২৪ জুন, ২০১৯ ২০:১৭

জঙ্গিবাদের তোষক বিএনপিকে রাজনীতি থেকে মাইনস করতে হবে : ইনু

নিজস্ব প্রতিবেদক

জঙ্গিবাদের তোষক বিএনপিকে রাজনীতি থেকে মাইনস করতে হবে : ইনু

ফাইল ছবি

জাসদ সভাপতি ও সাবেক তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেছেন, দেশের অর্থনীতির সমৃদ্ধির ধারা অব্যাহত রাখতে হলে বিএনপির মত সাম্প্রদায়িক ও জঙ্গিবাদের তোষক রাজনৈতিক দলকে দেশের রাজনীতি ময়দান থেকে মাইনাসই করতে হবে। এ ধরনের শক্তিকে ক্রেন দিয়ে তুলে বিরোধী দলে বসানো গণতন্ত্রের জন্য মঙ্গলজনক নয়। আগুন সন্ত্রাস দমন প্রতিহিংসা না, জঙ্গি সন্ত্রাস দমন প্রতিহিংসা না, অন্তর্ঘাত দমন, খুনিদের দমন, যুদ্ধাপরাধীদের দমন প্রতিহিংসা না, দুর্নীতির বিচারও প্রতিহিংসা না, তাই এসবের ছাড় দেয়া ঠিক হবে না।

স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদের বাজেট অধিবেশনে সোমবার ২০১৯-২০ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেট আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোটের অন্যতম শরীক দল জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু আরও বলেন, অর্থনীতির সম্মৃদ্ধির জন্য রাজনৈতিক শান্তি দরকার। শেখ হাসিনা সরকারকে অনেক মূল্য দিয়ে তা অর্জন করতে হয়েছে। তাই শান্তির শত্রু অশান্তির হোতাদের কোনো ছাড় নেই, দমন এদের করতেই হবে। 

তিনি আরও বলেন, এখন রাজনৈতিক স্পেস দেয়া- কথা ফ্যাসানে পরিণত রয়েছে। কিন্তু গণতন্ত্রের সুযোগ নিয়ে যারা গণতন্ত্রের পিঠে ছোবল মারে তাদের জন্য মায়াকান্না গণতন্ত্রকে ধ্বংসই করে। এখানে এমনো রাজনৈতিক শক্তি বর্তমান, যারা সামরিক শাসনামলে রাজনৈতিক বিষবৃক্ষ হিসেবে কাজ করে। বিএনপি হচ্ছে সেই দল, যারা জামাতের দিকে তাকায়, তারা সকল সাম্প্রদায়িক শক্তি ও জঙ্গি সন্ত্রাসবাদের ছাতা, তারা নিজেরাই সাম্প্রদায়িক দল। বিএনপি সেই দল যারা সংবিধানের চার নীতি মানে না, বঙ্গবন্ধু জাতির পিতা মানে না, স্বাধীনতার চার নীতি মানে না। বিএনপি কিন্তু সেই বিরোধী দল যারা ১৫ আগস্টকে খালেদা জিয়ার জম্মদিন হিসেবে পালন করে। তারা জিয়াউর রহমানকে স্বাধীনতার ঘোষক হিসেবে উল্লেখ করে। উন্নয়নের এ ধারা অব্যাহত রাখতে প্রধানমন্ত্রীকে দল দেখে মুখ না দেখে কঠোর হবার আহ্বান জানান। 

বাজেটের বিষয়ে হাসানুল হক ইনু বলেন, বাজেটের কিছু দুর্বল দিক রয়েছে- ডিজিটাল বাংলাদেশ করার জন্য মোবাইল সেক্টরে অত্যাধিক শুল্ক বৃদ্ধি করা হয়েছে, টক টাইমে বাড়তি কর ও স্মার্ট ফোনের উপর কর বৃদ্ধি, পারিবারিক সঞ্চয়পত্রে উৎসে কর বাড়ানো হয়েছে, যা ঠিক হয়নি, বাজেটে স্বাস্থ্যখাতে বরাদ্দ হতাশাজনক। 

তিনি বলেন, ব্যক্তি আয়ের সীমা আড়াই লাখ থেকে ৩ লাখ করা, ধনীদের সম্পদের সার চার্জের পরিমাণ আড়াই থেকে ৩ কোটি করা হয়েছে, এটা কমিয়ে সোয়া দুই কোটি বহাল রাখা দরকার। বাজেটে ধনীদের সুযোগ দেয়া হলেও দরিদ্রদের সুযোগ দিতে হবে। ঋণ খেলাপী কমিয়ে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার প্রয়োজন, দুর্নীতি ও অপচয়ের রাষ্ট্রীয় খাত থেকে এ বাজেটকে রক্ষা করতে হবে। 

জাসদ সভাপতি আরও বলেন, বাজেটে কালো টাকা বৈধ করার সুযোগ দিয়ে গত ১০ বছরে খুব একটা সুবিধা হয়নি। অর্থনীতির কোনো প্রভাব পড়েনি। এটা অনৈতিক ও সংবিধান পরিপন্থী, তাই কালো টাকা সাদা করার প্রস্তাবটা প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছি। কালো টাকা ছাড়াই দেশের প্রবৃদ্ধি ৮ শতাংশের উপরে বৃদ্ধি হয়েছে, তাই আমি চাই না শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সাদা অর্থনীতির উপর কালো টাকার দাগ লাগুক। 

তিনি বলেন, খালেদা জিয়া ছাড়া আর কেউ এ সুযোগ নেননি। এসময় কালো টাকা বৈধ করার সুযোগ আর কেউ নিয়েছিলেন কিনা তা সংসদে জানানোর জন্য অর্থমন্ত্রীকে আহ্বান জানান। 

ব্যাংকিং খাতের অনিয়মের সমালোচনা করে তিনি বলেন, বড় বড় ঋণ খেলাপীরা আদালতের স্থগিতাদেশ নিয়ে বড় বড় ঋণ আটকে রাখে, ৩৭ হাজার কোটি টাকা তারা এভাবে আটকে রেখেছে। ব্যাংকিং খাতে যে বিষ ফোঁড়া তা ট্যাকল করার ক্ষমতা কিন্তু কেন্দ্রয় ব্যাংকের রয়েছে। তাদের সে  ক্ষমতা প্রয়োগ করার অধিকার দেয়া হোক। যতদিন ব্যাংক কমিশন না হচ্ছে ততদিন কেন্দ্রীয় ব্যাংকে স্বাধীনভাবে কাজ করতে দেয়ায় আহ্বান জানান তিনি। 

বিডি প্রতিদিন/এনায়েত করিম

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর