তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেছেন, দেশে আজও সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা হয়। হিন্দুদের মন্দির ভাঙচুর করা হয়। কিন্তু কাজী নজরুল ইসলামের আদর্শ ধারণ করলে দেশে সাম্প্রদায়িকতা থাকবে না। কেননা তিনি ছিলেন অসাম্প্রদায়িক।
মঙ্গলবার উত্তরা ইউনিভার্সিটি আয়োজিত ‘একুশ শতকে নজরুল’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
হাসানুল হক ইনু বলেন, কাজী নজরুল ইসলাম এদেশের ইতিহাস ঐতিহ্যে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। তিনি ছিলেন একাধারে সংগীতজ্ঞ, দার্শনিক ও সাংবাদিক। অন্যায় অবিচারের বিরুদ্ধে থেকেছেন অবিচল। নজরুল প্রেম ও মানবতারও কবি ছিলেন। ভয়ভীতি, কুসংস্কারের নাগপাশ থেকে মুক্ত থাকতে আজ নজরুলের দর্শন প্রয়োজন। বৈষম্যহীন দেশ গড়তে নজরুল অমর হয়ে থাকবেন।
রাজধানীর উত্তরা ক্লাবে দুই দিনব্যাপী এ আয়োজনের প্রথম দিনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান, রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. বরুণ কুমার চক্রবর্তী, গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. খন্দকার মো. নাসিরউদ্দিন, আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. বেলা দাস, কাজী নজরুল ইসলামের দৌহিত্র খিলখিল কাজী, নজরুল গবেষক ইমেরিটাস অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম প্রমুখ।
উত্তরা ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম আজিজুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন ইউনিভার্সিটির উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইয়াসমীন আরা লেখা। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন অধ্যাপক ড. সৌমিত্র শেখর।
অধ্যাপক আনিসুজ্জামান বলেন, কাজী নজরুলের মধ্যে যে আন্তর্জাতিক চেতনার স্ফূরণ ঘটেছিল, তা তার সচেতন জীবনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত সতেজ ছিল। তার এই চেতনাবোধই তাকে দেশোত্তীর্ণ ও কালোত্তীর্ণ করেছে।
খিলখিল কাজী বলেন, অসাম্প্রদায়িকতার প্রতীক ছিলেন নজরুল। তার গান, কবিতা ছিল সমাজ বদলের হাতিয়ার।
তরুণ প্রজন্মের কাছে নজরুলের চেতনা পৌঁছে দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, নতুন প্রজন্মকে নজরুলের আদর্শ নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে।
অন্য বক্তারা বলেন, কাজী নজরুল সাম্যের কথা বলে গেছেন, নারীর সমঅধিকারের কথা বলে গেছেন। সমাজে নারীর ভূমিকা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়েছেন।
অনুষ্ঠানের সহ-আয়োজক জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা ভাষা ও সাহিত্য বিভাগ এবং ভারতের আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগ।
বিডি প্রতিদিন/২১ নভেম্বর ২০১৭/এনায়েত করিম