‘কোনো ব্যক্তির স্খলন বা বিচ্যুতির জন্য পুলিশ বিভাগকে সামগ্রিকভাবে দায়ী করা অসমীচীন এবং অসঙ্গত।’ সম্প্রতি রাজধানীতে একজন ব্যাংক কর্মকর্তা ও ঢাকা সিটি করপোরেশনের এক পরিদর্শককে পুলিশি নির্যাতনের পরিপ্রেক্ষিতে গত সন্ধ্যায় পুলিশ সদর দফতর থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা বলা হয়েছে। এতে আরও উল্লেখ করা হয়— ‘সততা, অসততা মানুষের ব্যক্তিগত গুণ বা দোষ। যে কারণে সমাজের গুরুত্বপূর্ণ পেশায় থেকেও কেউ অপরাধে জড়িয়ে যায়। চরম দরিদ্র মানুষও সততার পরম উদাহরণ দেখাতে পারেন, আবার প্রাসাদের বাসিন্দারাও অসততায় জড়াতে পারেন। সাংগঠনিকভাবে, নীতিগতভাবে বাংলাদেশ পুলিশ কোনো অপরাধ বা অপরাধীকে সমর্থন করে না। অপরাধের শাস্তি নিশ্চিত করতেই তত্পর পুলিশ।’
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়— বাংলাদেশ পুলিশের ১ লাখ ৬৯ হাজার সদস্য রাতদিন অক্লান্ত পরিশ্রম করে মানুষের নিরাপত্তা দিয়ে আসছেন। এর জন্য তারা জীবন বাজি রেখে কাজ করছেন। মানুষকে নিরাপত্তা দিতে গিয়ে ২০১৫ সালেই সন্ত্রাসীদের হামলায় পাঁচজন পুলিশ সদস্য প্রাণ হারিয়েছেন। মানুষকে সেবা দিতে গিয়ে এমন ত্যাগ পুলিশ ছাড়া অন্য পেশায় এ দেশে বিরল। শীতের গভীর রাতে যখন সব মানুষ ঘুমিয়ে, তখন সেই ঘুম নিশ্চিত করতে রাত জেগে রাস্তায় ঘোরে পুলিশ। কোটি মানুষের ঢাকা শহরে অপ্রতুল রাস্তায় যখন গাড়ি এবং জনজীবন থমকে দাঁড়ায় তখন গ্রীষ্মের দাবদাহ উপেক্ষা করে বা জলমগ্ন রাস্তায় কোমর পানিতে দাঁড়িয়ে মানুষের পথচলা নিশ্চিত করে পুলিশ। দাঙ্গা-হাঙ্গামা, বিশৃঙ্খলা, বিপদে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ায় পুলিশই।
ওই বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে— বাংলাদেশ পুলিশের অধিকাংশ সদস্যই আইনগতভাবে কাজ করে। তবে বিচ্যুত হয় কেউ কেউ। কোনো ব্যক্তির বিচ্যুতিকে কোনোভাবেই প্রশ্রয় দেওয়া হয় না। যারা অপরাধে জড়ায় তাদের পুলিশ হিসেবে নয়, অপরাধী হিসেবে এ দেশের প্রচলিত আইন মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করে বাংলাদেশ পুলিশ। বরখাস্ত, চাকরিচ্যুতি, বাধ্যতামূলক অবসর দিয়ে বের করে দেওয়া হয় পুলিশ বিভাগ থেকে। অপরাধের গুরুত্ব অনুযায়ী ফৌজদারি আদালতেও বিচার করা হয় তাদের। সে ক্ষেত্রেও সব ধরনের আইনগত ব্যবস্থা নেয় পুলিশ। ২০১৫ সালে কনস্টেবল থেকে সাব-ইন্সপেক্টর পর্যন্ত ৭৬ জনকে বরখাস্ত, চাকরিচ্যুত করা ও বাধ্যতামূলক অবসর দেওয়া হয়েছে। দুজনের ক্ষেত্রে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।