কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রকাশিত ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের ইতিহাস’ বইয়ে ইতিহাস বিকৃতি হওয়ায় তা বাজেয়াপ্তের নির্দেশ দিয়েছে হাই কোর্ট। একই সঙ্গে ওই বইয়ের সম্পাদক শুভংকর সাহাকে তলব করেছে আদালত। এ সংক্রান্ত তদন্ত প্রতিবেদনের ওপর শুনানি নিয়ে গতকাল বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম ও বিচারপতি মোহাম্মদ আলীর সমন্বয়ে গঠিত হাই কোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেয়। আদেশে, আগামী ১২ মার্চ আদালতে হাজির হয়ে বঙ্গবন্ধুর ছবি খুঁজে না পাওয়া এবং পাকিস্তানের সাবেক প্রেসিডেন্ট আইয়ুব খান ও গভর্নর মোনায়েম খানের ছবি সংযোজনের বিষয়ে শুভংকর সাহাকে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে। আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন সাবেক বিচারপতি ব্যারিস্টার এবিএম আলতাফ হোসেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আল আমিন সরকার। বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট জুবায়ের রহমান।
এর আগে, সোমবার হাই কোর্টের নির্দেশে গঠিত তদন্ত কমিটি আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করে। প্রতিবেদনে, ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের ইতিহাস’ বইয়ে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি অন্তর্ভুক্ত না করায় ইতিহাস বিকৃতি হয়েছে বলে মতামত দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের গাফিলতির কারণেই এ ইতিহাস বিকৃতি হয়েছে বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
আদেশের পর আইনজীবী এ বি এম আলতাফ হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘তদন্ত প্রতিবেদনে ইতিহাস বিকৃতির বিষয়টি উঠে এসেছে। শুনানি নিয়ে আদালত বইটির সম্পাদককে তলবের পাশাপাশি বইগুলো বাজেয়াপ্তের নির্দেশ দিয়েছেন এবং এ বইগুলো যেন বাজারে না ছাড়া হয়, সে বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ড. মো. জাফর উদ্দীন চার সদস্যের কমিটির আহ্বায়কের দায়িত্বে ছিলেন। তার সঙ্গে ছিলেন অর্থ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের এ বি এম রুহুল আজাদ, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব মু. মোহসিন চৌধুরী ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব (আইন) স্মৃতি কর্মকার।
গত বছরের ২ অক্টোবর বাংলাদেশ ব্যাংক প্রকাশিত ওই বইটির ইতিহাস বিকৃতি নিয়ে রিট করা হলে অভিযোগ তদন্ত করে অর্থ সচিবকে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেয় হাই কোর্ট। একইসঙ্গে বইটিতে পাকিস্তানের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট আইয়ুব খান, তদানীন্তন পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর মোনায়েম খানের ছবি অন্তর্ভুক্ত করা হলেও জাতির পিতার ছবি অন্তর্ভুক্ত না করে ইতিহাস বিকৃতি করা কেন আইনি কর্তৃত্ব বহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছিল আদালত।
