বৃহস্পতিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৩ ০০:০০ টা

দেশজুড়ে কৃষকের ধান কাটতে সহায়তা করছে ছাত্রলীগ

নিজস্ব প্রতিবেদক

কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের আহ্বানে সাড়া দিয়ে দেশজুড়ে কৃষকের ধান কেটে দিচ্ছেন সংগঠনটির বিভিন্ন স্তরের নেতা-কর্মীরা। বোরো মৌসুমে কৃষকের ধান কেটে বাড়ি পৌঁছে দিতে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীসহ, তরুণ প্রজন্ম এবং ছাত্র ও যুব সমাজের প্রতি গত ২৪ এপ্রিল আহ্বান জানান কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালি আসিফ ইনান। এরপরই এ উৎসবে যোগ দেওয়া শুরু করেন দলটির নেতা-কর্মীরা। দেশের বিভিন্ন জায়গায় ছাত্রলীগের নারী কর্মীদেরও ধান কাটায় অংশ নিতে দেখা গেছে। সংগঠনটির এমন কর্মসূচিতে খুশি কৃষকরাও।

বগুড়ার পাঁচকাতুলী গ্রামের কৃষক মাসুদ করিম কচি বলেন, আমার মাত্র ৫ শতক জমির ধান পেকেছিল। কিন্তু, এত অল্প ধান কাটার কোনো শ্রমিক পাচ্ছিলাম না। তাছাড়া শ্রমিকের খরচও বেশি। ছাত্রলীগ এ খবর পেয়ে আমার ধান কেটে দিয়েছে। এভাবে ধান কেটে দিলে অনেক কৃষক উপকৃত হবে।

ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার ঐতিহাসিকভাবেই কৃষক এবং প্রান্তিক জনগণের বন্ধু। একই সঙ্গে ছাত্রলীগ সবসময় এ দেশের গণমানুষের অধিকার আদায়ের আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছে। বর্তমানে যারা ছাত্রলীগের রাজনীতিতে সম্পৃক্ত, তারা কৃষকের সন্তান, শ্রমিকের সন্তান। আমরা দুর্যোগে দুর্বিপাকে শুধু নয়, কৃষকের উন্নয়নে কৃষি বিপ্লব, চতুর্থ শিল্পবিপ্লব এবং স্মার্ট এগ্রিকালচার বাস্তবায়নে কৃষকদের সঙ্গে নিয়ে কাজ করতে বদ্ধপরিকর। এ কারণেই বোরো মৌসুমে আমরা কৃষকের ধান কেটে দিচ্ছি। এর মাধ্যমে তরুণরা স্বেচ্ছাসেবীর ভূমিকায় অবতীর্ণ হচ্ছে। কৃষকদের প্রতি তাদের দায়বদ্ধতা অনুভব করছে। কৃষি অর্থনীতিকে জোরালো এবং কৃষিকে আধুনিকায়নের ক্ষেত্রেও তাদের সচেতনতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।

সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান বলেন, ছাত্রলীগ শুধু ছাত্রদের ও গণতান্ত্রিক অধিকার আদায়েই সোচ্চার নয়, যে কোনো দুর্যোগ-দুর্বিপাকেও মানুষের পাশে রয়েছে। অনেক কৃষক শ্রমিক পাচ্ছে না। সে কারণে আমরা কৃষকের পাশে দাঁড়াতে ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের আহ্বান জানিয়েছিলাম। ব্যাপক সাড়া পড়েছে। অন্যদেরও আহ্বান জানাব কৃষকের পাশে দাঁড়াতে।

কুমিল্লার নাঙ্গলকোট উপজেলার রায়কোট দক্ষিণ ইউনিয়নের মনতলী গ্রামের কৃষক আবদুল মান্নান ও কৃষক জামালের ধান কেটে ঘরে তুলে দেন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক জহিরুল ইসলামের নেতৃত্বে ২০ জনের সহযোগিতায় মঙ্গলবার এ ধান কাটা হয়। এ সময় কৃষক আবদুল মান্নান বলেন, ঝড়বৃষ্টির শঙ্কায় জমির পাকা ধান ঘরে তোলা নিয়ে দুশ্চিন্তায় ছিলাম। ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা জমির ধানগুলো কেটে দিয়েছেন। আমি ভীষণ খুশি। প্রধানমন্ত্রীসহ কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। ছাত্রলীগ নেতা জহিরুল ইসলাম বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় সংসদের আহ্বানে জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে পাকা ধান কেটে কৃষকের ঘরে তুলে দেওয়া হচ্ছে। সারা দেশের ন্যায় আমরাও নাঙ্গলকোটে কৃষকের পাকা ধান কেটে ঘরে তুলে দিচ্ছি। চাহিদা অনুযায়ী কৃষকদের সহযোগিতা করা হচ্ছে। আগামীতেও আমরা সাধারণ মানুষের পাশে থাকব।

গতকাল কক্সবাজার সদরের খুরুশকুল ইউনিয়নের কৃষক আনোয়ারের ধান কেটে ঘরে তুলে দিয়েছেন জেলা ও স্থানীয় ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। এর নেতৃত্বে থাকা ছাত্রলীগ নেতা জামশেদ উদ্দীন বলেন- ছাত্রলীগের ২০ নেতা-কর্মী স্বেচ্ছায় এই কার্যক্রমে অংশ নেন। কৃষক আনোয়ার বলেন, এ যেন মেঘ না চাইতেই বৃষ্টি।

নোয়াখালীর কৃষক রেজাউল করিম বলেন, ধান ঘরে তোলা নিয়ে চরম দুশ্চিন্তায় ছিলাম। ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা-কর্মী আমার জমির ধানগুলো কেটে মাড়াই করে ঘরে তুলে দিয়েছেন। তাদের জন্য হাত তুলে দোয়া করি। একই অনুভূতি দেশের বিভিন্ন জেলার কৃষকদের। অনেক কেন্দ্রীয় নেতা যারা ঈদের ছুটিতে বাড়িতে অবস্থান করছেন তাদের অনেককেই ধান কাটায় অংশ নিতে দেখা গেছে।

সর্বশেষ খবর