্যাপারে ছাত্রলীগকে সতর্ক থাকতে হবে।
উল্লেখ্য, সর্বশেষ ১৯৯৬ সালে প্রকাশ্যে কাউন্সিলের মাধ্যমে জেলা ছাত্রলীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। দীর্ঘ ১৮ বছর পর এবার পুনরায় প্রকাশ্য সম্মেলন অনুষ্ঠিত হল।
বিডি-প্রতিদিন/১৪ মে, ২০১৫/মাহবুব