নির্বাচন সামনে রেখে গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তিন ঘণ্টা সংলাপের পর যুক্তফ্রন্টের নেতা এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী বলেছেন, সংলাপের শুরুটা যেভাবে হয়েছে, তাতে তিনি ‘আশাবাদী’। খবর বিডি নিউজের
সরকার যদি প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী নির্বাচন কমিশনকে সম্পূর্ণ নিরপেক্ষভাবে কাজ করার সুযোগ দেয়, নিরপেক্ষ নির্বাচনের পরিবেশ যদি তৈরি হয়, তাহলে বিকল্পধারা ও ঐক্যফ্রন্ট নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিষয়টি ‘ইতিবাচক’ হিসেবেই বিবেচনা করবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
একাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে বিরোধপূর্ণ রাজনৈতিক অবস্থানের মধ্যে কামাল হোসেন নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে সংলাপের পরদিন শুক্রবার বি. চৌধুরীর ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে বসেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
রাত পৌনে ৮টায় আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর সূচনা বক্তব্যের মধ্য দিয়ে শুরু হয় বৈঠক; এরপর চলে রুদ্ধদ্বার আলোচনা। দুই পক্ষের ৪৪ জন নেতার আলোচনার মধ্যেই চলে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে আপ্যায়ন।
পৌনে ১১টার দিকে গণভবন থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সাবেক রাষ্ট্রপতি বদরুদ্দোজা চৌধুরী বলেন, আমরা খুশি হয়েছি এই জন্য যে আমাদের কথাগুলো স্পষ্টভাবে বলতে পেরেছি। সেই ভিত্তিতে কয়েকটা কথায় মতৈক্য হয়েছে।
সংলাপ ফলপ্রসূ হয়েছে কিনা জানতে চাইলে বিকল্প ধারার সভাপতি বদরুদ্দোজা বলেন, “আমাদের কথাগুলো তারা গ্রহণ করেছে বলে আমাদের প্রতিয়মান হয়েছে।”
গণভবন থেকে বারিধারার বাসায় ফিরে যুক্তফ্রন্টের অন্য নেতাদের সঙ্গে নিয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন বদরুদ্দোজা।
সংলাপে তারা কী কী দাবি তুলে ধরেছেন এবং সেসব বিষয়ে শেখ হাসিনা কী উত্তর দিয়েছেন- তা বিস্তারিত তুলে ধরা হয় ব্রিফিংয়ে।
বি চৌধুরী বলেন, দাবি বাস্তবায়িত হবে কি না তা আমি বলতে পারব না। তবে তারা স্বীকার করেছেন যে এ দাবিগুলো বাস্তব। তারা স্বীকার করেছেন, এগুলো প্রণিধানযোগ্য, তারা স্বীকার করেছেন এগুলো তারা বিবেচনা করবেন এবং কোনো কোনো জায়গায় তারা স্বীকৃতি দিয়েছেন এটা এটা গ্রহণ করা হবে।
আমরা এর বেশি কিছু বলব না। আমরা দেখব তারা কীভাবে এটা বাস্তবায়িত করে। সেই হিসেবে আমরা বলব আমাদের সংলাপ আন্তরিকভাবে হয়েছে বলে মনে হয়। সরকার যদি কথা রাখেন, তাহলে এটা আশাবাদের দিকেই যাচ্ছে।
ঐক্যফ্রন্ট ও বিএনপি নেতারা যেখানে সংলাপ নিয়ে হতাশার কথা বলেছেন, সেখানে সংলাপের পর যুক্তফ্রন্ট নির্বাচনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেবে কি না- তা জানতে চেয়েছিলেন সাংবাদিকরা।
উত্তরে বদরুদ্দোজা চৌধুরী বলেন, যদি সরকারকে নিরপেক্ষকরণ করা যায়, নির্বাচন কমিশন যদি সরকার থেকে পুরোপুরি আলাদা থাকতে পারে, তাহলে অবশ্যই একটি পরিবেশ তৈরি হবে। আমাদের অন্য দাবিগুলো গ্রহণ করলে একটা নিরপেক্ষ নির্বাচনের পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে আমরা নির্বাচনে যেতে পারি। ইতিবাচকভাবে বিবেচনা করব।
প্রয়োজনে এক দিনের জন্য সংসদ ডেকে নিরপেক্ষ নির্বাচনকালীন সরকার গঠনের যে দাবি, তা পূরণ না হলেও নির্বাচন কমিশন পুরোপুরি নিরপেক্ষ হলে ‘লেভেল প্লেইং ফিল্ডের অনেকটা কাছাকাছি’ পৌঁছানো সম্ভব বলে মনে করেন যুক্তফ্রন্টের শীর্ষ নেতা।
তিনি বলেন, সংবিধান অনুযায়ী শেখ হাসিনার প্রধানমন্ত্রীত্বেই যে নির্বাচন হবে তা সংলাপে আবার স্পষ্ট করেছে আওয়ামী লীগ। তবে যুক্তফ্রন্টের কিছু দাবির সঙ্গে ক্ষমতাসীনরা একমত হয়েছে, যা ইতিবাচক।
'আজকে অন্তত কিছু দাবি মেনে নিল। আমরা একটা ভালো শুরু করেছি, আমরা দেখব। আমরা নিজেরা আলোচনা করব।… এক লাফেই সব হয়ে যাবে, এটা না, আমরা রাজনীতি করি।
বিডি প্রতিদিন/০২ নভেম্বর ২০১৮/আরাফাত