আইন অনুষদের ভারপ্রাপ্ত ডীন, সিন্ডিকেট সদস্য অধ্যাপক ও প্লেজারিজম কেসের জন্য গঠিত ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান মো. রহমত উল্লাহ বলেছেন, ‘সামিয়া রহমানরা যাদের লেখা কপি করেছেন তাদের নাম উল্লেখ করে স্বীকৃতি দিয়েছেন, তাই এটাকে প্লেজারিজম বলা যাবে না। আর ট্রাইব্যুনাল থেকে প্লেজারিজম বলাও হয়নি। সিন্ডিকেট ট্রাইব্যুনালের সুপারিশের বাইরে গিয়ে সিদ্ধান্ত দিলে ট্রাইব্যুনালের কী দরকার ছিলো। বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে ট্রাইব্যুনালের রায়ের কপিটা চান, সেখানে ট্রাইব্যুনালের ব্যাখ্যা আছে।’
তিনি বলেন, ‘সামিয়ারা পাতার পর পাতা কপি করেছেন। এটা গবেষণা পদ্ধতির সঙ্গে কোনোভাবে মিলে না। কিন্তু প্লেজারিজম হচ্ছে অন্যের কাজ নিজের বলে চালিয়ে দেওয়া এবং অন্যকে স্বীকৃতি না দেওয়া।
গণমাধ্যমকের সঙ্গে আলাপে অধ্যাপক মো. রহমত উল্লাহ আরও বলেন, ‘সামিয়ারা যদি কোথাও লেখকের নাম উল্লেখ না করতেন, তাহলে বলা যেতো চুরি করে নিজের নামে চালিয়ে দিয়েছেন। এটা হচ্ছে প্লেজারিজমের সংক্ষিপ্ত বর্ণনা। প্লেজারিজমের বহু বর্ণনা আছে। কতো অংশ কপি করা ঠিক, কতো কপি করা ঠিক নয়- এ বিষয়ে ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ে সুপ্রতিষ্ঠিত কোনো নীতিমালা নেই। প্লেজারিজমের খসড়া হচ্ছে। নীতিমালা চূড়ান্ত হলে তখন বলা যাবে- এটা কী ছিলো। সামিয়াদের কপি প্লেজারিজম কিংবা ভুল বলবো না, নিয়মবর্হিভূত কাজ হয়েছে। তাদের গবেষণা পদ্ধতি ঠিক নয়। নিয়ম অনুযায়ী এ ধরনের গবেষণায় ৫-৬ পাতা কপি করা যায় না।’
তিনি বলেন, ‘সিন্ডিকেট সদস্যরা কেন প্লেজারিজম বলছেন, তাদের জিজ্ঞেস করুন।আদালত একটা রায় দেন। আলোচনা-সমালোচনার আগে কী যুক্তিতে রায়টা দিয়েছেন, আদালত নিশ্চয়ই প্রমাণ সহকারে ব্যাখ্যা করেন। ট্রাইব্যুনাল কোনো কিছু বলে থাকলে সেটার নিশ্চয়ই ব্যাখ্যা আছে।’
এই অধ্যাপক বলেন, ‘যারা আর্টিকেল লিখেছেন আর যারা প্রকাশ ও রিভিউ করেছেন তাদেরও তো দায়িত্ব আছে। যাকে অবনমন করেছেন তার সুপারভাইজর আছেন না? তার দায়িত্ব কোথায়? পিএইচডি থিসিস যখন পরীক্ষা হয়েছে, যারা এক্সামিনার ছিলেন তারা কী করেছেন? তাদের দায়িত্ব কোথায়? পিএইচডি করছেন যিনি তার শাস্তি হবে, কিন্তু সঙ্গে এসমস্ত পদ্ধতির সঙ্গে যারা ছিলেন নিশ্চয়ই তাদেরও দায়বদ্ধতা। তারা কতোটুকু দায়িত্ব পালন করেছেন? কিংবা করেননি?’
তিনি আরও বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট যখন এ সমস্ত বিষয় নিয়ে কাজ করে তখন টোটাল বিষয়টা দেখা উচিত। শুধু একটা পক্ষকে দেখলে ন্যায়বিচার নাও হতে পারে। তাদের সুপারভাইজররা কী করেছেন, সেটাও তো দেখা উচিত ছিলো। তার এক্সামিনাররা কী করেছেন, সেটাও দেখা দরকার ছিলো। ট্রাইব্যুনালের মতামত কিংবা সুপারিশ নিতে বাধ্য আইনে এমন সুস্পষ্ট কোনো কথা নেই। তবে সিন্ডিকেট ট্রাইব্যুনালের সুপারিশের বেশি সাজা দিলে, ট্রাইব্যুনালের কোনো প্রয়োজন ছিলো না।
সূত্র : আমাদের সময় ডটকম।
বিডি-প্রতিদিন/শফিক