রাজধানীতে নিয়ম বহির্ভূতভাবে নির্মিত অবৈধ ভবন ভাঙার দৃশ্য দেখার অপেক্ষায় রয়েছেন গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন। তিনি বলেন, আমরা অপেক্ষায় আছি কবে নিয়ম বহির্ভূতভাবে নির্মিত ভবনগুলো ভাঙা হবে? এগুলোর মধ্যে একটাও যদি ভাঙা হয়, তবে সেটা অনুকরণীয় হবে। এগুলো ভাঙলে অন্য সবার জন্য একটা শিক্ষা হবে।
সংসদ ভবনে আজ অনুষ্ঠিত গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠক শেষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই আকাঙ্খার কথা ব্যক্ত করেন। বৈঠকে বনানীর এফআর টাওয়ারের সংঘটিত সাম্প্রতিক অগ্নিকাণ্ড নিয়ে আলোচনা হয়।
বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন। কমিটির সদস্য নারায়ণ চন্দ্র চন্দ, বজলুল হক হারুন, জিল্লুল হাকিম, মনোয়ার হোসেন, আনোয়ারুল আশরাফ খান, সৈয়দা জোহরা আলাউদ্দিন এবং ফরিদা খানম বৈঠকে অংশ নেন।
সংবাদ সম্মেলনে ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন বলেন, সিভিল এভিয়েশন বলেছে এই এলাকায় ১৫ তলার বেশি উঁচু ভবন করা যাবে না। অথচ ওই এলাকায় হোটেল ওয়েস্টিনসহ অনেক ভবন আছে সেগুলো সুউচ্চ। কিভাবে এগুলো হলো? এগুলোর কোন একটিও তো এই সরকারের আমলে হয়নি। ৪৮ বছর ধরে চলছে। রাজউক বলেছে তারা ২৪টি টিম করেছে।
এসময় তিনি আরো জানান, গত ২৮ মার্চ কামাল আতাতুর্ক এভিনিউয়ের এফআর টাওয়ারে আগুন লেগে ২৭ জনের মৃত্যু হয়। ভবনটি অনুমোদনের বাইরে গিয়ে নির্মাণ করা হয় বলে রাজউকের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। এফআর টাওয়ারের মালিকপক্ষ যে নকশা দেখিয়ে ভবন নির্মাণের আবেদন করেছিল, ভবন নির্মাণের সময় দেওয়া নকশার সঙ্গে তার মিল খুঁজে পায়নি রাউজক। এছাড়া ভবনটিতে অগ্নি নিরাপত্তার যথাযথ ব্যবস্থাও ছিল না বলে ফায়ার সার্ভিসের প্রতিবেদনে বলা হয়। কামাল আতাতুর্ক এভিনিউয়ের ২৩ তলা ভবনটির অগ্নিনির্বাপন ব্যবস্থার দুর্বলতা কাটাতে ফায়ার সার্ভিসের নোটিসও আমলে না নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ভবন মালিকদের বিরুদ্ধে।
রাজধানীর অভিজাত এলাকা বনানীর ওই ভবনে আগুন লাগলে চারটি তদন্ত কমিটি করে সরকারের বিভিন্ন দপ্তর। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের তদন্ত করে জানিয়েছে, শর্ট সার্কিট থেকে ওই আগুনের সূত্রপাত।
রাজউক জানিয়েছে, ১৯৮৭ সালের রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সংশোধিত) আইন অনুযায়ী ১৯৯৬ সালে ভবন নির্মাণের আবেদন জানিয়ে নকশা জমা দিয়েছিল এফআর টাওয়ারের মালিকপক্ষ। পরে ২০০৫ সালে যখন ভবনটি নির্মাণ করা হয়, তখন আরও একটি নকশা জমা দিতে হয় রাজউকে। এই ঘটনার পর রাজউকের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
সংসদ সচিবালয়ের গণসংযোগ বিভাগ জানায়, বৈঠকে বর্তমান বিল্ডিং কোড যুগোপযোগী করা, অনুমোদনহীন বহুতল ভবনের উচ্চতা বৃদ্ধি রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ, বিল্ডিং কোড মেনে ভবন নির্মাণ এবং যথাযথ কতৃপক্ষের মাধ্যমে কার্যক্রম মনিটরিং করার সুপারিশ করা হয়।
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার