মঙ্গলবার, ২০ জুলাই, ২০২১ ০০:০০ টা

দেশটাই আমার কাছে বড়

পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

দায়িত্ব গ্রহণের পর পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম বলেছেন, আমি আমার কর্মজীবনে স্বচ্ছতার প্রমাণ দিতে পেরেছি। কোনো অবৈধ সুবিধা নিইনি। দেশটাই আমার কাছে বড়। স্বচ্ছ ভাবমূর্তি ছিল বলেই আজ আমি এই জায়গায় আসতে পেরেছি। পরিকল্পনা কমিশনে আমার পুনর্জন্ম হয়েছে। এটি অপূর্ব পাওনা। দীর্ঘ ১২ বছর এই চত্বরে কাজ করার সুযোগ পেয়েছি। আজ থেকে নতুন দায়িত্ব পালন শুরু করলাম। প্রধানমন্ত্রী আমার ওপর যে আস্থা ও বিশ্বাস রেখেছেন, তা যেন রক্ষা করতে পারি সেজন্য সবার সহযোগিতা প্রয়োজন। টিম ওয়ার্কের মাধ্যমে পরিকল্পনামন্ত্রীর সঙ্গে পরামর্শ করেই উন্নয়নকে এগিয়ে নিতে চান একুশে পদক পাওয়া এই কৃষি অর্থনীতিবিদ।

গতকাল রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদ-এনইসি সম্মেলন কক্ষে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের দেওয়া সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন নবনিযুক্ত পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান এমপি। পরিকল্পনা বিভাগের সচিব জয়নুল বারীর সভাপতিত্বে এ সময়ে বাস্তবায়ন, পরীবিক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) সচিব প্রদীপ রঞ্জন চক্রবর্তী, পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব মোহাম্মদ ইয়ামিন চৌধুরী, পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য মামুন-আল-রশিদ, নাসিমা বেগমসহ অন্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান এমপি বলেন, আমাদের সঙ্গে আধুনিক ও নতুন ইঞ্জিন যোগ হয়েছে। সুতরাং কাজের গতি আরও বাড়াতে হবে। কাজের গভীরতা ও ব্যাপ্তি অনেক বাড়বে বলেই আশা করি। শেখ হাসিনার সরকার জীবন্ত সরকার। ড. শামসুল আলম আমাদের সঙ্গে ছিলেন। আবারও নতুন করে দায়িত্ব পাওয়ায় আমরা অনেক বেশি খুশি হয়েছি।

প্রজ্ঞাপন জারি : প্রতিমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেওয়া পরিকল্পনা কমিশনের সদ্য সাবেক সদস্য অর্থনীতিবিদ ড. শামসুল আলমকে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তাকে পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী করে রবিবার রাতেই প্রজ্ঞাপন জারি করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। কৃষি অর্থনীতিবিদ ড. শামসুল আলম রবিবার সন্ধ্যায় শেখ হাসিনা সরকারে প্রতিমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন। সংসদ সদস্য না হওয়ায় তিনি মন্ত্রিসভায় জায়গা পেয়েছেন টেকনোক্র্যাট হিসেবে।

গত এক যুগ ধরে পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসা শামসুল আলমের মেয়াদ শেষ হয় গত ৩০ জুন। এর আগে ১৯৭৪ সাল থেকে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতায় যুক্ত ছিলেন তিনি। ২০০৯ সালের ১ জুলাই প্রেষণে তাকে পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য করা হয়। সেই দায়িত্বে থেকে তিনি ষষ্ঠ, সপ্তম ও অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা, টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট (এসডিজি), শতবর্ষের ব-দ্বীপ পরিকল্পনা প্রণয়নের কাজে সম্পৃক্ত ছিলেন।

২০১৫ সালে কমিশনের সদস্য থাকা অবস্থায় তাকে জ্যেষ্ঠ সচিব করা হয়। পরের বছর তিনি অধ্যাপনা থেকে অবসরে যান। তবে কমিশনের সদস্য হিসেবে তার মেয়াদ কয়েক দফা বাড়ানো হয়। কৃষি অর্থনীতিতে অবদানের জন্য ২০২০ সালে তাকে একুশে পদকে ভূষিত করে সরকার।

১৯৫১ সালের ১ জানুয়ারি চাঁদপুর জেলার মতলব উত্তর উপজেলায় জন্মগ্রহণ করেন শামসুল আলম। তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বর্তমান বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়) থেকে ১৯৬৫ সালে তিনি কৃষি অর্থনীতিতে স্নাতক এবং ১৯৭৩ সালে স্নাতকোত্তর করেন। ১৯৮৩ সালে ব্যাংককের থাম্মাসাট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে স্নাতকোত্তর ও ১৯৯১ সালে ইংল্যান্ডের নিউ ক্যাসল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি করেন শামসুল আলম। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ফ্যাকাল্টি হিসেবে দায়িত্ব পালন করা শামসুল আলম ২০০২ থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচিতে কনসালটেন্ট হিসেবেও কাজ করেছেন। অর্থনীতি বিষয়ে শামসুল আলমের ১২টি বই প্রকাশিত হয়েছে, এর মধ্যে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে পাঠ্যপুস্তক হিসেবেও অন্তর্ভুক্ত।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর