বৃহস্পতিবার, ১৫ আগস্ট, ২০১৯ ০০:০০ টা

মানুষের ভাগ্য গড়তে নিজেকে উৎসর্গ করেছি : প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

পবিত্র ঈদুল আজহার খুশির দিনে শোকাবহ ১৫ আগস্ট স্মরণ করে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, স্বজন হারানোর বেদনা নিয়ে যারা বেঁচে আছেন, তারাই শুধু বুঝতে পারবেন আমাদের মনের কষ্ট। জীবনের সবকিছু ত্যাগ করে বাংলার মানুষের ভাগ্য গড়ে তোলার জন্য নিজেকে উৎসর্গ করেছি। বাংলাদেশকে জাতির পিতার স্বপ্নের ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্র্যমুক্ত উন্নত সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। সেই লক্ষ্য নিয়েই কাজ করে যাচ্ছি। পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে গত সোমবার সকালে গণভবনে শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। বেলা ১১টার দিকে গণভবনে সমবেত দলীয় নেতা-কর্মী ও জনসাধারণের সামনে আসেন প্রধানমন্ত্রী। এ সময় মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল তার সঙ্গে ছিলেন। শুভেচ্ছা বক্তব্য শেষে প্রধানমন্ত্রী দলের নেতা-কর্মী, বিচারক, মন্ত্রিপরিষদ সচিব, তিন বাহিনীর প্রধান, বিদেশি কূটনীতিক, সিনিয়র সচিব এবং সচিব মর্যাদার অন্য বেসামরিক ও সামরিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।

প্রধানমন্ত্রী বক্তব্যের শুরুতে উপস্থিত নেতা-কর্মী, দেশবাসীসহ প্রবাসী বাঙালিদের প্রতি ঈদের শুভেচ্ছা জানান। তিনি বলেন, আমরা জানি যে, এই ঈদ মহান ত্যাগের। ত্যাগের শিক্ষা নিয়ে আমাদের সামনে এসেছে।

বাঙালি জাতি স্বাধীন জাতি হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করেছে। মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে আমরা এই স্বাধীনতা অর্জন করতে পেরেছি। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাদের এই স্বাধীনতা দিয়ে গেছেন।

১৯৭৫-এর ১৫ আগস্ট জাতির পিতাসহ পরিবারের সদস্যদের নিহত হওয়ার কথা স্মরণ করে শেখ হাসিনা বলেন, আগস্ট মাস শোকের মাস। আগস্ট মাস এলে কষ্ট বেদনা বেড়ে যায়। আজকে (সোমবার) ১২ আগস্ট। এখনো তিনি বেঁচে ছিলেন। আমরা সেই সময় বিদেশে ছিলাম। আমাদের সঙ্গে টেলিফোনে শেষ কথা হয়েছিল ১৩ আগস্ট।

‘বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে’ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, শত প্রতিকূলতার মাঝে আমরা বাংলাদেশকে আজকে সারাবিশে^র কাছে একটা মর্যাদাপূর্ণ দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়েছি। আমাদের এই অগ্রযাত্রা যেন অব্যাহত থাকে। বাংলাদেশের মানুষের জীবন যেন উন্নত হয়। বাংলাদেশকে আর কোনোদিনও খাটো করে যেন দেখতে না পারে, সেটাই আমাদের লক্ষ্য। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে দারিদ্র্য হ্রাস পেয়েছে। মানুষের আয় বৃদ্ধি পেয়েছে। বাংলাদেশকে আমরা জাতির পিতার স্বপ্নের ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্র্যমুক্ত উন্নত সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। আর সেই লক্ষ্য নিয়েই কাজ করে যাচ্ছি। 

টানা তৃতীয় মেয়াদে সরকার গঠনের সুযোগ দেওয়ায় দেশবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা আস্থা রেখেছেন, বিশ^াস রেখেছেন এবং আমাদের ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছেন বলেই আমরা সেবা করার সুযোগ পেয়েছি। তাদের এই আস্থা বিশ^াসের মর্যাদা আমরা দেব।

যে পবিত্র দায়িত্ব ভোটাররা আমাদের হাতে তুলে দিয়েছেন, যেন সেই দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করে বাংলাদেশের মানুষকে আরও সম্মানিত করতে পারি, আল্লাহ রব্বুল আলামিনের কাছে সেই দোয়া চাই।

প্রায় তিন সপ্তাহ লন্ডনে অবস্থান করে চোখের অপারেশন করার কথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মাত্র কয়েকদিন আগে আমার চোখের অপারেশন করা হয়েছে। ছানির অপারেশন করতে হয়েছে। আপনারা দোয়া করবেন যেন, বাংলাদেশের মানুষের জন্য কাজ করে যেতে পারি।

মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য উপহার : ঈদের দিন প্রধানমন্ত্রী ঈদের শুভেচ্ছা হিসেবে রাজধানীর মোহাম্মদপুর গজনবী রোডে যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের পরিবারের সদস্যদের জন্য যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা পুনর্বাসন কেন্দ্রে (মুক্তিযোদ্ধা টাওয়ার-১) ফুল, ফলমূল এবং মিষ্টান্ন প্রেরণ করেন।

সর্বশেষ খবর